শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনে অযাচিত হস্তক্ষেপ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২২  


# থানায় থানায় কেন্দ্রীয় নেতাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে

# অসহযোগিতায় বিলম্বিত হচ্ছে কমিটি গঠন

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের পর থেকে জেলার ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের দলীয় কার্যক্রম হযবরল অবস্থা হয়ে আছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচানকে কেন্দ্র করে জেলার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রধান সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাংগঠনিক ভাবে দূর্বল হয়ে আছে। থানা পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবক লীগের নামকাওয়াস্তে দলীয় কার্যক্রম চলে।

 

 

 

 

তবে সেপ্টেম্বর মাসকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ। তারই ধারাবাহিকতায় সারাদেশে একশত পাচঁটি থানায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে ইউনিয়নের ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা থানা পর্যায়ের কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছে।

 

 

 

 

কমিটি গঠনের কাজের অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের ২২ জন নেতৃবৃন্দ কাজ করছেন। ইতোমধ্যে তারা জেলার সাতটি থানা এবং পাচঁটি উপজেলায় কাজ শুরু করেছেন।

 

 

 

 

তার অংশ হিসেবে ফতুল্লা থানা বাদে সব কটি থানায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ফরম সংগ্রহ কাজ চলছে। এমনকি জেলার সদর থানার আলীরটেক ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন হয়েছে।

 

 

 


এদিকে ক্ষমতাসীন দলের একটি অংশ থেকে অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনে অনীহা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশ। তারা চাচ্ছে না তৃনমূল থেকে দল শক্তিশালী হয়ে উঠুক। তারা তাদের পীরের নিদের্শের অপেক্ষায় বসে থাকে।

 

 

 

 

অথচ কেন্দ্রীয় নেতারা এসে ফতুল্লা থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটি গঠন করতে চেয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের উত্তর বলয়ের শামীম ওসমান অনুসারী নেতারা তাতে অনীহা করেছে বলে দলীয় নেতাদের অভিযোগ।

 

 

 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, ফতুল্লা থানা সহ এখানা পাচঁটি ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আসলে এখান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা সাইফ উল্লাহ বাদল ও শওকত আলী তাদেরকে বলে, তারা ফতুল্লার এমপির সাথে আলোচনা করে এখানকার কমিটি গুলো করে দিবে। তারা এসে কমিটি ঘোষণা দিয়ে যাবে।

 

 

 

 

তাদের এই কথার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নেতারাও সেখানে এসে কাজ করতে পারছে না। তারা তাদের নিজেদের মত করে কমিটি দিতে চায়। তবে তারা কমিটি দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তৃনমূল নেতা-কর্মীদের। কিন্তু তাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শওকত আলী।

 

 

 

 

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটি গঠন নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর থানা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে সেখানে সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারীরা কুক্ষিগত করে রাখছে কমিটি। এমনকি সদস্য সংগ্রহ বই তাদের আয়ত্তে রাখছে। অন্যদের নিতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

 

 

 

বন্দরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটি গঠনে ওয়ার্ড পর্যায়ে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ ও  মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েলের লোক একক ভাবে কমিটিতে রাখতে চাচ্ছে। আর এতে করে নতুন নেতৃত্ব তৈরীতে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান অন্যান্য নেতা কর্মীরা।

 

 

 


অন্যদিকে রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ, সদরসহ শহরের ওয়ার্ড গুলোতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য থানার তুলনায় পিছিয়ে আছে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর। অভিযোগ রয়েছে, এই তিন থানা সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারীদের প্রভাব বিস্তার রয়েছে।

 

 

 

 

আর এতে করে কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে। তাই তৃনমূল নেতাদের দাবী কেন্দ্রীয় নেতাদের কাজে যেন স্থানীয় নেতারা প্রভাব বিস্তার না করেন। তাদের যেন সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়।

 

 

 


ফতুল্লা থানার দায়িত্বরত কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি আব্দুস সালাম জানান, ‘তিনি ফতুল্লা থানা সহ ইউনিয়নের কমিটি গুলো গঠনের জন্য এসেছেন। তখন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাকে কয়েক দিন পরে আসেত বলেন। কেননা এখন পুজা শুরু হতে যাচ্ছে ; এসময় নেতা কর্মীরা একটু ব্যস্ত থাকবেন বলে তাকে জানান।’

 

 

 


এবিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জানান, ‘কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা এসে সদস্য ফরম সংগ্রহ বই দিয়া গেছে। তাই সদস্য সংগ্রহ কাজ চলমান আছে। আমরা কমিটি তালিকা করে তাদেরকে দিবো। তারা এসে তা ঘোষণা করে দিবে।’

 

 

 


রাজনৈতিক বোদ্ধ মহলে প্রশ্ন উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের কমিটি গঠন করতে না দিয়ে তারা কেন সেই দায়িত্ব নিয়েছে। তাহলে কি এখানে পকেট কমিটি হবে। এমন নানা প্রশ্ন উঠেছে সচেতন রাজনৈতিক মহলে। তবে সব কিছু মিলিয়ে তৃনমূল নেতারা চায় ক্ষমতাসীন দলের সহযোগি সংগঠন গুলোর কমিটি গঠন হোক। এ

 

 

 

 

এতে করে দল শক্তিশালী হবে। নেতা কর্মীরা উৎসাহ নিয়ে আগামী নির্বাচনে দলের জন্য কাজ করে যাবে। কিন্তু তাতে দলের কিছু নেতা বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে বলে দলের আরেকটি অংশের অভিযোগ। নতুন কমিটি গঠন হয়ে দল শক্তিশালী হোক; এই প্রত্যাশা সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের। এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর