শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

৫ দফা দাবীতে জাহাজী শ্রমিকদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৩  

 

নৌ-শ্রমিকদের আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে দাবী আদায়ের ইতিহাস, লড়াই সংগ্রাম ছাড়া অতীতে কোন অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই। শ্রমিকরা যখন অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম সংগঠিত করে মালিক শ্রেণী তখনই শ্রমিক নেতা নাম দ্বারী দালালদের চক্রাতের মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার থেকে বার বার বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করে। বুধবার ৩১ মে সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

 

বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক মোঃ সবুজ শিকদার মাস্টার বলেন, নৌ-পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন পণ্য ও যাত্রী পরিবহন করে দেশের অর্থনীতিতে নৌ-শ্রমিকরা একটি বিশাল ভূমিকা রেখে চলেছে। পরিবার পরিজনদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঝড়, জলোচ্ছাস, রোদ, কুয়াশা, চাঁদাবাজ, ডাকাত, সন্ত্রাসী ও কিছু নৌ-প্রশাসনের হয়রানী মোকাবেলা করে পরিবার পরিজনের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ২৪ ঘন্টা জাহাজে অবস্থান করেও ন্যায্য মজুরী বেতন বোনাস ছুটিসহ অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

 

অনেক কালক্ষেপন ও কিছু জাহাজ মালিকদের দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের পরে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধতার আন্দোলনের কারণে গত ৩০শে মার্চ ২০২৩ইং তারিখে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম অধিদপ্তর নৌ সেক্টরের সকল বেসরকারী জাহাজ মালিকদের প্রতিনিধি ও শ্রমিক প্রতিনিধি, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা, বিআইউব্লিউটিএ, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের সমন্বয় মজুরী নির্ধারণ কমিটি দীর্ঘ আলাপ আলোচনা করে ২০১৬ সালে নৌ-শ্রমিকদের বেতনের গেজেট থেকে মাত্র ৬০% মজুরী বৃদ্ধি করে সরকার একটি গেজেট প্রকাশ করেন।

 

যাহা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ১লা নভেম্বর ২০২২ইং থেকে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কিছু সংখ্যক জাহাজ মালিক সমিতির একটি সিন্ডিকেট চক্র ও মুখোশধারী শ্রমিক নেতা নামক একটি চিহ্নিত দালাল গোষ্ঠীর চক্রান্তের কারণে তাহা এখন পর্যন্ত তৈলবাহী ট্যাংকার, বর্তমানে এ অবস্থা থেকে উন্নতির লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া জাহাজী শ্রমিকদের আর কোন পথ খোলা নেই। তাই আসুন সকল আঞ্চলিকতা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভূলে গিয়ে ন্যায্য মজুরী ও জীবন বাঁচানোর দাবীতে বর্তমান বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য নিম্নোক্ত দাবী আদায়ের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি।

 

দাবী সমূহ, ১. ৩০ শে মার্চ ২০২৩ইং এর সরকার কর্তৃক ঘোষনাকৃত গেজেট অনুযায়ী বকেয়া, এরিয়া বেতনসহ সকল পাওনা চলতি মাসের বেতনের সাথে প্রদান করতে হবে। ২. ভারত-বাংলাদেশ নৌ প্রটোকল রুটে চলাচলকারী জাহাজে শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস, কাস্টম কর্তৃক হয়রানি ও ভারতের সীমানায় চিকিৎসা সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করতে হবে। ৩. চট্টগ্রামগামী লাইটারেজ জাহাজ অবৈধ সিরিয়ালের নামে চট্টগ্রাম বন্দর, তুলাতুলী, দৌলতখা, ইলিশা, ভোলা গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ, গোদনাইল, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, আলীগঞ্জ, পাগলা, গাবতলী, মীরপুর, আশুগঞ্জ, ভৈরবসহ অন্যান্য এলাকায় হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। ৪. নৌ-পথে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, হয়রানি, জাল ফেলে নৌ-চ্যানেল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও মাস্টার-ড্রাইভারশীপ পরীক্ষার অনিয়ম, দুর্নীতি এবং শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ৫. শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সর্বশেষ হাতিয়ার ধর্মঘট যাহা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত ও ধর্মঘট নিষিদ্ধের পরিসেবা বিল প্রত্যাহার করতে হবে।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হক, সহ-সভাপতি জুয়েল প্রধান, সহ-সভাপতি রাফিয়ান আহাম্মেদ, মো: নিজাম উদ্দিন, জাকির হোসেন চুন্নু মাস্টার সহ প্রমুখ।এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর