শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

৫০৩ সৃষ্টপদের মধ্যে শূন্য ১৩৬ পদ, ২’শ শয্যার জনবলেই চলে ৩’শ শয্যা

মো. নুরুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১  

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও তার তৎসংলগ্ন জেলা সমূহের জনসাধারেণর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ মৈত্রীর প্রতিকী হিসেবে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় ১৯৮৬ সালের ৩০ অক্টোবর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ২’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন।

 

পরবর্তীতে হাসপাতালটি ৩’শ শয্যায় উন্নতি হলেও বৃদ্ধি পায়নি চিকিৎসক এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। এতে করে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২’শ শয্যার হিসেবেই হাসপাতালটিতে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকার কথা সর্বমোট সৃষ্ট পদ সংখ্যা ৫০৩ জন। বর্তমানে এই হাসপাতালটিতে কর্মরত আছে ৩৬৬ জন। শূন্য পদ রয়েছে ১৩৬ জন। যা ২শ’ শয্যা পরিচালনার ক্ষেত্রেও কম। কিন্তু বর্তমানে তার চেয়েও অনেক কম জনবল নিয়ে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবাদান করে চলছে হাসপাতালটি।

 


জানাগেছে, ২’শ শয্যা হিসেবে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক কর্মরত ছিল ৫০ জন। বর্তমানে আছে কর্মরত আছে ৩৯ জন। ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে ১০জন। এরমধ্যে মানসিক/সার্জারি/ এই,এন,টি/প্যাথলজি/রেওলজি/চক্ষু/মেডিসিন/অর্থো-সার্জরী পদ শূন্য আছে। সিনিয়র কনসালটেন্ট পদ ১২জন। কর্মরত আছে ৪ জন। জুনিয়র কনসালটেন্ট পদ সংখ্যা ৬, আছে ৫ জন। ১ জন শুন্য রক্তপরিমাপ বিভাগ, রেজিষ্টার ৪ জন। সহকারি রেজিষ্টার ৬ জনের জায়গায় আছে ৫ জন, ইএনটিতে শুন্য আছে ১ পদ। আবাসিক চিকিৎসক ১জন। ডেন্টালসার্জন ১জন। প্যাথলজিষ্ট ২জন। এ্যানেসথেসিওলজিষ্ট ২জন, মেডিকেল অফিসার ১০জন, ৯ জন আছে, ১ জন বিনানুমতিতে অনুপুস্থিত। ইমারজেন্সী মেডিকেল অফিসার আছে ৪ জন। চিকিৎসক মোট পদ-৫০জন। আছে কর্মরত আছে ৩৯ জন। শূন্য আছে ১০ জন।

 


হাসপাতাল সুত্রে জানযায়, বর্তমানে অবকাঠাম, জনবল ও মেশিনারিজ সংকটসহ নানা সমস্যা থাকার পরও এই জনবল নিয়ে জেলার আগত কোভিড-১৯ রোগীদেরকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে আড়াইহাজার মানুষ কোভিড টিকা নিচ্ছেন। চিকিৎসক সংকট থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে সেবা দিতে। প্রতিদিন রোগীর চাপ বাড়ার কারণে বহির্বিভাগ থেকে বাহিরে লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।

 


এছাড়া  সেবা তত্ত্বাবধায়ক ১জন, উপসেবা তত্ত্বাবধায়ক ১জন, নার্সিং সুপারভাইজার ১০জন এর মধ্যে আছে ১০জন। সিনিয়র ষ্টাফ নার্স ২২১ জন এরমধ্যে আছে ১৮৩ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৩৮ জন। ষ্টাফ নার্স ১৮ জন এরমধ্যে আছে ১৫ জন।  শূন্য পদ রয়েছে ৩ জন। সহকারি নার্স ১০ জনে  আছে ৬ জন, শূন্য রয়েছে ৪ জন। সেবিকাদের মোটপদ সংখ্যা ২৬১ জনের জায়গায় কর্মরত আছে ২১৪ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৪৭জন্য।

 


প্রসাশনিক কর্মকর্তা আছে ১জন। হেলথ এডুকেটর/সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা আছে ১জন। সিনিয়র মেডিকেল কেটনোলজিষ্ট(ল্যাব) আছে ১জন। মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ফার্মাসিষ্ট পদ  ৫জন, আছে ৩জন। শূন্যপদ রয়েছে ২জন।  মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ল্যাবরেটরী পদ ৪জন এরমধ্যে ২জন আছে শূন্য পদ রয়েছে ২জন। মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট ডেন্টাল পদে আছে ১জন। মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট ব্লাডব্যাংক পদ ২জন আছে ১জন। শূন্যপদ রয়েছে ১জন। মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট রেডিওগ্রাফার পদ ২জন আছে ২জন। মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট ফিজিওথেরাফি পদ ২জন, আছে ১জন। শূন্যপদ ১জন রয়েছে।

 

মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট কার্ডিওগ্রাফার পদ ১জন নাই শূন্য ১জন। প্রধান সহকারি ১জন আছে ১জন। ষ্টোনো-টাইপিষ্ট পদ ১জন নাই। হিসাব রক্ষক পদ ১জন আছে ১জন। অফিস সহঃ কাম কম্পিউটার অপারেটর ৮জন ৭জন আছে শূন্য ১জন। ক্যাশিয়ার পদ ১জন আছে ১জন। ষ্টুয়ার্ড পদ ১জন আছে ১জন। ওয়ার্ড মাষ্টার পদ ১জন আছে ১জন। পরিসংখ্যান সহকারি পদ ১জন আছে ১জন। মেডিকেল রেকর্ড কিপার পদ ১জন আছে ১জন। আলেকট্রিশিয়ান মেকানিক পদ ৪ জন আছে ১জন শূন্য ১জন। ইন্ষ্টুমেন্ট টেকনেশিয়ান পদ ২জন আছে ১জন শূন্য ১জন। ষ্ট্রেরিলাইজার কাম মেকানিক পদ ২জন আছে ১জন শূন্য ১জন। টেলিফোন অপারেটর পদ ২জন আছে ২জন। গাড়ী চালক পদ ৩জন আছে ৩জন। তৃতীয় শ্রেণী মোট পদ ৪৯ জন, আছে ৩৫ জন, শূন্য আছে ১৪ জন।

 


ক্যাশ সরকার পদ ১ জন, ট্রেইলার পদে ১জন কিচেন সুপারভাইজার ১জন, লিলেন কিপার পদ ১ জন, সর্দার পদ ২ জন থাকলেও অফিস সহায়ক পদে ৩০ জনের জায়গায় আছে ২১জন। শূন্য পদ ৯টি। ওয়ার্ডবয় ২৫ জনের জায়গায় আছে  ১৪ জন। শূন্য পদ ১১ টি। আয়া পদ ২০ জনের জায়গায় আছে ৯ জন । শূন্য রয়েছে ১১ টি পদ । কুক/মশালচী পদের ১২জনের জায়গায় ৯ জন থাকলেও শূন্য রয়েছে ৩টি পদ। নিরাপত্তাপ্রহরী পদ ১০ জনের জায়গায়  আছে ৫ জন। শূ পরিছন্নতাকর্মী ৪০ জনের জায়গায় আছে ১৮ জন। শুন্য রয়েছে ২২ টি পদ। ৪র্থ শ্রেণী মোট পদ ১৪৩ জন। এখানে ৭৯ জন থাকলেও শূন্য  পদ রয়েছে ৬৪টি। সর্বমোট সৃষ্ট পদ সংখ্যা ৫০৩ জন কর্মরত আছে ৩৬৬জন শূন্য পদ ১৩৬ জন।

 


এই বিষয়ে কোভিড-১৯ হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায় আবুল বাসার জানান, ২শ’ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে এই হাসপাতাল।এর মধ্যে অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়েছে। তারা চলে গেছেন। এসব পদ এখনো শূন্য রয়েছে। গত এক বৎসরে একলাখে’র বেশি মানুষকে কোভিডের টিকা দেওয়া হয়েছে। যা বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে বিদেশগামিদেরকে ও পরিক্ষার রিপোর্ট যথা সময়ে অনলাইনে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে খুবই বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও আমরা অটল সেবা দিতে প্রস্তুত আছি। প্রথম শ্রেণী থেকে ৪র্থ শ্রেণী সব পদেই কিছু কিছু পদ শূণ্য রয়েছে। তারপরও আমরা এই কোভিড মহামারিতে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। একদিনের জন্যও করোনা টেস্ট বন্ধ রাখা হয়নি। শুক্রবারসহ ঈদেও করেনা পরিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এই হাসপাতালে।  
 

এই বিভাগের আরো খবর