মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১   ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

হেফাজতের হরতালে বাস-ট্রাকে আগুন-ভাঙচুর, গুলিবিদ্ধ ৩ জন;আহত ৩০

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:২৮ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২১ রোববার

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দফায় দফায় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বাস-ট্রাকে আগুন, সড়কে আগুন, ভাঙচুর করে হরতাল পালন করেছে হেফাজত কর্মীরা। নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মৌচাক, চিটাগাংরোড, কাঁচপুর পর্যন্ত  হেফাজত নেতাকর্মী-সমর্থকদের হরতালে বাস-ট্রাকে আগুন ও ভাঙচুর করে। এতে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। 


সর্বশেষ ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হলে চিটাগাং রোড এলাকায় একটি বাস, চারটি ট্রাক এবং চারটি কার্ভাডভ্যানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে কে বা কারা এ আগুন দিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছন। আগুনের ঘটনায় পুরো এলাকায় সন্ধ্যার পরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।


এরআগে হেফাজতের ডাকা হরতালে রোববার সকাল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়  নেতাকর্মীরা। ফজরের নামাজের পর থেকে হরতালের সমর্থনে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে শিমরাইল, মৌচাক ও সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থান নেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা।  


সারাদিনেই থেমে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজত ইসলাম নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে  ৩ জন গুলিবিদ্ধ ও পুলিশ সাংবাদিকসহ আহত হয় অন্তত ৩০ জন আহত হন।


রোববার বেলা ১২ টার দিকে শিমরাইল মোড়,  মৌচাক ও মাদানীনগর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় । বাস-ট্রাকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গাড়িতে ভাঙচুর ও ৫-৬টি গাড়িতে  আগুন ধরিয়ে দেয় হরতাল সমর্থকরা।


এসময় শিমরাইল মোড়ে ডা. শফিকুল ইসলাম (৬০) নামে একজন ও মাদানীনগর এলাকায় এক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়। তার পরিচয় জানা জায়নি। এর আগে শাকিল (৩০) নামে এক ফার্নিচার মিস্ত্রী গুলিবিদ্ধ হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


রোববার ফজরের নামাজের পর ভোর ৬ টা থেকে সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল মোড় পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়। টায়ার ও কাঠের স্তুপ করে আগুন ধরিয়ে দেয় মহাসড়কে কমপক্ষে ৩০ টি স্পটে। যানবাহনহীন ফাঁকা সড়কে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয় হরতাল পালনকারীরা। এতে বন্ধ হয়ে পড়েছে মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ।

 

এদিকে বেলা ১ টার পর পুলিশ কঠোর হয়।  হেফাজত নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টার করলে হরতালকারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ প্রথমে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিছুড়ে। এতে তারা মাদানীনগর কওমী মাদ্রাসার সামনে মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস, একটি ট্রাক, দুইটি কাভার্ডভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ছবি তুলতে  গেলে অনেক গণমাধ্যম কর্মীদের মারধর, ক্যামেরা ভাংচুর করে হরতাল সমর্থকরা।

 


এ ব্যাপারে হরতালের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সকালে মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সারা জেলায় ৫৮৫ জন পোশাকে এবং আরও ২০০ সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ৫ প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব হরতালের অরাজকতা ঠেকাতে দায়িত্বে রয়েছে।