বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

হালিম হত্যার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সোহাগ গ্রেপ্তার

ফতুল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২৩  

ফতুল্লায় আলোচিত আব্দুল হালিমকে (৩০) জবাই করে হত্যা করে লাশ গুম করার ঘটনার মামলার মৃত্যুদন্ড পলাতক আসামী সোহাগকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিন পলাতক পর পুলিশের জালে ধরা পড়লো সোহাগ।  বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারী) রাতে ঢাকার খিলগাও থানার তিলাপড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার একটি টিম সোহাগকে গ্রেপ্তার করে।  গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ পানির ট্যাংকী সাউপাড়া এলাকার শাহজাহানের পুত্র।  ঘটনার সূত্রে জানা যায়, কয়লা ব্যবসার জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ফতুল্লার উত্তর নরসিংপুর এলাকার আফসার উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হালিমের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছিল বন্ধু ইকবাল।

 

দীর্ঘদিন ওই ব্যবসার লাভ কিংবা মূল টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো টালবাহনা করছিল। এসব কারণেই তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। সেই বিরোধের জের ধরে ২০১৪ সালের ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় টাকা দেয়ার কথা বলে আব্দুল হালিমকে ফতুল্লার শাসনগাওস্থ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় ইকবাল। সেখানে ইকবালের ছাদে হালিমকে প্রথমে ইকবাল হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে অচেতন করে। তারপর ইকবালের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে হালিমকে ধারালো দেশি অস্ত্র দিয়ে কেটে পাঁচ টকুরো করে লাশ গুম করে ফেলে। ঘটনার পরদিন হালিমের ছোট ভাই শামীম উদ্দিন বাদী হয়ে ইকবালের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

ওই মামলায় প্রথমে সাদেকুর রহমান গ্রেপ্তার হলে তাঁর দেওয়া তথ্যে ফতুল্লার কাশিপুর এলাকায় আবদুল হালিমের বস্তাবন্দি অবস্থায় হাত-পা বিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পর্যায়ক্রমে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।  ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিজাউল হক দিপু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং আদালতের তথ্য সূত্র দিয়ে তিনি জানান, ফতুল্লার উত্তর নরসিংপুর এলাকার ওয়ার্কশপ মালিক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগে চারজনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। রায়ের পর থেকে আসামীরা পলাতক ছিল। আর মৃত্যুদন্ড পলাতক আসামী সোহাগকে ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনিছুর রহমান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগে একই সঙ্গে আরো সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। অর্থদণ্ডের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আরো ছয় মাস করে কারাভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো ফতুল্লার শাসনগাও এলাকার মৃত ফুলচানের পুত্র ইকবাল হোসেন (৩৫), পশ্চিম দেওভোগ সাউপাড়া এলাকার শাহজাহানের পুত্র  সোহাগ (৪০), সুনামগঞ্জের মৃত ইছাক মোল্লার পুত্র সাদেকুর রহমান (৩৮) ও শরিয়তপুরের মৃত হারুন কাজীর ছেলে বাবু কাজী (৪৫)।

 

তাদের সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার মুসলিমনগর এলাকায় বসবাস করতো। হত্যার অভিযোগে চারজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে রায়ের আদেশে বলা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্তরা পলাতক ছিল। এ মামলায় তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্ত তিন আসামি হলো আবুল হোসেন, মেহেদী ও মোক্তার হোসেন। রায় ঘোষণার সময় খালাসপ্রাপ্ত তিনজনই আদালতে উপস্থিত ছিল।

এস.এ/জেসি 
 

এই বিভাগের আরো খবর