রোববার   ১৯ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

বর্জনের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে ভোটার ঠোকাতে চায় বিএনপি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫ মে ২০২৪  

 

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্র ভোটারবিহীন রাখতে ইতিমধ্যেই ভোট বর্জনের দাবিতে জনগণের সাথে মত বিনিময় ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি অবহৃত রেখেছে নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দেশের সব বড় বিরোধী দল বিএনপি। এদিকে বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় সকল ক্ষেত্রেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাদের নিজেদের মধ্যেই লড়াই হচ্ছে।

 

তা ছাড়া গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন না করায় বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের দলের প্রার্থী ছিলেন। আর এ নিয়ে বিএনপি বরাবর বলে আসছে এই নির্বাচন ক্ষমতাসীন দল নিজেরাই একটি নির্বাচন করেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও একই চিত্র ফুটে উঠেছে। নারায়ণগঞ্জের উপজেলা গুলোতেও তার ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে কেন্দ্র ফাঁকা রাখতে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচির নামে রাজপথে নামছে।

 

জানা গেছে, প্রথম ধাপে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহন হতে যাচ্ছে যা অনুষ্ঠিত হবে ৮ মে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই বন্দর উপজেলা মহানগরের আওতাধীন হওয়ায় মহানগর বিএনপির  আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বারবারই বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সেক্রেটারির সাথে যোগাযোগ অবহৃত রেখেছে। এমনকি মত বিনিময় সভা ও জনসাধারণের মাঝে ভোট বর্জন চেয়ে লিফলেট বিতরণের চিত্র দেখা মিলছে।

 

একদিকে যেমন ভোটারদের ভোট কেন্দ্র থেকে দূরে রাখার কসরত চলছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের সাথে আরও সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে যাচ্ছে বিএনপি। এদিকে পরবর্তীতে দাপে ২১ মে সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলাগুলোর ভোটার ঠেকাতে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি রাজপথে অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

ইতিমধ্যে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নির্বাচনের বর্জনের দাবিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে মত বিনিময় সভা করেছেন। তা ছাড়া তারা সকল নেতাকর্মীদের বলে দিয়েছেন নিজ নিজ এলাকায় জনসাধারণকে বলে দিতে যে ভোটার কেন্দ্রে তারা না আসে। একই সাথে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপিসহ দফায় দফায় মত বিনিময় সভা করেছেন এমনকি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ স্বশরীরে নেতাকর্মীদের নিয়ে নিজ এলাকায় গণসংযোগ করেছেন সকলকে বুঝিয়েছেন যেন কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে না যায়।

 

অপর দিকে এখনো সোনারগাঁও উপজেলায় ভোট ঠেকাতে নেই কোন পদক্ষেপ তা ছাড়া তাদের অনেকের নামেই অভিযোগ রয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর সাথে সখ্যতা রেখে কাজ করছেন যার কারণে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অনেকটাই মাথা ব্যাথা রেখেছে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি।

 

সূত্র বলছে, গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভোটে অংশ নেয়নি বিএনপি। জাতীয় ওই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলটির নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকেও চালিয়ে গেছেন ভোটারদের নিরুৎসাহিত করণ কর্মসূচি। পাশাপাশি ছিলো হরতাল অবরোধের মত লাগাতার কঠিন কর্মসূচিও। এবারের উপজেলা নির্বাচনেও অংশ না নেয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ন কর্মসূচির পথ ধরেছেন। করছেন লিফলেট বিতরণ। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে এসে জেলা ও মহানগর বিএনপির সাথে যৌথ সভা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।

 

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সরকার এবং বতমান নিবাচন কমিশনের অধিনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না জানিয়ে সাধারণ মানুষকেও ভোট কেন্দ্রে না যেতে উদ্বুদ্ধ করণ নিয়ে আলোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।পাশাপাশি বিএনপির কোনো নেতাকর্মী নির্বাচনী কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারী দেয়া হয়েছে। যাকে কেন্দ্র সেই দ্বাদশ নির্বাচনের মতোই এই উপজেলা নির্বাচনে ভোটার ঠেকানো বিএনপির মূল টার্গেট।

 

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিএনপি একটি বড় দল এই দলের কর্মীসমর্থন রয়েছে আকাশচুম্মী। যা কখনো এই অবৈধ সরকার জোগান করতে পারবে না। তা ছাড়া বিএনপিকে দেশের জনগণ বিশ্বাস করে যাকে ঘিরে বিএনপি একটি দাবী জানালে তারা বুঝতে পারে এবং পরিস্থিতি মিলিয়েই ঠিকই তাদের নিজেদের দাবীর সাথে মিল পায়।

 

আমরা গত ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের মতো করে এই নির্বাচন ও বয়কট করেছি কিছুদিন পূর্বে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জে এসে আমাদের নানা দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন সেই অনুযায়ী আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদী এই উপজেলা নির্বাচনে ও শূন্য কেন্দ্রের দেখা মিলবে।

 

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আমাদের দলীয় হাইকমান্ড। এর আগে যেভাবে দ্বাদশ নির্বাচনে ভোটার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে বিএনপি।

 

এবার ও এই উপজেলা নির্বাচেন ও আগের মতোই ভোটার কেন্দ্র খালি থাকবে। কারণ জনগণ যানে এই সরকারকে ভোট দিয়ে কোন লাভ নেই। কারণ তারা বর্তমানে তামাশার রাজনীতিতে ব্যস্থ সময় পাড় করছেন। ভোট বর্জন আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত,যদি কেউ দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে প্রচারণা ও ভোটকেন্দ্রে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আমরা এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ নিবো না এটা আমাদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। যাকে ঘিরে আমরা বর্তমানে জাতীয় নির্বাচনের মতো করেই এই উপজেলা নির্বাচনে ও কোন প্রার্থী দেয়নি। যারা আমাদের নাম বিক্রি করে বিএনপি বলে মানুষদের কাছ থেকে ভোট চাইছে, তারা মূলত একটি দালাল চক্রের সহযোগী।

 

বর্তমানে উভয় জায়গা থেকে লাথি খেয়ে বিএনপির নামে উপজেলার চেয়ারম্যান হতে চায়। জনগণ এখন আর বলদ নয় সকলেই বুঝে গেছে ভোট দিতে হয় না। আওয়ামী লীগ এমনিতেই পাশ হয়ে যায়। যার কারণে এই সরকারের নির্বাচন মানুষ বিশ^াস করে না ভোট ও দিতে তারা যাবে না।

 

রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন বলেন, আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছি। যার মাধ্যমে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ-আওয়ামী লীগে কামড়া-কামড়ি চলছে। যার কারণে নির্বাচনী নেই কোন আমেজ, এমনকি ভোটারদের আগ্রহ।

এই বিভাগের আরো খবর