শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪   শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

কে হচ্ছেন চেয়ারম্যান সিদ্বান্ত আসতে পারে আজই  

সাইমুন ইসলাম

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  


# শামীম ওসমানের অনুসারীদের মধ্যে কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেনি
#এ পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ৬ টি : উপজেলা নির্বাচন অফিসার

দিন যতই যাচ্ছে ততই উৎসাহ উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের উপ- নির্বাচন নিয়ে। ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন এই ইউনিয়নটি। শিল্প সমৃদ্ধ  এই ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য আগ্রহের কমতি নেই। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন ফতুল্লার শামীম ওসমানের আস্থাভাজনদের মধ্যো  একাধীক হেভীওয়েট প্রার্থী।

 

 

তবে সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে শামীম ওসমান সমর্থন দেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনকেই।  অতঃপর তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে নির্বাচিত হন।  এ ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এর স্থায়ীত্বকাল দুইবছর ও হয়নি। আকস্মিক মৃত্যু ঘটে তার। লুৎফর রহমান স্বপনের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নজরুল ইসলাম সেলিম।

 

 

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী যদি কোনো পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার এর পদ মৃত্যু ,পদত্যাগ, অপসারন কিংবা অন্যকোনো কারনে মেয়াদ শেষ হওয়ায় কমপক্ষে ১৮০ দিন পূর্বে শেষ হয় তবে সেই স্থানে শূন্যস্থান হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যো অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য শূন্য পদে নির্বাচন করতে হবে। অতএব এরই পেক্ষিতে  ২৪ জানুয়ারী ( বুধবার) নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাঙ্গির আলম নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন।

 

 

ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ৯ মার্চ সর্বমোট ২৩১ টি পৌরসভা , বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড , ইউনিয়ন ও জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ঘোষনার পরপরই ফতুল্লা ইউপির উপনির্বাচন নিয়ে আবারো আলোচনায় আসে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে শামীম ওসমানদের আস্থাভাজনদের নাম।

 

 

পাশাপাশী এই আস্থাভাজনদের তালিকায় থাকা নেতাদের নিজেদের মধ্যো লড়াই জমে ওঠার আভাস পাওয়া যায়। কারন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যো বলেছেন আপাতত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবেনা। তিনি বলেন এতে ভোট অংশগ্রহনমূলক ও উৎসবমুখর হবে। যিনি জনপ্রিয় প্রার্থী তিনি জয়ী হয়ে আসবেন।  

 


তথ্যমতে, এ উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্ধীতা করবেন, ফতুল্লা থানা আ’লীগের ১ নং সদস্য আবু শরীফুল হক,  ফতুল্লা থানা  ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী যুবলীগ নেতা হাজী আজমত  আলী,  ফতুল্লা থানা আ’লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ লিটন, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী, ,প্রয়াত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন এর স্ত্রী সেলিনা সুলতানা।

 

 

এছাড়াও আরোও কিছু নাম  শোনা যাচ্ছে। তথ্যমতে,  প্রার্থীর প্রত্যেকেই শামীম ওসমানের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। তারা প্রত্যেকেই প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচীতে শামীম ওসমানের ডাকে সফলভাবে সারা দিতো। এদের প্রত্যেকেই ফতুল্লা ইউপির উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করার ইচ্ছে পোষন করেছেন। তবে এদের প্রত্যেকেই আবার শামীম ওসমানকে অভিবাবক হিসেবে অত্যন্ত মান্য করে।

 

 

তারা প্রত্যেকেই জানিয়েছে শামীম ওসমান যা সিদ্ধান্ত দিবেন তারা সে সিদ্বান্ত মেনে নেবেন অর্থাৎ তারা শামীম ওসমানের সিদ্বান্তের উপর অত্যন্ত শ্রদ্বাশীল। এ নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে ইতিমধ্যো বৈঠক করেছেন শামীম ওসমান । বৈঠকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যো ঐক্যমতে আসার জন্য বলা হয়েছে। এ নিয়ে পূনরায় আজ বৈঠক করা হবে। ধারনা করা হচ্ছে এ বৈঠক থেকেই ঘোষনা আসবে কে হতে যাচ্ছে ফতুল্লা ইউপির পরবর্তী চেয়ারম্যান।

 


এ নিয়ে ফতুল্লা থানা  আওয়ামী যুবলীগ নেতা হাজী আজমত আলী বলেন, আমি প্রায় আড়াই যুগের ও বেশি সময় ধরে আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। শামীম ওসমান যখনই রাজনৈতিক কর্মসূচীর ডাক দিতো ফতুল্লা থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক নিয়ে আমি কর্মসূচী সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করতাম। এছাড়াও এ এলাকার বাসিন্দাদের যেকোনো প্রয়োজনে নিঃস্বার্থে ছুটে গিয়েছি।

 

 

করোনাকালে যখন কেউ ঘর থেকে বাহির হওয়ার সাহস করতো না তখনও আমি প্রকাশ্যে গোপনে বহু মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও যেকোনো প্রয়োজনে কোনো অসহায় মানুষ আমার কাছে সাহায্য আবেদন করলে তাদের খালি হাতে  ফিরিয়ে দিতাম না। এ জন্য এ এলাকার মানুষের অত্যন্ত ভালোবাসা পেয়েছি।

 

 

মূলত মানুষের জন্য কিছু করার প্রেরনা থেকেই আমি চেয়ারম্যান পদের জন্য আগ্রহী। কারন আমি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হলে আরোও বড় পরিসরে মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবো। তবে আমার নেতা শামীম ওসমান যা বলবেন যে সিদ্বান্ত দিবেন সে সিদ্বান্ত মেনে নিবো। তার স্বিদ্ধান্তের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল ছিলাম এখনো আছি।

 


এ নিয়ে ফতুল্লা থানা আ’লীগের ১ নং সদস্য আবু মোঃ শরিফুল হক বলেন, এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে হবেন এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি । আমার নেতা শামীম ওসমান যা বলবেন আমরা সেভাবেই কাজ করবো।

 

 

শামীম ওসমান যদি অন্য কাউকে গ্রিন সিগনাল দেয় তবে আপনি সে প্রার্থীর বিরুদ্ধে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনে দাড়াবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তার বিপক্ষে কখনোই যাবো না। তার সিদ্বান্তের প্রতি সবসময়ের মতোই শ্রদ্ধা রেখে তিনি যাকে বলবেন তার হয়ে কাজ করবো।

 


এ নিয়ে প্রয়াত চেয়ারম্যান স্বপন এর স্ত্রী সেলিনা সুলতানা বলেন, আমার স্বামী এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার মেয়াদ প্রায় ৩ বছর এখনো বাকি রয়েছে। আমি চাই এ বাকি ৩ বছর কাজ করে আমার স্বামীর অসম্পূর্ন কাজগুলো সম্পূর্ন করি। আমি তো আর পরে দাড়াবো না। যারা বর্তমানে চেয়ারম্যান হিসেবে দাড়াতে চায় তারা তো পরেরবার আবার সুযোগ পেতে পারে।
 

 


তবে সুত্র মতে, এবার শামীম ওসমান ফতুল্লা ইউপির উপ নির্বাচনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠের ফলাফলে তার যেসকল অনুসারীরা ভালো ফলাফল করতে সমর্থ হয়েছে তাদের অগ্রাধীকার দিবেন। কেননা তিনি নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্ন প্রোগ্রামে বলেছেন যারা ভোটের মাঠে ব্যার্থ হয়েছেন তাদের জবাবদিহীতার আওতায় আনবেন।

 

 

কেনো তারা ভালো করতে পারেননি। শুধু তাই নয়  যারা ভালো করেছেন নেতৃত্বে তাদের সামনে নিয়ে আসার আভাস দেন। এছাড়াও যারা ক্লিন ইমেজের তারা  আশির্বাদপুষ্ট হবেন এ সাংসদ দ্বারা।

 


তবে ফতুল্লা ইউপির উপ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয়দের আগ্রহের কমতি নেই। তারা শামীম অনুসারীদের নিজেদের মধ্যাকার লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে। তারা শামীম ওসমানের সিদ্বান্তের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে এ নির্বাচন নিয়ে তেমনভাবে মুখ খুলেননি প্রার্থীদের কে?   এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর