শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১   ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইভী-আনোয়ারের ঐক্যে খুশি না.গঞ্জের সাধারন মানুষ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:১৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২২ মঙ্গলবার

# দুই নেতার কারোই কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নেই
# বরাবরই ওসমানদের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান

 

এই মুহুর্তে নারায়ণগঞ্জ শহরের রাজনীতিতে দুই নক্ষত্রের নাম ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী ও আলহাজ¦ আনোয়ার হোসেন। দুইজনেই গণমানুষের পক্ষে রাজনীতি করেন। কোনো অপশক্তিকে প্রশ্রয় দেন না। তাদের কারোই কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নেই। তাই এই দুই নেতার মাঝে ঐক্য দেখলে নারায়ণগঞ্জের শান্তিপ্রিয় সাধারন মানুষও খুশী হন।

 

মানুষ চায় তারা এক সাথে রাজনীতি করুক এবং রাজনীতিতে একে অপরকে সহায়তা করুক। গত রবিবার নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের এক ইফতার মাহফিলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের দায়িত্বে তিনি আনোয়ার হোসেনকেই দেখতে চান। হোক সেটা চেয়ারম্যান অথবা প্রশাসক হিসাবে। আইভীর এই বক্তব্য গতকাল নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। এতে নারায়ণগঞ্জ সচেতন মহলে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।


এদিকে আনোয়ার হোসেনকেও বরারবরই মেয়র আইভীর পাশে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা গেছে। ২০১১ সালের নির্বাচনে যখন আইভী ও শামীম ওসমানের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয় তখন সেই নির্বাচনে এই আনোয়ার হোসেন এবং জিএম আরাফাত সহ তাদের অনুসারীরা মেয়র আইভীর পাশে বেশ শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন। তখন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বার বার আনোয়ার হোসেনকে দলের মনোনিত প্রার্থী শামীম ওসমানের পাশে থাকার জন্য বলা হলেও তারা আইভীর পাশেই অনড় ছিলেন।

 

এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনকে দল থেকেও বহিস্কার করার ঘোষনা দেয়া হয়। কিন্তু তাতেও টলেননি আনোয়ার হোসেন। বরং তিনি সরাসরি বলে দেন, দল থেকে বহিস্কার করা হলেও আমি কোনো গডফাদারের পক্ষ্যে নির্বাচন করবো না এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আইভীর কোনো বিকল্প নেই। ওই নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন,

 

আরাফাত সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরো অনেক নেতার শক্ত অবস্থানের কারনে আইভীও বেশ জোরালো ভাইবেই শামীম ওসমানকে মোকাবেলা করেন। এর ফলে শামীম ওসমান আইভীর কাছে লক্ষধিক ভোটে পরাজিত হন। যদিও ওই নির্বাচনের পর আনোয়ার হোসেনকে মেয়র হওয়ার টোপ দিয়ে শামীম ওসমান কিছু দিনের জন্য তাকে বাগিয়ে নেন।

 

কিন্তু আনোয়ার হোসেন খকনোই শামীম ওসমানের সাথে আন্তরিক ভাবে মিশতে পারেন নাই। কারন বরাবরই তারা পৃথক ভুবনের বাসিন্দা। এই শহরে এদের একজন সন্ত্রাসের জনক হিসাবে পরিচিত আর অপরজন সন্ত্রাস বিরোধী হিসাবে পরিচিত। তবে অল্প দিনের মধ্যেই আনোয়ার হোসেন তার ভুল বুঝতে পেরে শামীম ওসমানের কাছ থেকে দূরে সরে আসেন।

 

এর আবারও ধীরে ধীরে আইভীর সাথে আগের মতোই তার সম্পর্ক পূনরুজ্জীবিত হতে থাকে। বিগত পাঁচ বছর দরে শামীম ওসমান আইভীর বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করেছেন তাতে আনোয়ার হোসেন সব সময় আইভীর পাশেই ছিলেন। এর মাঝে শামীম ওসমান যখন আইভীর ভাইদের বানানো বাড়ি নিয়ে মিথ্যাচার করেন এবং আইভীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় উম্মদনা সৃষ্টির চেষ্ঠা করেন তখনো আনোয়ার হোসেন এসবের প্রতিবাদ করেন।

 

বিশেষ করে আইভীর বাড়ি নিয়ে শামীম ওসমানযে মিথ্যাচার করেছেন তার কড়া জবাব দিয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছিলেন শামীম ওসমান সব সময়ই আইভীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন কিন্তু এগুলো তিনি প্রমান করতে পারেন না। আইভীর বিরুদ্ধে শামীম ওসমান যতো অভিযোগ তুলছেন তার কোনো প্রমান নেই। বরং শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ তোলা যায়। মূলত এভাবেই আনোয়ার হোসেন আইভীর পক্ষ্যে দৃঢ় অবস্থান নেন।


তাই আইভী ও আনোয়ার একে অপরের পাশে এভাবে দাঁড়ানোটাই পছন্দ করছেন নারায়ণগঞ্জের সর্ব স্থরের সাধারন মানুষ। কারন সাধারন মানুষ এই শহরে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশে শান্তিতে বসবাস করতে চান। আর এ বিষয়ে আইভী ও আনোয়ার হোসেনের শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।