শনিবার   ১১ মে ২০২৪   বৈশাখ ২৭ ১৪৩১

বাবুর লাঞ্ছনার ক্ষোভে কালামের পাশে বিরু

এম মাহমুদ

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২৪  

 

রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছু নেই। কেননা রাজনীতির স্রোতের প্রতিকূল মুহুর্তকে কাটিয়ে অনুকূলে আসতে ব্যর্থ হলে রাজনীতি হয় অর্থহীন। যার কারণে সময়ের বির্বতনে শত্রুকেও করতে হয় আলিঙ্গন।

 

ঠিক এমনটিই ফুঁটে উঠে সোনারগাঁয়ের আলোচিত দুই নেতা মাহফুজুর রহমান কালাম এবং ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর মধ্যকার রাজনৈতিক পূর্বের ইতিহাসের সাথে বর্তমান পর্যালোচনা করলে।

 

কারণ এক সময়ে তারা একে অপরের প্রতিপক্ষ হলেও সময়ের বিবর্তনে তাদের মধ্যকার রাজনৈতিক বন্ধনের দৃশ্যপট বদলে গেছে। তবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টের পিছনে একটি বিতর্কিত ঘটনাই ছিল যথেষ্ট।

 

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ড. আবু জাফর চৌধুরী বিরুকে লাঞ্ছিত করেন আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী বাবুল ওমর বাবু। আর সেই রেশ ধরেই দাবার গুটির শেষ চালের মত সেই বিতর্কিত ঘটনার মহানায়ক চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী বাবুকে দূরুত্বে পাঠিয়ে উপজেলা নির্বাচনে হেভিওয়েট চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী কালামকে জনসম্মুখে সমর্থন করে আলিঙ্গন করে নেন ড.বিরু।

 

সূত্র বলছে, গতবছরের ১ নভেম্বর সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুকে মারধরের উদ্দেশ্যে তেড়ে গিয়ে ভাজে ভাষায় গালামন্দ করে লাঞ্ছিত করেন সোনারগাঁ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল ওমর বাবু।

 

তাকে লাঞ্ছিত করে গণমাধ্যমে সে সময় বাবু বলেছিলেন, বিরু যদি বলে আমি তার সাথে হাতাহাতি করেছি তাহলে করেছি। কিন্তু সেসময় অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, মাসখানেক আগে বাবুর মেয়ে যেদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ওইদিন রাত ৩টার দিকে বাবু তাকে কল দিয়েছিল তার মেয়ের চিকিৎসার পরামর্শের জন্য।

 

তিনি একাধিকবার আমাকে ফোন দিলেও সজাগ না থাকায় আমি ফোনটি রিসিভ করতে পারিনি। পরবর্তীতে তার মেয়ে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা গেলে আমার উপর তার এক রকম ক্ষোভ ছিল। পাশাপাশি তার ভাই সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।

 

কয়েকমাস আগে সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও এখনো এর কমিটি ঘোষণা হয়নি। বাবুর ধারণা আমার কারণে এই কমিটি গঠন হয়নি। আমি হয়তো বাধা প্রদান করে কমিটি গঠন আটকে দিয়েছি। এই দুই বিষয় নিয়ে সে কয়েকদিন ধরে আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিল।

 

কিন্তু এতোদিন মুখোমুখি না হওয়ায় তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারছিলেন না। আজ আমাকে পেয়ে এই ক্ষোভ থেকেই আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেন। তবে এ ঘটনায় আমি কোনো দুঃখ পাইনি। কারণ আমরা দুজনই একই দলের কর্মী। একই দলের কর্মীর সঙ্গে কোনো রাগ রাখা যায় না। ভুল বুঝাবুঝি থেকে তিনি হয়তো আমার সঙ্গে এই আচরণ করেছেন।

 

তিনি আরো বলেন, একটি পক্ষ জোট সরকারের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে আতাত করে আওয়ামীলীগের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করছেন।

 

বাবুল ওমর বাবু ও তার ভাই কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার মোশারফ ওমর গত দশ বছর জাতীয় পার্টির সাংসদের সাথে আতাত করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার পায়তারা করছে। এটা কোনভাবেই করতে দেওয়া হবে না।

 

আর সেই ড. বিরুর চাপা ক্ষোভ পুষে রেখে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাবুর ওমর বাবু চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী হলে ঝোপ বুঝে কোপ মেরে দিয়ে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামকে জামপুরের জনসম্মুখে সমর্থন করে কালামের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে তাকে জয়যুক্ত করার ঘোষণা দেন।

 

এ সময় কালামও বাবুর সেই বিতর্কিত ঘটনা টেনে বলেন, মানুষের সাথে অসভ্য আচরণ করলে মানুষও তার জবাব দিতে জানে। কাঁচপুরে বিরু সাহেবের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে আমি জামপুরবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাতে চাই এই সমস্ত জামপুরবাসীকে সে অপমান করা হয়েছে এই অপমানের জবাব দিতে হবে।

 

তিরি আরও বলেন, এই নির্বাচনে তারা যদি আসে তাদেরকে লাল কার্ড দেখিয়ে নির্বাচনের মাঠ থেকে বহিষ্কার করা উচিত জামপুরবাসীর। এস.এ/জেসি 

এই বিভাগের আরো খবর