৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম নিয়ে যা ভাবছেন বিএনপি নেতারা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৭ পিএম

♦ সরকারকে এই আল্টিমেটাম মানতে হবে : গিয়াসউদ্দিন
♦ বিএনপির নেতাকর্মীরা অবশ্যই বাস্তবায়ন করবে : সাখাওয়াত
♦ মহাসচিবের বক্তব্যকে সাধুবাদ জানাই : খোকন
♦ আল্টিমেটাম অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে : সজল
♦ ঘন্টার মধ্যে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারবো : রনি
♦ আমরা আন্দোলন সংগ্রাম চলমান রাখবো : সাগর
বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি বর্তমানে বিএনপির চেয়ারর্পান বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও তার উন্নত চিকিৎসার দাবিতে দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করে আসছে। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেলো বর্তমানে বিএনপির সরকার পতনের যে এক দফা দাবির আন্দোলনে যুক্ত রয়েছে সেই দাবির সাথে এবার বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণের দাবি ও যুক্ত হয়েছে।
সেই ধারবাহিকতায় গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার একটি বক্তব্যে বলেন, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অসুস্থ খালেদা জিয়ার মুক্তির পাশাপাশি তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর আল্টিমেটাম দিলাম এটা আজকে থেকে এখন থেকেই শুরু। তিনি বলেছেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। অন্যথায় তার কিছু হলে তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।
দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, এতো অসুস্থ যে এখন তার চিকিৎসকরা বলেছেন যে, অবিলম্বে তার চিকিৎসা বিদেশে করাতে হবে। বাংলাদেশে তার সেই চিকিৎসা সম্ভব নয়। তা না হলে তাকে বাঁচানো দুষ্কর হয়ে যাবে। আমি যখন ডাক্তাদের সাথে কথা বলতে গেছি তখন তারা বলেছেন, আপনাদের যদি কিছু করার থাকে তাহলে করেন দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই কথাটা স্পষ্ট করে বলতে চাই, অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে উন্নত হাসপাতালে প্রেরণ করুন। এই ক্ষেত্রে যদি কোনো ক্ষতি হয় তাতে নেত্রীর ক্ষতি হবে না, তার পরিবারের ক্ষতি হবে না, এই বাংলাদেশের বড় ক্ষতি হবে। মহা-সচিবের এমন বক্তব্যে একমত প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তাদের দাবি এই আল্টিমেটাম বাস্তাবায়নের জন্য প্রস্তুত রয়েছে শুধু নির্দেশের ব্যাপার মাত্র।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন যুগের চিন্তাকে বলেন, বর্তমানে এই সরকার যেভাবে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে নিয়ে যেতে দিচ্ছে না এটা কিন্তু সরকারের ন্যায় সঙ্গত কাজ নয়। কারণ তিনি কিন্তু তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। এই দেশে কিন্তু তাদের পরিবারের অনেক জনপ্রিয়তাসহ অবদান রয়েছে। কিন্তু তাকে একটি ভূয়া মামলায় দীর্ঘদিন যাবৎ কারাবন্দি করে রেখেছে।
বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই অবনতির দিকে যাকে ঘিরে বর্তমানে তাকে দেশের বাহিরে উন্নত চিকিৎসায় নিতে হবে। কিন্তু এই সরকার কোনভাবেই তাকে দেশের বাহিরে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইতিমধ্যে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। আর চেয়ারপার্সনকে যে দেশের বাহিরে উন্নত চিকিৎসায় নিয়ে যেতে যে আল্টিমেটাম দিয়েছে আমাদের দলের মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটা অনেকটা যুক্তি সম্মত আল্টিমেটাম এই সরকারকে এই আল্টিমেটাম মানতে হবে। আমরা ও এই আল্টিমেটাম বাস্তাবায়নে কেন্দ্রীয় নিদের্শ অনুযায়ী রাজপথে কাজ করবো।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী। এছাড়াও গণতন্ত্রের জন্য দেশনেত্রী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে, আর উনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আর বর্তমানে তার বয়স ৭৮/৭৯ বয়স এবং সে একজন মহিলা। তাকে যে মামলার সাজা দেওয়া হয়েছে সেটা বলা চলে অত্য ন্ত নিম্নমানের একটি ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার তাকে এই মামলাটি দিয়েছে।
বর্তমানে খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্নিকটে রয়েছে। তার যে অবস্থা তা নিয়ে বাংলাদেশের ডাক্তারা বলে দিয়েছে তাকে এখানে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না। সেই প্রেক্ষিতে শূধু আমরা নই সারা বাংলাদেশের মানুষ মনে করছে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো উচিত। কিন্তু সরকার একগুয়েমি করে আইনকে তাদের নিজেদের মতো ব্যাখ্যা দিয়ে অধিকার বঞ্চিত করে রেখেছে। এখন বাংলাদেশের যে অবস্থা মানুষের ভোটের অধিকার নাই, গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে।
সেই আন্দোলনের সাথে এখন কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনসহ ওই ১ দফা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছে। আর বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের মানুষ ভালোবাসে এবং তারা ও চায় যে বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য দেওয়া হোক। এই অবস্থায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে এটা আমি মনে করি সঠিক সিদ্ধান্ত আর এটা দেশের জনগণ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা অবশ্যই বাস্তবায়ন করবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন যুগের চিন্তাকে বলেন, আমরা বর্তমানে রাজপথে আন্দোলণ সংগ্রামে রয়েছে। বর্তমানে আমাদের কিন্তু ১ দফা দাবিতেই যুক্ত হয়েছে আমাদের এই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি আমরা আমাদের মহা-সচিবের এই বক্তব্যেকে সুধাবাধ জানাই উনি সঠিক সময়ে সঠিক বক্তব্য দিয়েছেন আর এটা বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে প্রাণে ধারণ করে বাস্তায়নের লক্ষে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পরবে।
মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল যুগের চিন্তাকে বলেন, এই সরকার যদি আমাদের কথা না শুনে তাহলে আমাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের যে ধরনের কঠিন কর্মসূচি আসুক না কেন, ইনশাআল্লাহ আমরা সকল কর্মসূচি রাজপথে রেখেই পালন করবো। আমরা আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। ম্যাডামকে বাহিরে উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে নিয়ে আমরা একটি কর্মসূচি পালন করেছি। সামনে আমরা আরো কঠোরতম কর্মসূচির ভিতরে যাবো দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা রাজপথে সব আন্দোলন বাস্তবায়ন করবো। আর আমাদের মহাসচিবের এই আল্টিমেটাম অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে।
জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি যুগের চিন্তাকে বলেন, আমাদের দলের হাইকমান্ড যে সময় যে ধরনের বক্তব্যে বা কর্মসূচি প্রয়োজন তারা সে সময় ওই ধরনের বক্তব্যে ও কর্মসূচি দিয়ে থাকেন। আজকে আমাদের মহাসচিব সাহেব আমাদের দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে ও তাকে মুক্তি করার যে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে তা শুধূ সময়ের ব্যাপার এখানে ৪৮ ঘন্টা ও ৭২ ঘন্টা শুধু ফ্যাক্ট নয়। যদি আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নির্দেশ দেন তাহলে আমরা ঘন্টার মধ্যে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারবো। আর আজকে আমাদের মহাসচিব যে বক্তব্য ও আল্টিমেটাম দিয়েছেন এটা সময়ের সাথে তাল মিলানো আমরা তার বক্তব্যের সাথে একমত।
মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর যুগের চিন্তাকে বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ বেহাইয়া দলে পরিণত হয়েছে, তাদেরকে সাধারণ জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চাচ্ছে না। এছাড়া ও কিন্তু আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আমার শূধু পাওয়ার চাই পাওয়ার। উনি সাধারন জনগনের দু:খ বুঝে না। দেশে যদি কোন সাধারণ মানুষ অসুস্থ হয় তাকে নিয়ে কিন্তু রাজনীতি চলে না। তারা এখন খুন গুম করে সাধারণ মানুষের মন থেকে যেভাবে উঠে গিয়েছে এটা না বলার মতো। আমাদের নেত্রী দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ কিন্তু এই সরকার তাকে নিয়ে রাজনীতি খেলা খেলছে। আর আমাদের মহাসচিব যে আল্টিমেটাম দিয়েছে এটা যে পর্যন্ত না মানা হবে সে পর্যন্ত আমরা আন্দোলন সংগ্রাম চলমান রাখবো। এস.এ/জেসি