শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪   শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

‘দেশের উন্নয়ন হোক মানুষ না খাইয়া মরুক’

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

 

রোজ রোজ বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এক মাসের ব্যবধানেই শুরু হবে পবিত্র সবে-বরাত ও রমজান মাস। কিন্তু রমজানের আভাস পেতে না পেতেই বাজারে সব কিছুর দাম বেড়েই চলেছে। মানুষ এক প্রকার হিমসিম খাচ্ছে জীবিকা নির্বাহ করতে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের মরার উপর খারার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোজ রোজ বাজারে যাওয়ার বিষয়টি।

 

সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম নাগালের মধ্যে রাখার নির্দেশ থাকলেও তা বাস্তবায়নে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। বাজারের এমন অস্থিতিশীলতায় কীভাবে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকেব সাধারণ মানুষ সেটাই ভেবে পাচ্ছে না।

 

পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এখন থেকেই বাড়তে শুরু করেছে চাল, আটা, ডাল, ছোলা, চিনি সহ আরো নানা নিত্যপণ্যের দাম। রোজা আসার আগে জিনিসের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে মানুষ। এবার রমজান আসার মাস দেড়েক আগেই বাড়ছে জিনিসের দাম। বিগত কয়েক মাস দেশে খাদ্যর কোনো সংকট দেখা না দিলেও কোনো ভাবেই কমানো যাচ্ছে না নিত্যপন্যের চড়াও হওয়া দাম। দিন যত যাচ্ছে কমার বদলে বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের মুখে এখন একটাই কথা এভাবে চলতে থাকলে না খেয়েই মরতে হবে ।

 

নারায়নগঞ্জের নিতাইগঞ্জে দিনমজুরের কাজ করা জসিমের কাছে বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘আমাগো দেখবো কেডায়। আমরা না খাইয়া মইরা গেলেও কারো কিছু হইবো না। “দেশের উন্নয়ণ হোক তাও মানুষ না খাইয়া মরুক” সরকারের সে দিকে নজর না দিলেও হইবো। দেশের তো ভালা ভালা কাম হইতাছে। বাজারে গেলে মুখ কালা হইয়া যায়। বড় লোক গো তো আর কোনো সমস্যা নাই হেগোর টাকার অভাব নাই যত অভাব সব আমগোই দিছে আল্লায়।

 

ক্রেতা বিপ্লপ বরুয়া পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী বলেন, বর্তমানে জিনিসপত্রের যে দাম তাই অল্প অল্প করে কিনে নিয়ে যাচ্ছি। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। শুধু নিত্যপন্যই না পানির বিল, বিদুৎ বিল ও ঔষদের দামও বেড়ে গেছে। বাজারে যে কখন কোন সবজির দাম বাড়ছে আর কোনটির দাম কমছে তা বলতে পারে না কেউ। মনে হচ্ছে প্রতিনিয়ত সবকিছুর দাম বাড়া নিয়ে প্রতিযোগীতা চলছে। আবার আমাদের দেশে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে তা আর কমতে চায় না। সরকার যদি বাজার মনিটরিং এর দিক টা একটু ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করতো তাহলে দাম আরেকটু নাগালের মধ্যে থাকতো।

 

বাজারে বাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষক শিরিনা বেগম এ বিষয় বলেন, আমাদের তো আর কিছু করার নেই। বেঁচে থাকতে হলে খাদ্যর প্রয়োজন। আর খাবার যোগান দিতে বাজার তো করতেই হবে। আমরা শিক্ষা লাভ করি। কিন্তু দিন শেষে দেখা যায় আমাদের শিক্ষার সাথে বর্তমান বস্তবতার কোনো মিল নেই। মানুষের অভাবে মানুষ নিজের স্বভাব নষ্ট করছে। বেতন অনুযায়ী আমাদের সারা মাসে চলার মতো আয় হয় না। তো এই অবস্থায় মানুষ কী বা করতে পারে। বাজারে আসলে আতঙ্কে থাকতে হয়। দু’বেলা ভাতের জন্য এখন ভেবে চিন্তে বাজারে আসতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ করবে টা কী। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর