রোববার   ১৯ মে ২০২৪   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

বেঈমানী করে নিজের আখের গোছানো মুকুলের পুরনো খেলা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২৪  


# দলটি এবারের উপজেলা নির্বাচনেও ভোট বর্জন করায় জনগণ ভোট দিতে যাবে না বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা

 

এবার উপজেলা নির্বাচনে ভোটে দাড়িয়েও বেকায়দায় রয়েছেন আতাউর রহমান মুকুল। তিনি বিএনপির ভোটারদের ভোট আশা করছেন। কিন্তু বিএনপি সারা দেশে এবারের উপজেলা নির্বাচনেও ভোট বর্জন করায় বিএনপির ভোটাররা জাতীয় নির্বাচনের মতোই ভোট কেন্দ্রে যাবেনা বলে জানা গেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নূন্যতম দশ শতাংশ ভোটারও ভোট কেন্দ্রে যায়নি। বিএনপিকে ভালোবাসেন এমন কোনো ভোটারই ভোট কেন্দ্রে যাননি।

 

যার ফলে বিএনপির এই নিরব ভোট বর্জনের কারনে দেশে বিদেশে কোথাও বিগত সংসদ নির্বাচন গ্রহনযোগ্যতা পায়নি বলে মনে করেন এই দলের নেতাকর্মীরা। ফলে এবারের উপজেলা নির্বাচনেও ভোট কেন্দ্রে যাবে না বিএনপির ভোটাররা। তাই এবার আতাউর রহমান মুকুল আম ছালা দুটোই হারাবেন বলে মনে করেন বন্দরের সাধারন মানুষের অনেকে। কারন মুকুল সারা জীবন বিএনপির নামে রাজনীতি করলেও বাস্তবে তিনি সব সময়ই বিএনপি বিরোধী এমপিদেও সাথে আতাত করে রাজনীতি করেছেন।

 

জাতীয় পার্টির প্রয়াত এমপি একেএম নাসিম ওসমান জীবীত থাকতে তিনি তিনি নাসিম ওসমানের লেজুরবৃত্তি করেছেন। পওে বর্তমান এমপি সেলিম ওসমান এমপি হলে তিনি সেলিম ওসমানের কাছ থেকেও নানা রকম সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু কখনোই তিনি আন্তরিক ভাবে বিএনপির রাজনীতি করেননি। দলটির জন্য তেমন কোনো ত্যাগ স্বীকারও করেননি। অথচ বিএনপির সাইন বোর্ড ব্যাবহার করে তিনি দুই বার উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু বরাবরই তিনি ওসমান এমপিদের দালালী করেছেন।

 

যার ফলে বিএনপির নেতা কর্মীরা এই আতাউর রহমান মুকুলকে দলের সাথে বিশ্বাস ঘাতক হিসাবেই মনে করেন। তাই তারা এবার তাকে ভোট দিতে যাবেন না বলেই বন্দরের মাঠ পর্যায়ের জোরালো আওয়াজ উঠেছে।


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান আতাউর রহমান মুকুলের নাম না নিয়ে বলেন, তিনি কখনোই বিএনপির স্বার্থে কোনো কাজ করেননি। তিনি তারা সারা জীবনই বিএনপিকে ব্যাবহার করেছেন নিজের আখের গুছানোর কাজে। তাই এই বিষয়ে আমার পরিস্কার বক্তব্য হলো, আমাদের দল মনে করে এই সরকারের আমলে এবং এই নির্বাচন কমিশনের অধিনে কোনো অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচন হতে পারে না। তাই বিএনপি সব নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে। আমরা এবারের এই উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করবো। আমরা মনে করি ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনেও জনগন ভোট দিতে যাবে না।

 


এদিকে আতাউর রহমান মুকুল নিজ দল বিএনপি থেকে একাধিকবার বহিস্কৃত হয়েছে। দুই মেয়াদে দশ বছর বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তার মাধ্যমে বন্দর উপজেলায় দৃশ্যমান তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। তার চাচা লতিফ হাজী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় একজন রাজাকার হওয়ার পরও তিনি নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে দাবী করেন।

 

আবার তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অবিসংবাধিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কোন অবদান নেই বলে মন্তব্য করার দৃষ্টতা দেখিয়েছেন। শেখ হাসিনাকে তিনি দুর্নীতিবাজ উচ্ছৃঙ্খল মহিলা বলেও কটুক্তি করেছেন। অথচ উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময় তিনি বর্তমান সরকারের দেওয়া সকল সুুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা পুলিশের গাড়ি পোড়ানো সহ নানা নাশকতা মামলা থেকে নিজের গ্রেপ্তার এড়াতে সরকারী দলীয় লোকদের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে চলেছেন।

 

বন্দরের উন্নয়নের স্বার্থে সবার সাথে আছি এমন স্ট্যান্ড নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকেও ব্যবহার করেছেন নিজের গ্রেপ্তার এড়াতে। সেই রাজাকার পরিবারের সন্তান বহুরূপী আতাউর রহমান মুকুল ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছে। চিড়িং মার্কা প্রতীক নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত দোয়াত কলম প্রতীকের বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ রশিদের বিরুদ্ধে লড়ছেন।


তবে মুকুলের এমন স্ট্যান্ডবাজি তার নিজ দল বিএনপির শীর্ষ নেতারাও ভাল চোখে দেখছেন না। জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা আতাউর রহমান মুকুলকে দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা কারী হিসেবে আখ্যায়িত করে নির্বাচনে তাকে বয়কট করতে সকলের প্রতি আহবান রেখেছেন। সেই সাথে উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে ভোটারদের বিরত থাকার আহবান জানিয়ে বন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরন কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছেন তার দলের নেতাকর্মীরা।


অপরদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুকুলের করা কটুক্তিকে দৃষ্টতা হিসেবে দেখছেন বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। একজন রাজাকার পরিবারের সন্তান হয়েও আতাউর রহমান মুকুল বঙ্গবন্ধুকে এমন মিথ্যাচার করেও নির্বাচনে দাড়িয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোয় ক্ষুদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করে এখন পর্যন্ত কেউ রেহাই পায়নি।

 

কিন্তু এই আতাউর রহমান মুকুল বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করে এখন পর্যন্ত বন্দরের মাটিতে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই সাথে আবারো বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখছে এতে করে অবাক হয়েছেন তৃনমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সহ বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসা সাধারণ মানুষ। দ্রুত তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত বলে মনে করেছেন তারা।


২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী নগরীর চারারগোপ এলাকায় লিফলেট বিতরনকালে একটি বক্তব্য আতাউর রহমান মুকুল মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, এই দেশে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধে কোন অবদান নাই। মিথ্যাচার করে জিয়াউর রহমানের নামকে মুছে ফেলতে ষড়যন্ত্র করছে। যাতে দেশে জিয়াউর রহমানের কোন নাম না থাকে। কারন এই দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে জিয়াউর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের শক্তি হলো জিয়াউর রহমান।

 

তারা নাকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। তারা যদি মুক্তিযুদ্ধে স্বপক্ষের শক্তি হতো তারা ক্ষমতায় ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করে নাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় খুলেছি। আমরা সমরক্ষেত্র, বিভিন্ন জায়গায় বিজয়স্তম্ভ, স্মৃতি স্তম্ভ সমস্ত কিছু বিএনপি সরকার করেছে খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান সরকার করেছে। কিন্তু এই দেশে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধে কোন অবদান নাই। আওয়ামী লীগের নেতারা বড় বড় কথা বলে। আমার নবীগঞ্জে বাড়ি। সেখানে যারা আওয়ামী লীগ করতো তারা একজনও মুক্তিযুদ্ধে যায় নাই। কেউ বলতে পারবে না। মুরুব্বিরা বলতে পারবে কারা কারা তখন আওয়ামী লীগ করেছে। তারা নাকি সংগঠক মুক্তিযুদ্ধের, এই মিথ্যাচার করে আর কতদিন পাবলিককে বোকা দিবে। আর পারবেনা। এইবার এই সরকারকে পতন করে ছাড়বো।


২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকা বিএনপির মহাসমাবেশে গিয়ে বহিস্কৃত এই নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে বলে ছিলেন, শেখ হাসিনা আপনিও সাবধান থাকেন। কত দুর্নীতি করেছেন আপনি আপনার পুরো ফ্যামিলি এগুলো আপনি সব জানেন। এগুলো হিসাব আপনাকে দিতে হবে। তখন আর হিসাব দিতে পারবেন না। তখন বুঝবেন ক্ষমতা কি জিনিস আর ক্ষমতা হারালে কি জিনিস। ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসে আপনি পাগল হয়ে গিয়েছেন। আপনি যেনতেন বক্তব্য দেন।

 

যে বক্তব্য নাকি উচ্ছৃঙ্খল মহিলা সেরকম বক্তব্য দেয়। আমাদের নেত্রীর কথাবার্তার শালিনতা আছে। উনি একজন দেশপ্রেমী নেত্রী। যার দ্বারা এই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। আমরা সংবাদপত্রে স্বাধীনতা দিয়েছি। আজকে সাংবাদিক ভাইয়েরা কোন কথা বলতে পারেনা। পুলিশ কন্ট্রোলে আছে। পুলিশ কোন কথা বলতে পারেনা। সেনাবাহিনী কোন কথা বলতে পারেনা। সবাইকে আপনি রক্তচক্ষু রাঙ্গানি দিয়ে পোষা বিড়াল বানিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু সময় ঘুরবে। সময় ঘুরলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার নেতাকর্মীদের কি হয়। আপনার কি অবস্থা হয়।

 

এই দুর্নীতির হিসাব আপনাকে দিতেই হবে। নয়তো বাংলাদেশের কোন মানুষ আপনাকে ছাড়বে না। গত রাতে আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করেছে। অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হযেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানান। যত বাধাই দেকনা কেন আজকে নারায়ণগঞ্জের মানুষ ঢাকার এই সমাবেশকে সফল করতে সবাই একত্রিত হয়েছি। আমাদের একদফা এক দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। সেই সাথে আমার মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে।

 

পুলিশ যা ইচ্ছা তাই করছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারেনা। যেমন দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, তেমনি মানুষ দিশেহারা কাজকর্ম নেই , মানুষ কিভাবে চলবে। এই সরকার উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা বিদেশ পাচার করছে। আর আমাদের নেত্রীর সামান্য দুই কোটি টাকা যেটা ব্যাংকে রক্ষিত আছে। একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শেখ হাসিনা আপনিও সাবধান থাকেন। কত দুর্নীতি করেছেন আপনি এবং আপনার ফ্যামেলি এগুলো আপনি সব জানেন।


২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী নগরীর চারারগোপ এলাকায় লিফলেট বিতরনকালে একটি বক্তৃতায় আতাউর রহমান মুকুল মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, এই দেশে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধে কোন অবদান নাই। মিথ্যাচার করে জিয়াউর রহমানের নামকে মুছে ফেলতে ষড়যন্ত্র করছে। যাতে দেশে জিয়াউর রহমানের কোন নাম না থাকে। কারন এই দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে জিয়াউর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের শক্তি হলো জিয়াউর রহমান। তারা নাকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।

 

তারা যদি মুক্তিযুদ্ধে স্বপক্ষের শক্তি হতো তারা ক্ষমতায় ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করে নাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় খুলেছি। আমরা সমরক্ষেত্র, বিভিন্ন জায়গায় বিজয়স্তম্ভ, স্মৃতি স্তম্ভ সমস্ত কিছু বিএনপি সরকার করেছে খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান সরকার করেছে। কিন্তু এই দেশে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধে কোন অবদান নাই। আওয়ামী লীগের নেতারা বড় বড় কথা বলে। আমার নবীগঞ্জে বাড়ি। সেখানে যারা আওয়ামী লীগ করতো তারা একজনও মুক্তিযুদ্ধে যায় নাই। কেউ বলতে পারবে না। মুরুব্বিরা বলতে পারবে কারা কারা তখন আওয়ামী লীগ করেছে। তারা নাকি সংগঠক মুক্তিযুদ্ধের, এই মিথ্যাচার করে আর কতদিন পাবলিককে বোকা দিবে। আর পারবেনা। এইবার এই সরকারকে পতন করে ছাড়বো।


কুখ্যাত রাজাকার পুত্র মাকসুদ হোসেনের মত আতাউর রহমান মুকুল কুখ্যাত রাজাকার লতিফ হাজীর ভাতিজা। আর এই দুজনের সাথে প্রতিদ্ব›দ্ধীতা করছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ রশিদ। তাই বন্দর উপজেলার এবারের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও বিপক্ষের শক্তির মাঝে অঘোষিত লড়াই হয়ে দেখা দিয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর