বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

হামলায় থেকেও মামলায় নেই সনেট-নাসির-রিপন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২৩  

 

# হোন্ডাবাহিনীর লোকেরা অস্ত্র পায় কোথা থেকে 
# নাসির-সনেটের পিস্তুল থেকে গুলি হয় : প্রত্যক্ষদর্শী 

 

 

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম বিভিন্ন সভায় বলে থাকেন চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, ভুমিদস্যুদের স্থান নারায়ণগঞ্জে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে এই ধরণের অপকর্মই সবচেয়ে বেশি চলে। সম্প্রতি ১৬ মার্চ বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা এলাকায় জায়গা দখল নিয়ে স্থানীয়দের সাথে শহরের হোন্ডাবাহিনীর গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বন্দর কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত রাসুল হকের ছেলে মাইনুল হক পারভেজ, তার স্ত্রীয় আবিদা সুলাতান সুমা এবং পারভেজের মা মাহমুদা হক গুরুতর আহত হন। এছাড়া এই ঘটনায় স্থানীয়দের একাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরবর্তিতে ১৭ মার্চ বন্দর থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ্য করে ৩০ জন অজ্ঞাত রেখে মাইনুল হক পারভেজের ভাই তানভীর আহম্মেদ মামলা করেন। যার মামলা নম্বর  ৩৬। 

 

এদিকে এই ঘটনার পর থেকে ভুমিদস্যুদর নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের নগরবাসী। সেই সাথে বন্দরের জায়গা দখলের ঘটনায় অনেকে জড়িত থেকেও তাদের নাম না জানায় ভুক্তভোগির মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যায়। তবে তাদের নাম অর্ন্তভুক্ত করার জন্য তারা আবেদন জানাবে বলে জানান। শহরের চিহ্নিত ভুমিদস্যু, চাদাঁবাজের অভিযুক্ত নিতাইগঞ্জ ট্রাক স্ট্যান্ড এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ হিসেবে ছিলেন হাজ্বী রিপন নামের নাম উঠে এসেছে বন্দরের নেপথ্যের ঘটনায়।

 

একাধিক ব্যক্তি জানান, এই হাজ্বী রিপন আলী হায়দার শামীম ওরফে পিজা শামীমের অফিসে বসে বিভিন্ন এলাকায় জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে বিচার সালিশ করে থাকেন বলে জানান। অথচ বছর খানিক আগেও তাকে মাইরধর করে এক প্রভাবশালী পরিবারের লোকজন বের করে দেয় তাকে। এর পর অকেটা আড়ালে থেকে অপকর্ম করে যায় বলে অভিযোগ হাজ্বী রিপনের বিরুদ্ধে। বন্দরের জায়গা দখলের ঘটনার নেপথ্যে হাজ্বী রিপন কন্টাক করে পিজাম শামীমকে দেয় বলে জানান ফরাজি কান্দাবাসী। তাই এই ঘটনায় তিনিও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শীদের। 

 

অপরদিকে বন্দরের জায়গা দখলের ঘটনায় বিষয়ে এক ভিডিওতে দেখা যায় শহরের সন্ত্রাসী খ্যাত ব্যক্তি সনেট পিস্তল নিয়ে রাসুল হক চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে মহড়া দেন। তার সাথে তখন কাজী আমীরও ছিলেন। এছাড়া প্রত্যেকের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা যায়। বন্দরের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৬ মার্চের দিন সন্ত্রাসী সনেট,মামলার অন্যতম আসামী কাজী আমির, নানা অপকর্মের হোতা নাসির তখন স্থানীয়দের লক্ষ করে গুলি ছোড়েন। তাদের গুলিতে সাবেক চেয়ারম্যান প্রায়ত রাইসুল হকের স্ত্রী মাহমুদা হক, ছেলে মাইনুল হক পরভেজ ও পারভেজের স্ত্রী আবিদা সুলতানা রক্তাক্ত হয়ে জীবন মরনের সাথে লড়াই করছেন। কিন্তু এই ঘটনায় মামলার বাদি অস্ত্রধারী সনেট এবং নাসিরের নাম না জানায় তাদের নাম মামলায় দিতে পারেন নাই বলে জানান।

 

এছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারের আহত ব্যক্তি আবিদা সুলতানা জানান, আমার স্বামী মাইনুল হক পারভেজকে পিজা শামীমের নেতৃত্বে এসে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। তাছাড়া ১৬ মার্চ যখন তারা বাঁশ টিন নিয়ে জায়গা দখল করতে আসে তখন ৩য় শীতলক্ষা সেতুর উপর ১০ থেকে ১৫ জনকে সারিবদ্ধ ভাবে পিস্তাল নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখি। তাদের মাঝে অনেককেই আমি চিন্তে না পারায় মামলায় তাদের নাম দিতে পারি নাই। তবে কাজী আমির, রায়হান জাদা রবি, মামুন, নুর মোহম্মাদকে ঠিকই চিনি। তারা এর আগেও এসেছিলেন। আমাদের উপর হামলাকারীরা দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে গুলি চালান কী করে সাহস পায়।

 

প্রশাসনের কাছে আমার প্রশ্ন তারা অস্ত্রের লাইসেন্স পেল কোথা থেকে। আর অবৈধ অস্ত্র হলে তাদের সেই অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসন কতটুকু তৎপর রয়েছেন। কেননা এই ধরনের সন্ত্রাসীরা যেন আর কোন মানুষের জায়গা জোর করে দখল করার দুঃসাহস দেখাতে না পারেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানাই আমাদের উপর যে সকল সন্ত্রাসীরা বৃষ্টির মত গুলি করেছে তাদের দৃষ্টান্ত মুলক বিচারের দাবী জানাই। সেই সাথে ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করছি। শহর জুরে আলোচনা হচ্ছে এই ঘটনায় সন্ত্রাসী সনেট, নাসির, হাজ্বী রিপনের নাম উঠে আসলেও তাই বলাবলি হচ্ছে হামলায় থেকেও তারা মামলায় নেই। 

 

উল্লেখ্য, মামলা সূত্রে জানাযায়, ১৬ মার্চ বন্দরের জায়গা দখলে গুলা গুলির ঘটনায় তানভীর আহম্মেদ বাদী হয়ে বন্দর থানায় মামলা করা হয়। ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩০৭/৩২৫/৩২৬/৪৩৬/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোডে বন্দর থানায় মামলা হয়। মামলার আসামীরা হলেন, মৃত রোস্তম আলীর ছেলে আলী হায়দার শামীম ওরফে পিজা শামীম, সেকান্দার মিয়ার ছেলে নুর মোহাম্মদ, রায়হান জাদা রবি, মামুন, মনির হোসেন মনা, কবির, আমির হোসেন, উৎসব, মুকিত, মুহিদ, পাঠান রনিসহ অজ্ঞাত ৩০ জনের মত। তার মাঝে ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন, রায়হান জাদা রবি, মামুন, কবির, মনির হোসেন, সিয়াম, রনি গ্রেপ্তার হন। পুলিশ প্রশাসনের দাবী আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর