শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

স্বামীর সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে বের হয়ে খুন হলেন গৃহবধূ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৩  


স্বামীর সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে বের হয়ে মৌসুমী আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধু খুন হয়েছেন। গত বুধবার রাতে সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের শিংলাবো এলাকা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মৌসুমি আক্তার রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া এলাকার করিম হায়দারের মেয়ে। পুলিশ জানায়, ওই গৃহবধুকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

 

 

গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নিহতের স্বামী রাসেল মিয়ার দাবি, রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় ঈদের কেনাকাটা শেষে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে তারা ডাকাতির শিকার হয়েছেন।

 

 

এসময় ডাকাত সদস্যরা তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তারকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে। তবে পুলিশ বলছে হত্যার পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে তাদের পুরো ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। নয় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। তাদের সংসারে মো. নাঈম নামে ছয় বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। এঘটনায় হত্যার শিকার মৌসুমি আক্তারের স্বামী রাসেল মিয়া আহত হয়ে রূপগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

 


পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঈদের কেনাকাটার জন্য গত বুধবার রাত ৮টার দিকে মৌসুমি আক্তার ও তার স্বামী রাসেল মিয়া গাউছিয়া এলাকার উদ্দেশ্যে বের হন। রাত দশটার দিকে রাসে মৌসুমির বাড়িতে ফোন করে জানায় কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফেরার পথে তারা সড়কে ডাকাতির শিকার হয়েছেন।

 

 

ডাকাতরা মৌসুমিকে খুন করেছে। পরে নিহতের ভাই মো. সাজ্জাদ ও পরিবারের সদস্যরা গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাদের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।

 


নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৌসুমি ও রাসেলের বাড়ি একই এলাকায়। অল্প বয়সে তারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। তারপর থেকে কয়েক বছর ভালোই সংসার চলছিল। এরই মধ্যে রাসেল ব্যবসার জন্য মৌসুমিকে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ দেয়। এ নিয়ে দু'জনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। গত ৬ মাস ধরে তাদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রাসেল মৌসুমিকে বেশ কয়েকবার মারধর করেছে।

 


রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এ হত্যাকান্ড পূর্ব পরিকল্পিত। যেখান থেকে লাশ উদ্ধার হয়েছে ওই এলাকা নিহতের বাড়ি যাবার পথ নয়। ওই পথ ধরে তাদের বাড়ি যাবার কথা না। নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। তার গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে। শরীরে মাটি লেগে আছে।

 

 

পিঠে সামান্য আঁচড় ছাড়া তার স্বামীর শরীরেও বড় কোন ক্ষত নেই। সবগুলো বিষয় মাথায় রেখেই পুলিশ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে। নিহতের বাড়ি রূপগঞ্জে হলেও লাশ উদ্ধার হয়েছে সোনারগাঁয়ে। নিয়ম অনুযায়ী সোনারগাঁ থানা পুলিশ বিষয়টি দেখবেন। আমরা তাদের সহযোগীতা করবো।

 


সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, সিংলাবো এলাকা থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। লাশ উদ্ধার করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ মর্গে পাঠিয়েছে। মামলা রুজু হওয়ার পর এ বিষয়ের রহস্য উদঘাটন করা হবে। এন.হুসেইন/জেসি