মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

২৫নং ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি, ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণে ধীরগতি

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১  

বন্দরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ডের বাগবাড়ী এলাকায় একদিকে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ কাজের ধীরগতি অন্যদিকে বেশকিছু দিন ধরে টানাবৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বাগবাড়ি এলাকাসহ আশপাশের প্রায় কয়েক‘শ পরিবার। জলাবদ্ধতা রাস্তায় হাঁটু পানি বন্ধ নির্মাণ কাজ।

 

এদিকে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণকাজ প্রকল্পের মেয়াদের সময় প্রায় শেষ পর্যায়ে হলেও অবহেলায় কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ড্রেন নির্মাণ করতে গিয়ে মাটি কেটে ফেলায় রাস্তার বেহাল দশা। দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে এলাকার মানুষ। দেখার যেন কেউ নেই। এদিকে, ছোট একটি এলাকার রাস্তা ও ড্রেনের নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে করায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের যত্রতত্রভাবে যেখানে সেখানে নির্মাণ সামগ্রী মালামাল রাখা, ড্রেন নির্মাণের আশোপাশে চলাচলের ব্যবস্থা না করে কাজ করা, নির্মাণ কাজের যন্ত্রপাতি ফেলে রাখা, সঠিক পরিকল্পনা না করে ড্রেন নির্মাণ এবং এ কাজে ধীরগতির ফলে ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

 


বাগবাড়ী এলাকার আরফত আলী জানান, জানুয়ারিতে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এখনো তা শেষ করতে পারেনি। যখন নির্মাণ কাজ শুরু হয় তখন ভেবেছিলাম বৃষ্টির পানি আর রাস্তায় জমবে না। আমাদের চলাচলের অনেক সুবিধা হবে। ড্রেন নির্মাণ হলে রাস্তায় আর বৃষ্টির পানি জমে থাকবেনা। মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হবে। তবে ড্রেন নির্মাণ করতে যে পরিমাণ সময় নেওয়া হচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। ড্রেন নির্মাণের ধীরগতি আর কয়েকে দিনের অতিবৃষ্টি এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে। তবে রাস্তা ও ড্রেনের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করে এ ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানান তিনি।

 


নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নুর হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, নাসিক ২৫নং ওয়ার্ডে বৃষ্টিতে রাস্তায় নৌকা চলবে, ঘরের ভিতরে পানি ঢুকে। সাপের ভয়ে শিশুদের নিয়ে রাত্রী যাপন করছে বাবা-মায়েরা। সিটি কর্পোরেশন থেকে কাউন্সিলরের মাধ্যমে ড্রেজারের পারমিশন এনে অপরিকল্পিতভাবে বালু ভরাট করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, দক্ষিন লক্ষণখোলা মরহুম আতাউর রহমান হাকিম, মরহুম সেলিম সাউদ, মরহুম হাফিজ কন্ট্রাক্টর, তারা মিয়া, সুরুজ্জামান, মনির সাউদ, মরহুম আনর আলী সিকদার, মরহুম ফিরুজ মিয়া, মরহুম নান্নুমিয়া, ইদ্রিস আলীর বাড়ী এলাকায়, ইট ভাটা এলাকার জনগণ পানির নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে দিনযাপন করছে।

 

সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জমিতে বাঁধ নির্মাণ করে মৎস্য চাষ করার ফলে পানি দ্রুত পানি লক্ষন খোলা খালে নেমে যেতে পারছে না। ডং জিং লংজিভিটি ইন্ডাষ্ট্রিটি (ব্যাটারী ফ্যাক্টরী) ঘরে উঠায় রাস্তা তৈয়ারী করে পানি নিস্কাশনের ব্যহত করছে। সিটি কর্পোরেশন ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সময় এগুলো নজর দিলে জনগনের উপকার হয়। বিলের পানি আগে অনায়াসে লক্ষণখোলা খালে  নেমে শীতলক্ষ্যা নদীতে নেমে যেত, ইন্ডস্ট্রিজের রাস্তা নির্মাণ, জমিতে পানি আটকিয়ে মৎস্য চাষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে জনগনের দুর্ভোগ লাগব হবে না। মেয়র মহোদয় নির্দেশ দেওয়ার পরও কেন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সমাধানের ব্যবস্থা নিলেন না স্থানীয় জনগন জানতে চায়।

 

এবিষয়ে নাসিক (২৫ নং ওয়ার্ডের রাস্তা ও ড্রেনের কাজের দায়িত্বে থাকা) সহকারী প্রকৌশলী হাসান জানান, করোনার সময়ের জন্য কাজে কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। আর ড্রেন নির্মাণে সময় একটু বেশি লাগছে। করোনার ও নির্মাণ সামগ্রী মালামাল সংকট থাকায় ড্রেনের কাজে সময় লাগছে। তবে দ্রæত এ কাজ শেষ করা হবে। ড্রেনের কাজেই একটু সময় লাগে রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। আর বেশ কিছুদিন ধরে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। এর কারনে অনেক জায়গায়ই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আর.ডি ইনফ্রাস্টাকচারের আবুল কালাম জানান, করোনার সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী  শ্রমিক ও মালামাল সরবরাহ করতে না পারায় নির্মাণ কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। আমরা দ্রুত গতিতে ড্রেনের কাজ করছি। আর ড্রেনের কাজ তো একটু সময় লাগবে।

 

তবে রাস্তার কাজ আর দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। আর বেশ কয়েক দিনের বৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা হয়ে ২০০ গজের  মতো ড্রেনে ময়লা আর্বজনা ঢুকে জ্যাম হয়ে গেছে। এইটাকে পরিস্কার করে দিলে আশা করি জলাবদ্ধতা থাকবে। আর আমরা এই জলাবদ্ধতা বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনকে জানিয়েছি। সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য আমরা দ্রæত পানি সরানোর ব্যবস্থা করবো। যদি সিটি কর্পোরেশন না কারনে তাহলে আমরা নিজ উদ্যোগে তা করে দিবো। আমাদের কাজ তো আর বন্ধ করে রাখা যাবে না। আগামীকালের মধ্যে এই পানি থাকবে না।

 

এবিষয়ে জানতে চাইলে নাসিক ২৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন বলেন, আসলে এখন যেহেতু আষাঢ় মাস তাই স্বাভাবিক ভাবেই বৃষ্টিপাত একটু বেশি হচ্ছে। এতে আমাদের ২৫ নং ওয়ার্ডের বাগবাড়িসহ েেবশ কয়েকটি এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এখানকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তবে আমি জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিমধ্যেই কাজে নেমেছি। আশাকরি দ্রæততম সময়ের মধ্যেই এটি সমাধান হয়ে যাবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর