সোমবার   ২০ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

জেলা প্রশাসককে সাধুবাদ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৯ মে ২০২৪  

 

 

শত চাপ ও বাধা থাকা সত্ত্বেও প্রথম ধাপের বন্দর উপজেলা নির্বাচন চাপমুক্ত, দখলবাজিমুক্ত করতে সমর্থন হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক। যদিও নানা আশঙ্কায় ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে, কেননা ভোটাররা একপ্রকার ধরেই নিয়েছিল বন্দর উপজেলা নির্বাচনে জাল ভোট দেয়া হবে, ভোটকেন্দ্র দখল করা হবে, নানা ধরণের অশান্ত পরিবেশ তৈরি করা হবে। তবে ভোটারদের সেসব আশঙ্কা সত্য হয়নি।

 

জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বন্দরে একটি সুষ্ঠু পরিবেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। তার শক্ত পদক্ষেপে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাচন একটি নজির সৃষ্টি করল। নির্বাচনে পুলিশের পাশাপাশি ম্যাজিষ্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্ত তৎপরতার কারণে জাল ভোট, বিশৃঙ্খলা করার মতো দুঃসাহস বড় দাগে কেউ দেখাতে পারেনি। ভোটের পরিবেশ নির্বিঘ্ন ছিল। ভোটাররাও পরবর্তীতে ফলাফল দেখে নির্বাচনী পরিবেশের প্রশংসা করেছেন। সবাই ভেবে নিয়েছিল বন্দর উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাাবিত করা হবে। কিন্তু সেটি হয়নি।

 

ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গেছেন, নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকে নির্দ্বিধায় ভোট দিয়েছেন এবং নিরাপদে বাড়ি ফিরেছেন। ভোট নিয়ে সংশয় হওয়ার যথেষ্ঠ কারণ ছিল। কেননা প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি সেলিম ওসমান ও তার ভাই শামীম ওসমান এমপি বন্দর উপজেলায় তাদের পছন্দের প্রার্থী ঘোষণা করেছিলেন। এমনকি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার মতো  প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শক্ত বক্তব্য রেখেছেন। যার দরুণ আশঙ্কা ছিল নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে।

 

কিন্তু প্রশাসনের শক্ত ভূমিকার কারণে দুই এমপির সেসব ফাঁকা আওয়াজ আদতে হালে পানি পায়নি। প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে বন্দরে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়ী করতে পেরেছেন। ওসমানদের পছন্দসই দুই প্রার্থী বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচনের আগ পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা এমএ রশীদ এবং জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বন্দরের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু নির্বাচনে বিপরীত প্রার্থীদের নিকট অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন। ওসমান ভ্রাতৃদ্বয় প্রকাশ্যে এই দুই প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সমর্থন দিয়েছিলেন এবং তাদের কর্মী বাহিনীকে তাদের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

দফায় দফায় তাদের কর্মীবাহিনী ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে বৈঠক করেছেন। কিন্তু প্রশাসনের স্বচ্ছ ও শক্ত ভূমিকার কারণে সেসব হালে পানি পায়নি। ওসমানদের দুই প্রার্থীই নির্বাচনে হেরে গিয়েছে। কার্যত এই প্রথমবারের মতো দীর্ঘদিন পরে বন্দরে ওসমান পরিবারের আধিপত্য খর্ব হওয়ার ঘটনা ঘটল।

 

নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল মনে করেন, বন্দর উপজেলায় যেই নজির প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করল দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনেও জেলা প্রশাসকের এমন ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন। আবারো জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হককে সাধুবাদ জানাবে নারায়ণগঞ্জবাসী।

এই বিভাগের আরো খবর