বৃহস্পতিবার   ১৬ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

এবার প্রকাশ্যে রামদা হাতে হামলা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২৪  


 
# ফতুল্লার দক্ষিণ শিয়াচর এলাকায় মাদকের অভয়ারণ্য
# দেশীয় অস্ত্রসহ ফিল্মি স্টাইলে কিশোরগ্যাং নিয়ে হামলা
# খোঁজ নিচ্ছি, কারা এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট : এসআই কামাল

 

আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ফতুল্লার দক্ষিণ শিয়াচর এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট সোহেল ওরফে দাউদ সোহেল। এবার মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার জের ধরে এক যুবকের খোঁজে ৪০-৫০ জনের কিশোরগ্যাং বাহিনীর সাথে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে মহড়া এবং তাকে না পেয়ে তার বাড়ির লোকজনকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে দাউদ সোহেলের বিরুদ্ধে।

 

এ ঘটনায় বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী যুবক মাহমুদ হাসান হৃদয় (২৫)। রামদা, চাকু হাতে নিয়ে দাউদ সোহেলে ফিল্মি স্টাইলে মহড়া দেওয়ার একটি ভিডিও এসেছে পৌঁছেছে যুগের চিন্তার হাতে।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত সময়ে দাউদ সোহেলের লালিত কিশোরগ্যাং সদস্যদের ফতুল্লার শাহজাহান রোলিং মিলস সংলগ্ন খাঁ বাড়ি এলাকায় মাদক ব্যবসা করতে না দেওয়ায় ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ফতুল্লার দক্ষিণ শিয়াচরের ইয়াদ আলী মসজিদ এলাকা থেকে ৪০-৫০ জনের একদল কিশোরগ্যাং নিয়ে বাদী মাহমুদ হাসান হৃদয়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।

 

জানা যায়, অভিযোগের ১নং বিবাদী আতাউর মিয়ার পুত্র সোহেল ওরফে দাউদ সোহেল (৩৫), ২নং বিবাদী মোহন মিয়ার পুত্র জসিম (২২), ৩নং বিবাদী শাহিন (২২), ৪নং বিবাদী সোলেমান (২৩), ৫নং বিবাদী সাব্বির (২৫), ৬নং বিবাদী ফাইজুল (২৫) সহ অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জনের একদল কিশোর দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বাদী মাহমুদ হাসান হৃদয়ের খোঁজে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তার খোঁজ না পেয়ে বাদীর পরিবারের লোকজনকে হুমকি ধামকি এবং তার বাড়ির গেইট ভাংচুর করে চলে যায় বিবাদীরা।

 

এ বিষয়ে অভিযোগের বাদী মাহমুদ হাসান হৃদয় জানান, দাউদ সোহেল ফতুল্লার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারী এবং সন্ত্রাসী। বিগত সময়ে দাউদ সোহেলের বিভিন্ন অপকর্মের খবর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছে। তার নামে ফতুল্লা মডেল থানায় ৭ থেকে ৮টি মামলা রয়েছে। দক্ষিণ শিয়াচরের পুরো ইয়াদ আলী মসজিদ এলাকায় দাউদ সোহেল ও তার লোকজন মাদক বেচাবিক্রি করে। আশপাশের আরও কিছু এলাকাতেও তারা মাদক ব্যবসা করে।

 

সেই ধারাবাহিকতায় খাঁ বাড়ি গলিতেও দাউদ সোহেলের লোক মাদক বেচাবিক্রি শুরু করে। পরবর্তীতে আমি বেশ কয়েকবার এ ব্যাপারে তাদের নিষেধ করি। সেই ঘটনার জের ধরে শুক্রবার দাউদ সোহেলের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন কিশোরগ্যাং সদস্য আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার বাড়িতে খুঁজতে আসে। তাদের প্রত্যেকের হাতে ছিল, ছুরি, রামদা। ফিল্মি স্টাইলে মহড়ার ওই ভিডিও’র সিসি টিভি ফুটেজও আমরা সংগ্রহ করেছি।

 

তিনি আরও বলেন, দাউদ সোহেল যেকোন সময় আমাকে মেরে ফেলতে পারে। আমি এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

এ ঘটনায় অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এস আই) কামাল হোসেন যুগের চিন্তাকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

প্রসঙ্গত, শুধু মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে এরইমধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন ফতুল্লা শিয়াচর এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট দাউদ সোহেল। দক্ষিণ শিয়াচর ইয়াদ আলী মসজিদ এলাকা থেকে পুরো রেললাইন জুড়ে শুধু তারই রাজত্ব। নিজ বলয়ে অন্তত ২০ থেকে ৩০ যুবকের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ওই এলাকায় নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে দাউদ সোহেল। যাদের নিত্যদিনের খরচ থেকে শুরু তরে ঘরভাড়া পর্যন্ত বহন করে সে।

 

এরমধ্যে, দাউদ সোহেলের নিয়ন্ত্রিত খুচরা মাদক সরবরাহকদের মধ্যে রয়েছে, বকুলির ছেলে গোলাম রাব্বী ওরফে কাল্লু, জসিম, সাব্বির ও সাগর। এতোকিছুর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় চিন্তিত শিয়াচরের পঞ্চায়েত ও মসজিদ কমিটির লোকজন। তাদের দাবি, কোনভাবেই যেনো থামানো যাচ্ছে না দাউদ সোহেলকে। কারণ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে জেল খাটার হুমকি পেতে হয় বলে দাবি করছেন তারা। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর