সোমবার   ১৩ মে ২০২৪   বৈশাখ ২৯ ১৪৩১

রাত আটটার পরেও দোকান খোলা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৪  


তীব্র গরমে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে রাত ৮টার পর সব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত থেকেই এই নির্দেশনা কার্যকর করেছে ডিপিডিসি।

 

 

এর আগের দিন গত  বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে শহরের বিভিন্ন সড়কে ডিপিডিসির পক্ষ থেকে মাইকিং করে দোকানিদের সতর্ক করা হয়। মাইকিং করে দোকানিদের জানানো হয় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রাত ৮টার পর কোনো মার্কেট-দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে এবং সবাই এই তীব্র গরমেও বিদ্যুৎ পাবে।

 


ডিপিডিসি আরও জানায়, সবার কথা চিন্তা করে অবশ্যই রাত ৮টার মধ্যে মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ করতে হবে। রাত ৮টার পর দোকান খোলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রয়োজনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের এই কঠোর নিয়ম মানছে না নগরীর বিভিন্ন এলাকা।

 


গত বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার (২৫,২৬,২৭) রাতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, ঘড়ির কাটায় রাত আটটা পার হলেও নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের দুপাশে গড়ে ওঠা অধিকাংশ দোকান ও শো-রুম বন্ধ হয়নি। হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি দোকান ও মার্কেট বন্ধ হয়েছে। এছাড়াও সিরাজউদ্দৌলা সড়কেও দেখা গেছে একই চিত্র। পাশাপাশি ফুটপাতে সকল ভাসমান দোকান মানেনি ডিপিডিসির দেওয়া এই নিষেধাজ্ঞা।  

 


এ নিয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে বঙ্গবন্ধু সড়কের এক শো-রুম এর ম্যানেজার যুগের চিন্তাকে বলেন, মূলত বিকালের পর থেকে আমাদের বিক্রি শুরু হলেও সন্ধ্যার পর থেকে বিক্রিটা জমজমাট থাকে। এছাড়া অধিকাংশ অফিস বন্ধ হয় আটটা বাজে তখন দেখা যায় কয়েকটি কাস্টমার আসে ক্রয়ের জন্য। এখন যদি আমরা দোকান আটটার মধ্যে বন্ধ করে ফেলি তাহলে কিভাবে। তবে হ্যা আমরা দোকানের লাইট মাত্র ২টি জ্বলিয়ে রেখেছি। আর সব গুলো বন্ধ করে দিয়েছি।

 


ডিআইটি মার্কেটের দোকানদার রিয়াদ বলেন, এখন কাষ্টমার যদি দোকানের ভিতর কেনাকাটা করতে থাকে সেই অবস্থাতে তো আর দোকান বন্ধ করা যায় না। ১০ মিনিট বা আধা ঘন্টা লেট হতেই পারে। আর এখর যে গরম চলছে সেই অবস্থাতে তো কাষ্টমার দিনের বেলায় দেখাই যায় না, বেশিরভাগই সবাই এখন সন্ধার পর আসে। এখন আমাদেরও তো লাভ আছে, বন্ধ করে দিলে আমরা চলবো কিভাবে।

 


সিরাজউদ্দৌলা সড়কের কসমেটিকস দোকানের মালিক বলেন, একটু পরই দোকান বন্ধ করে দিবো। রাত আটটার সময় দোকান বন্ধ করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। কারন সন্ধ্যার পর থেকেই কাস্টমার আসতে শুরু করে। মাত্র ৩ ঘন্টায় কি বিক্রি করবো বলেন। আবার সকালে যে একটু তাড়াতাড়ি দোকান খুলবো। তারও উপায় নেই। তখন কাস্টমার আসে না।

 


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাসান ইমাম যুগের চিন্তাকে বলেন, এই নিষেধাজ্ঞাটা জারি করা হয়েছে যাতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। আমাদের কিন্তু বাংলাদেশ মালিক সমিতির থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয় নাই। যে আমরা তা পুরো নারায়ণগঞ্জে বাস্তবায়ন করবো। আমাদের নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৭০ টা মার্কেট আছে। এই মার্কেট গুলো কি এই চিঠি পাইছে, নাকি পাই না। এছাড়া কারো কোনো নির্দেশনা নাই। আমরা হচ্ছি ভোক্তা।

 

 

আমরা কিন্তু সরকারকে ট্যাক্স দিই। তারপরও আমাদেরকেই এইসব নিয়ম মানতে হবে। ফুটপাত লক্ষ করেন তো। শত শত দোকান সেখানে খোলা। এমন না যে আমি সরকারের নিয়ম মানি না কিন্তু কোনো কাগজ পত্রে এই খবর বা টিভি চ্যানেলে আমি দেখি নাই। তাহলে কিসের ভিক্তিতে আমরা এতো গুলো দোকান-মার্কেট বন্ধ রাখবো।  

 


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের ডিপিডিসি অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো কামাল হাসানের সাথে মুঠোফোনে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোনকলটি রিসিভ করেননি।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি