সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

কম ভোটার উপস্থিতিতে শেষ হলো বন্দর উপজেলা নির্বাচন  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৯ মে ২০২৪  


বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শান্তিপূর্নভাবে ভোট গ্রহণ শুরু হলে ও অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র প্রায় ভোটার শূন্যই দেখা গেছে। বন্দর উপজেলার আওতাধীন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন, বন্দর ইউনিয়ন, মুছাপুর ইউনিয়ন, ধামগড় ইউনিয়ন, মদনপুর ইউনিয়নগুলো ঘিরে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে ভোটার মোট ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৪ জন।

 

 

তার পরে ও নির্বাচনের প্রথম প্রহর থেকে শেষ অবদি পর্যন্ত ভোটার সংখ্যা ছিলো অনেকটাই সিমিত। যা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে জেলা জুড়ে। তা ছাড়া নির্বাচনের জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি সব থাকলে ও ভোটা উপস্থিতি পরে ও কেন কম ছিলো তা নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা দিয়েছে।

 

 

গতকাল বুধবার (৮মে) দুপুর ১২টা থেকে এই উপজেলার বিভিন্ন নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়ে দেখা মিলেছে শূন্যতার। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণের দেখা মিলেনি প্রতিটি কেন্দ্রেই, ভোটার ছাড়াই ফাঁকা ও শুনশান নিরবতা লক্ষ্য করা গেছে কেন্দ্রগুলোতে।

 


সরেজমিনে দুপুর সাড়ে ১২ টায় বন্দরের কুশিয়ারা হাজী আব্দুল মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে ৮টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিস্ফোরণের আগে ও দেখা গিয়েছিলো এই কেন্দ্রে ভোটার ফাঁকা শুধু ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ নেতাদের ছড়াছড়ি। কিন্তু এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. সাইফুজ্জামান বলেন, বিস্ফোরণকে ঘিরে কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা কম। ইতিমধ্যে ২০০ এর মতো ভোট কাস্ট হয়েছে।

 


পরবর্তীতে দুপুর দেড় টায় কেন্দ্রে ভোট কাস্টের বিষয়ে ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার বলেন, এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২ হাজারের অধিক কিন্তু ভোট এখন পর্যন্ত ভোট পরেছে ১০%। আর যেহেতু আজকে বৈরী আবহাওয়া অনেকে এখনো আসেনি। শীগ্রই তারা হয়তো ভোট গ্রহণে চলে আসবে।

 


পরে কম ভোটার উপস্থিতির দেখা মিলে বন্দর কলাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন সেই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আইয়ূব আলী ভূঁইয়া বলেন, বৈরী আবহাওয়া অনেকে এখনো রান্না করছেন যার কারণে ভোটার সংখ্যা তুলনামূলক কম। মনে হয় আর কিছুক্ষণের মধ্যে জমজমাট ভোটার দেখা দিবে।

 

 

ইতিমধ্যে কত পাসেন্ট ভোট কাস্ট হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৫% ভোট ইতিমধ্যে কাস্ট হয়েছে। আমাদের ধারণা রয়েছে এই কেন্দ্রে কম হলে ও ৫০% ভোট কাস্ট হবে।

 


মুছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা মিলে সেই একই দৃশ্য এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের দেখা মিলেনি। তিনি একটু বাহিরে গেছেন এমনটাই বলেন একজন পোলিং এজেন্ট। একই সাথে বন্দরের ১৩ নং দাপেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা মিলে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায়  নিসন্দেহে বসে আছেন।

 

 

সেখানে গিয়ে সেই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ভোটার অনেকটাই কম আমি ১২ টায় হিসাব করেছি ৩৬০জন এখন আর আসেনি। ১৬ নং লাঙ্গলবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর ২ টায় গিয়ে দেখা মিলে এক বিরল চিত্রের। সেই কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি একবারেই নাই বললেই চলে। তা ছাড়া প্রিজাইডিং অফিসার বলেন ভোট এখন পর্যন্ত কাস্ট হয়েছে ২০০ প্লাস।

 


জানা মতে, বন্দর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ রশিদ পেয়েছেন দোয়াত-কলম মার্কা, বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল পেয়েছেন চিংড়ী মাছ মার্কা, জাতীয় পার্টির নেতা ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন পেয়েছেন আনারস মার্কা এবং তার ছেলে মাহমুদুল হাসান পেয়েছেন হেলিকপ্টার মার্কা।

 

 

অপর দিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু পেয়েছেন উড়োজাহাজ মার্কা, মো. আলমগীর হোসেন পেয়েছেন মাইক মার্কা, মোশাঈদ রহমান পেয়েছেন তালা মার্কা ও শাহিদুল ইসলাম জুয়েল পেয়েছেন টিউবওয়েল মার্কা।

 

 

আর নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাহমুদা আক্তার পেয়েছেন কলস মার্কা ও বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা হোসেন পেয়েছেন ফুটবল মার্কা। এর মধ্যে সকল প্রার্থীদের এজেন্ট উপস্থিত ছিলো কেন্দ্রে। কিন্তু কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত কম থাকায় চাপ পরেনি প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট ও পুলিশ কর্মকর্তাদের।

 

 

এইভাবেই শেষ হলো নির্বাচন। কিন্তু সবশেষ বেসরকারি নির্বাচিত ঘোষণা অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে-মাকসুদ হোসেন আনারস মার্কা ভোট পেয়েছে ২৯৮৭৩ । ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. আলমগীর মাইক মার্কায় ভোট পেয়েছে ১৭৬০৬। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা হোসেন ভোট পেয়েছে ২৯৪৫৬।      এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর