মঙ্গলবার   ২১ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

শেষ হলো পনেরো দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৪  


বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পনেরোদিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। বৈশাখীমেলার শেষদিনে কবি, ফোকলোরবিদ ও গবেষক ড. আমিনুর রহমান সুলতানের সভাপতিত্বে গতকাল বিকেল সাড়ে তিনটায় ময়ূরপঙ্খী লোকজ মঞ্চে “বাংলাদেশের আঞ্চলিক গানের বৈচিত্র্য” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও গবেষক শাহেদ কায়েস।

 

 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক চিত্রশিল্পী এএকেএম আজাদ সরকার। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে পঠিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা কবি ও কথাসাহিত্যিক পিয়াস মজিদ।

 

 

সেমিনার শেষে শুরু হয় মন মাতানো বাউল গানের আসর। প্রচুর দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল মেলায়। মঞ্চের সামনে পরিপূর্ণ ছিল পেন্ডেল। অনুষ্ঠানে লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রখ্যাত বাউল শিল্পী কাজল দেওয়ান, আক্কাস দেওয়ান, উজ্জ্বল দেওয়ান ও স্মৃতি দেওয়ান।

 


মঙ্গল শোভাযাত্রা, সেমিনার, গ্রামবাংলা ও বৈশাখী উৎসব শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গ্রামীণ খেলা ও জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এবারের মেলায়। বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ফাউন্ডেশনের কারুশিল্পগ্রামে ‘লোক ও কারুশিল্প চর্চা চত্বর’ উদ্বোধন। সেখানে নকশিকাঁথা, নকশি পাখা, পাটশিল্পের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে মেলা কর্তৃপক্ষ।

 


বৈশাখী মেলায় গ্রামবাংলার কারুশিল্প প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন রাজশাহীর শখের হাঁড়ির শিল্পী সুশান্ত কুমার পাল, দারুশিল্পী আব্দুল আউয়াল মোল্লা, বীরেন্দ্র সূত্রধর, নকশিকাঁথা শিল্পী হোসনে আরা বেগম, বাঁশ-বেতের শিল্পী পরেশ চন্দ্র দাস, হাতপাখা শিল্পী বাসন্তী সূত্রধর, শোলাশিল্পী নিখিল মালাকার, রিকশা ও রিকশাচিত্র শিল্পী এস এ মালেক, জামদানি শিল্পী ইব্রাহিম, ঝিনুকশিল্পী মো. নূরুল ইসলাম, শতরঞ্জিশিল্পী আনোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে। এরমধ্যে কিছু উদ্যোগতাও অংশগ্রহণ করেন মেলায়।

 


বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান বলেন, “এবার পক্ষকালব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক ছিল। প্রতিদিনই লোকজ মঞ্চে বিষয়ভিত্তিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল, এবং এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পালাগান, মালজোড়া গান, কবিগান, বাউলগান, পালকির গান, কিচ্ছা গান, ভাটিয়ালি, মাইজভাণ্ডারী, লালন, হাছন রাজা, আঞ্চলিক গান ও জারি-সারিগানের আসরের আয়োজন ছিল।”

 

 

তিনি আরও বলেন, “আমি যোগদান করার পর ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আমি চেষ্টা করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রকৃত শিল্পীদের এনে যথার্থভাবে সম্মানিত করতে এবং মৃতপ্রায় শিল্পগুলোকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন শিল্পী তৈরি করতে।”

 


সোনারগাঁয়ের সন্তান কবি শাহেদ কায়েস তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এবার বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে একজন যোগ্য পরিচালক এসেছেন, যিনি নিজে দীর্ঘদিন যাবত লোক ও কারুশিল্প নিয়ে গবেষণা করছেন, এবং দেশের তৃনমূল পর্যায়ের লোক ও কারুশিল্পীদের সঙ্গে যার রয়েছে প্রাণের যোগ। আমি প্রত্যাশা করছি, ড. আমিনুর রহমান সুলতান-এর নেতৃত্বে এই ফাউন্ডেশন নিয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে”।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর