বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার চেয়ে খরচ বেশি, সেবা কম

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২১  

নগরীর দেওভোগ ও বন্দরের নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ্যাম্বলেন্স সেবা চলছে কয়েক বছর ধরে। সেখান থেকে অনেকেই কম টাকায় ভাড়া পেয়ে সেবা নিয়েছেন। মাতৃসনদ হাসপাতাল থেকেও রোগীরা সেবা গ্রহন করেছেন। তবে ভাড়া নেয়া রোগীর পরিমান সিমিত কারণ বছর জুড়ে এ্যাম্বলেন্স মেরামত ও ভিআইপিদের চলাচলের কারণে ব্যস্থ ছিলো দুইটি এ্যাম্বুলেন্স। এর কারণে নাসিকের ভাড়ার চেয়ে ব্যায় হয়েছে বেশি রোগীরা সেবা পেয়েছে কম। নগরবাসি মনে করেন, এ্যাম্বুলেন্সগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও সতেচন হওয়া প্রয়োজন কারণ রোগীরা এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাড়তি টাকায় বাইরে থেকে ভাড়া নিয়ে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

 


২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট বইতে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এ্যাম্বুলেন্স ৫ লাখ ২৯ হাজার ৮০০ টাকা মেরামত ও জ্বালানী খরচ করে মাত্র ১ লাখ ৬১ হাজার টাকার ভাড়া পেয়েছে নাসিক। সূত্রে জানা গেছে, ২নং রেল গেইট থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাতুয়াইলের মা ও শিশু হাসপাতালের ভাড়া ১ হাজার টাকা আর ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের ভাড়া (ফাইওভারের টোল খরচ ছাড়া) ১ হাজার ২‘শ টাকা নিচ্ছেন তারা। বন্দরে আরও বেশি। তবে এ ভাড়া ব্যক্তিগত এ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার অর্ধেক। এ কারণে রোগীদের আগ্রহ সেখানে থেকে এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নেয়া তবে নানা কারণে এম্বুলেন্স না পাওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির ভাড়া নিতে হয়েছে দেড়গুণ টাকা দিয়ে।

 


রোগীরা জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না। নানা অজুহাতে ওই সরকারি হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স ব্যস্থ থাকে তবে এর বাইরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এ্যাম্বুলেন্স সেবা রয়েছে। তবে  অনেক সময় এ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের বাইরে থাকা এ্যাম্বুলেন্স চালক চক্র রোগীদের হয়রানি করতে পারছে। তারা রোগীদের কাছ থেকে আদায় করছে বাড়তি ভাড়া। রোগীদের দাবি সচল রাখা হোক ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল সহ নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এ্যাম্বুলেন্স সেবাগুলো।

 


এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেডিকেল অফিসার ডা. শেখ মোস্তফা আলী বলেন, তিনটি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে নাসিকে। তাছাড়া একটি মাতৃ সদন হাসপাতাল। এরমধ্যে বন্দরে একটি এ্যাম্বুলেন্স ও নগরীতে আরেকটি। তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বন্দর থেকে রোগী নিয়ে ঢাকা মেডিকেল যাওয়ার পথে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় একটি এম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে যায়। সেটাকে মেরামত করতে যে অর্থ বেশি ব্যয় হয়েছে, সেটা জালানী ও মেরামত খাতে দেখানো হয়ছে। এছাড়া করোনা কালে ভিআইপি ও সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মীদের বহনও বেশি করতে হয়েছে। তাই আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়েছে বছর। রোগীর অনুপাতে সেবাও পেয়েছে কম তবে আগামীতে এ সমস্যা থাকবে না।

 


নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আসাদুজ্জামান জানান, সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে যেতে ৭৭০ টাকা লাগে। সরকারি এ হাসপাতালে অনেক রোগী আসে তাই হাসপাতালে থাকা একটি এ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষনিক ব্যস্থ থাকে। এর বাইরে যেসব প্রতিষ্ঠানগুলো এ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু রেখেছেন তারা সহযোগিতা বাড়িয়ে দিলে ব্যক্তিগত ভাড়ার সংখ্যা কমে আসবে রোগীদের।  

 


এদিকে নগরবাসি মনে করেন, এ্যাম্বুলেন্স গুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজরধারি কম ছিলো এ কারণে মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। হাসপাতাল গুলোতে রোগীরা এ্যাম্বুলেন্স পায় না আর তারা ভাড়া পায় না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও সতেচন হওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া প্রচারণার অভাবে নগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই জানেই সেখানে এ্যাম্বেলেন্স সেবা রয়েছে। এ কারণে প্রাইভেট ভাবে ভাড়া নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ অতিরিক্ত খরচ গুনছে।

এই বিভাগের আরো খবর