
# ১০১০ জন কাউন্সিলর ভোট দিবেন
# সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে প্রস্তাবিত কমিটি হবে ১৫১ জনের
# সম্মেলন চলমান আন্দোলন-সংগ্রামকে বেগবান করবে : গিয়াসউদ্দিন
গত সাড়ে ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি। দ্বন্দ্ব-বিভেদ আর নেতৃত্বের অভাবে বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েও শেষ পর্যন্ত সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারছিলনা বিএনপি। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে বেশ কয়েকবার রদ-বদল কিংবা দায়িত্ব পরিবর্তন করলেও আশানুরূপ ফলাফল পায়নি কেন্দ্র।
তবে সর্বশেষ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের হাতে নেতৃত্ব আসার পর থেকে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে জেলা বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ তো বটে ঢাকার বিভিন্ন কর্মসূচি স্বদলবলে গিয়ে সফলমণ্ডিত করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শক্তিমত্তা সারাদেশের কাছে জানান দিয়েছে জেলা বিএনপি।
এছাড়া সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের যোগ্য নেতৃত্বে কথার লড়াইয়েও পিছিয়ে নেই বিএনপি। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের রাজনৈতিক দূরদর্শীতাকে সমীহ করে চলেন বলে বহুল চর্চিত বিষয়। কেননা, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গিয়াসউদ্দিনের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারেন সাংসদ শামীম ওসমান।
সম্প্রতি দীর্ঘ সময় পর জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে বহুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে বিএনপি কর্মীদের মাঝে। সর্বত্র জেলা বিএনপির এই সম্মেলনকে নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। জেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ চলতি মাসের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। তবে কৌশলগত কারণে জেলা বিএনপির সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে তা জানানো হয়নি।
নেতকর্মীদের উপস্থিতি অত্যন্ত সফল মণ্ডিতভাবে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন এই সাংসদ। তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আশানুরূপ উপস্থিতি এবং কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে জেলা বিএনপি যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করবে এমনটাই প্রত্যাশা।
সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন পর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যেখানে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। জেলা বিএনপির সম্মেলনে মোট ১ হাজার ১০ জন কাউন্সিলর ভোট প্রদান করবেন। সম্মেলন অনুষ্ঠান মূলত দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানের প্রথম ভাগে কাউন্সিলর, ডেলিগেট এবং অতিথিদের উপস্থিতিতে চলবে বক্তব্য পর্ব।
বক্তব্য পর্ব শেষে মধ্যাহ্নভোটের বিরতি। তারপর শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান। সেখান গঠিত নির্বাচন কমিশন প্রথমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীদেও নাম প্রস্তাবনা চাইবেন। কাউন্সিলররা ভোটের মাধ্যমে প্রস্তাবিত প্রার্থীদের মধ্য থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন। যদি কোন পদে একাধিক প্রার্থী না থাকে তবে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।
আর যদি একাধিক প্রার্থী থাকেন তবে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন কাউন্সিলরা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার পর তারা ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট প্রস্তাবিক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রের কাছে অনুমোদনের জন্য নাম পাঠাবেন। কেন্দ্র সেই কমিটির অনুমোদন পেলেই তবে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হবে।
জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন যুগের চিন্তাকে বলেন, এবারের জেলা বিএনপির সম্মেলন অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রাণবন্ত হবে বলে আমরা আশা করছি। দীর্ঘদিন ধরে নেতাকর্মীদের মনের আশা-প্রত্যাশার প্রতিফলনও এই সম্মেলনে প্রকাশ পাবে। অনেকদিন সম্মেলন হয়না। দলীয় কার্যক্রম শক্তিশালী করতে হলে সম্মেলনের বিকল্প নেই। চলমান আন্দোলন সংগ্রামকে আরো বেগবান করতে এই সম্মেলন আরো বেশি করে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।এস.এ/জেসি