রোববার   ১৯ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

অপয়া এপ্রিল বনাম স্বস্তির বৃষ্টি

ইউসুফ আলী এটম

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২৪  

 

 

প্রচন্ড তাপদাহের কোপানলে আবদ্ধ ছিলো গোটা এপ্রিল মাস। গরম বাতাসের ঝাপটায় ঘর থেকে বেরুনোই ছিলো কষ্টকর। এর আগে কখনো এমন খরতপ্ত এপ্রিলের সাক্ষাৎ মেলেনি বাংলাদেশে। কী কারণে এপ্রিল মাসে আবহাওয়ার এমন বৈরী আচরণ! আবহাওয়াবিদদের ভাষ্যমতে, এপ্রিল মাসে গোটা বিশ্বেই নাকি আবহাওয়ার এমন উল্টাপাল্টা আচরণ পরিলক্ষিত হয়েছে।

 

বাংলাদেশে এসময় মুষলধারে বৃষ্টি আর কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। অথচ অকল্পনীয়ভাবে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই ভারী বৃষ্টিপাতে অকাল বন্যা হতে দেখা গেছে। আবহাওয়ার এই ডিগবাজির সফর রহস্যজনক তো বটেই,আশংকাজনকও। পয়লা এপ্রিলকে বলা হয় ‘এপ্রিল ফুল’। এদিন নানা কৌশলে একে অপরকে বোকা বানানোর প্রতিযোগিতা চলে।

 

কিন্তু গোটা মাস বৈরী আবহাওয়া বহন করায় অনেকে এবার এপ্রিলের নতুন নাম দিয়েছেন কুফা এপ্রিল বা অপয়া এপ্রিল। সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, এ বছর এপ্রিল মাসে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিরো ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা গত ৭৬ বছরে এপ্রিল মাসে রেকর্ড করা গড় তাপমাত্রার চেয়ে ৩ ডিগ্রি বেশী। এবারই এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের সর্বত্র দীর্ঘতম তাপদাহ বয়ে গেছে। এটা ছিলো গত ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্কতম। পাশাপাশি দেশের গড় বৃষ্টিপক ছিলো মাত্র এক মিলিমিটার। ১৯৮১ সালের পর দেশে এটাই বৃষ্টিপাতের সর্বনিম্ন রেকর্ড।


কুফা এপ্রিল বিদায় নেয়ার পরদিন থেকেই বাংলার আকাশে বৃষ্টির ঘনঘটা শুরু হয়। ২ মে সন্ধ্যায় কাংখিত বৃষ্টির দেখা মেলে। আবহাওয়াবিদরাও খুশিতে বাকুমবাকুম করে পূর্বাভাস দিয়ে দিলেন, এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি, কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়,এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সময় বাংলাদেশে বজ্রপাতের পারিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক বেশী। বজ্রপাতের জন্য অপরিকল্পিত বৃক্ষ নিধনকে দায়ী করা হয়। গাছ কাটার পর দ্বিগুণ সংখ্যক গাছ লাগানোর তাগিদ থাকলেও কেউ তা মানছেন না। তালগাছ নাকি বজ্রপাত বজ্রপাতকে রুখে দিতে সক্ষম। সড়কের দু’ধারে এবং খালি জায়গায় তালগাছসহ অন্যান্য গাছ লাগানোর বিকল্প নেই।  


বিশ্লষকদের মতে, প্রাক বর্ষায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বজ্রপাতের পরিমাণও বেড়ে যায়। মেঘের গর্জনের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বজ্রপাত হয়ে থাকে। এসময় খোলা স্থানে কিংবা গাছের নিচে থাকা যাবে না। লোহা, মোবাইল কিংবা তার জাতীয় জিনিস থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে হাওড় অঞ্চলে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ওইসব এলাকায় দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়ছে।                

 

 

এই বিভাগের আরো খবর