মঙ্গলবার   ২১ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

তীব্র গরমে স্কুল খোলায় অভিভাবকদের অসন্তোষ

নুরুন নাহার নিরু  

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৪  


গত দুসপ্তাহ ধরে সারাদেশের ওপর দিকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলমান এই তাপপ্রবাহের মধ্যে আবারও হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে আবহাওয়া অফিস। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে সারা দেশ সহ নারায়ণগঞ্জেও স্কুল খুলেছে গত রোববার (২৮ এপ্রিল)। আর তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খুলে দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। তারা বলছেন, ছোট ছোট এই বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে সরকার আরও অন্তত এক সপ্তাহ পরে স্কুল খুলতে পারতো।

 

 

গতকাল সকালে নগরীর বেশ কয়েটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা এই অসন্তোষের কথা জানান তারা। গত রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। সে কারণে রোদের তাপ প্রখর হওয়ার ওঠার আগেই অভিভাবকরা সন্তানকে পৌঁছে দিয়েছেন বিদ্যালয়ে। একইসঙ্গে গরমে সুস্থ থাকতে দিয়েছেন নানা উপদেশ।

 

 

আবার সাথে করে পানির বোতলে পানির বদলে অনেকে দিয়ে লেবুর শরবত বা স্যালাইন। এছাড়া তাপপ্রবাহে ক্লাসের বাইরে বের না হতে, মাঠে খেলাধুলা না করতে এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি না করার জন্যও সতর্ক করেছেন তারা।

 


মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে সন্তান ক্লাস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় অভিভাবক তাহমিনা বেগম বলেন, এই গরমের মধ্যে স্কুল খোলাটা ঠিক হয়নি। কারণ পড়াশোনার চেয়ে জীবনটা আগে। বর্তমান সময়ে বাসায়ই জ্বর উঠে যাচ্ছে বাচ্চাদের।

 

 

পাশাপাশা ঠান্ডা তো আছেই। সরকার বলেছে রসালো ফল খেতে, অ্যাসেম্বলি না করতে বাচ্চারা কি এটা মানবে। হয়তো সপ্তাহখানেক পরে বা ১০-১২ দিন পরে তাপমাত্রা কমে যেত। একটু অপেক্ষা করলে কি আর এমন হতো। আমি ব্যক্তিগত মত যদি জিজ্ঞাসা করা হয়। তাহলে আমি এটা সমর্থন করছি না।

 


তার কথার সুর ধরে আমেনা সুলতানা নামের আরেক অভিভাবক বলেন, এটার থেকে বড় কথা হচ্ছে শনিবার স্কুল খোলা রাখা হয়েছে। যে সময়টাতে স্কুল বন্ধ থাকলে ভালো হয়। সেই সময়টাতেও সরকার স্কুল (শনিবার)  খোলা রাখার কথা চিন্তা করেছে। আজ সকালে যখন বাচ্চাকে নিয়ে বাসা থেকে স্কুলে এলাম তখন সে একেবারে ঘামে ভিজে গেছে।

 

 

আগে থেকে আমরা এখানে ৪০-৫০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে আসতাম। গরমের কারণে এখন রিকশাচালকরা ৬০ টাকার নিচে আসতে চায় না। এতে আমাদের খরচ ও বেড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বাচ্চারা তো করোনা সময় অনলাইনে ক্লাস করেছে। এখন না হয় ১০-১৫টা দিন অনলাইনে ক্লাস করত। এটাতে কি অনেক বেশি, ক্ষতি হয়ে যেতো।

 


 মাহমুদা নামের আরেকজন অভিভাবক বলেন, এই গরমের মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে নিয়ে আসাটা যে কষ্ট কর। এটা শুধু আমরাই জানি। আমাদের বাচ্চারা তিনতলা-চারতলা পযর্ন্ত ভারী একটা ব্যাগ নিয়ে উঠছে। এদের সঙ্গে এক লিটার পানি। এত কিছু নিয়ে বাচ্চারা উঠতে পারে। । শিশুদের পড়াশোনার জন্য ৫ দিনই যথেষ্ট, আবার একদিন কেন বাড়াতে হবে।

 


তিনি আরো বলেন, গ্রীষ্মকালের যে বন্ধটা ছিল সেটা তো পরিপূর্ণ হয়নি। এরমধ্যে শনিবারের ছুটিটা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। আমরা তো দূর থেকে সন্তান এখানে পড়াতে নিয়ে আসি। একই সরকার দুই ধরনের সিন্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকের স্কুল শনিবারে বন্ধ থাকবে আর আমাদের মাধ্যমিক স্কুলগুলো শনিবার খুলে দিয়েছে।

 


তীব্র গরমে স্কুল খোলা নিয়ে অভিভাবকদের এই অসন্তোষের বিষয়ে প্রশ্ন করলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম যুগের চিন্তাকে বলেন, এটাতে আমাদের কিছু করার নেই। সরকার যে নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের। আমরা তার বাস্তবায়ন করছি।

 


একই বিষয়ে মাধ্যমিক জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইউনুছ ফারুকী এর সাথে মুঠোফোনে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন কলটি রিসিভ করেনি।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর