সোমবার   ০৬ মে ২০২৪   বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

আবহাওয়ার বিপজ্জনক দেশান্তরি

ইউসুফ আলী এটম

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২৪  


সৌদি আরব, দুবাই তথা মধ্যপ্রাচ্যের আবহাওয়া মাইগ্রেইট (দেশান্তরি) হয়ে বাংলাদেশে আসন গেড়েছে বলে মনে হয়। এ কারণেই বোধ হয়, বাংলাদেশে এখন প্রচন্ড গরম আর অবিরাম বর্ষণে সৌদি আরব ও দুবাইয়ে অকাল বন্যা দেখা দিয়েছে! বৃষ্টির পানিতে সে দেশের সড়কে নদীর মতো স্রোত বয়ে যাচ্ছে। এবং সেই স্রোতের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে যাবতীয় যানবাহন।

 

 

টিভিতে এই দৃশ্য দেখে বিশ্বাসই হয় না, আমরা বাংলাদেশে আছি আর ওরা মধ্যপ্রাচ্যের বাসিন্দা। আবহাওয়ার এরকম উল্টা-পাল্টা আচরণ নতুন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে কি!

 


বলা চলে, ঈদুল ফিতরের পর পরই বৈরী আবহাওয়া গিলে খাচ্ছে গোটা দেশ। এর রেশ আছড়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জেও। প্রচন্ড তাপদাহের শিকার হয়ে হাঁস-ফাঁস করছেন নারায়ণগঞ্জের আবালবৃদ্ধবনিতা। ঘর থেকে বের হলেই তীরের বেগে চোখেমুখে গরম হাওয়ার ঝাপটা এসে লাগছে। মাথায় ধরে রাখা ছাতাকে থোড়াই কেয়ার করছে ঠাটা রোদ।

 

 

বাতাস নেই তাই গাছের পাতাও নড়তে দেখা যায় না। অতি জরুরি কাজ ছাড়া কেউ সহজে ঘর থেকে বেরও হতে চান না। আর বের হলেও খুব দ্রুত ঘরে ফেরার তাগিদ থাকছে। ঘরেও তো শান্তি নেই। না বসা যায়, না শোয়া যায়। সবার ঘরেই কি এসি আছে, না থাকে!

 


দেশজুড়ে হিট অ্যাটাকের আতংক। ইতোমধ্যেই হিট অ্যাটকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়াবিদদের কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন সুখবর পাওয়া যায়নি। এপ্রিল মাস ভয়ংকর হয়ে ওঠছে বাংলাদেশে। গোটা এপ্রিল তাপদাহের শিকার হয়েই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানী ঢাকার অতি সন্নিকটে হওয়ায় নারায়ণগঞ্জের বাতাসেও ৫ ধরণের ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসারিত হচ্ছে।

 

 

গাছপালা কেটে ফেলায় সবুজ কমে গিয়ে আবহাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ইটভাটা, কলকারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া পরিবেশের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। মানুষ বাড়ছে। মানুষের নিঃশ্বাস থেকে যে কার্বনডাইঅক্সাইড বের হচ্ছে তা শুষে নিতে যে পরিমাণ গাছপালার প্রয়োজন তা নেই। ফলে বাতাসে দিন দিন অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে মানব জীবন বিপদজনক মরণফাঁদের মুখোমুখি দাঁড়াতে বাধ্য।

 


সময় ক্ষেপন না করে সংশ্লিষ্ট সকল মহলকেই এ দিকে নজর দিতে হবে। পরিবেশ দূষণরোধে কঠোর আইন প্রনয়ণ করে তা বাস্তবায়নেও কঠোর হতে হবে। পতিত জমিতে গাছ লাগনো বাধ্যতামূলক করা এই মুহূর্তের দাবি। সড়কের ধারে সরকারি উদ্যোগে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি