সোমবার   ০৬ মে ২০২৪   বৈশাখ ২২ ১৪৩১

কালাম-বাবুতে জমজমাট লড়াই

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২৪  


আগামী ২১ মে নারায়ণগঞ্জের ৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এই তিন উপজেলার প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের নামও ঘোষনা করেছে জেলা নির্বাচন অফিসার। এর মাঝে সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ, আড়াই হাজার উপজেলার মনোনয়ন দাখিলকৃত প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচ্ইা বাছাই করা হয়।

 

 

তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করেছে জেলা নির্বাচন অফিসার মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ।

 


গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণ জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এই জেলা নির্বাচন অফিসার মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ মনোনয়ন যাচাই বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

 


এদিকে নির্বাচন কমিশন সুত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে আগামী ৩০ এপ্রিল প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময়।

 

 

তার আগ পর্যন্ত যদি কোন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করে তাহলে শেষ অব্দি পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসার জন্য চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করবেন। দলীয় সুত্রমতে, এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা  সকলেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। আর এতে করে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ।

 


জানাযায়, সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রতিযোগি হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, যুবলীগ নেতা আলী হায়দারের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করা হয়। তাদের মাঝে আলী হায়দার তেমন ভাবে নির্বাচনের মাঠে না থাকলেও অন্যপ্রার্থীরা পুরোদমে মাঠে নেমে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

 

কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক বোদ্ধমহল বলছে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে মুল লড়াই হবে চেয়ারম্যান পদে। আর এই পদে চার মাঝে প্রার্থী থাকলেও মুল লড়াই হবে মাহফুজুর রহমান কালাম এবং বাবুল ওমর বাবুর মাঝে। কেননা এই দুই নেতার মাঝে বাবুল ওমর বর্তমানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। তবে তিনি এবার চেয়াম্যান পদে লড়াই নেমেছেন।

 

 

বিপরীতে আওয়ামী লীগের তৃনমূল থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক নেতা মাহফুজুর রহমান কালাম হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে মাঠে আলোচনায় রয়েছেন। এমনকি নির্বাচনের আগে থেকে তিনি গণসংযোগ করে মাঠ গুছিয়ে রেখেছেন। যা এখনো পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছেন। স্থানীয়রা বলছে কালামের প্রধান প্রতিদ্বন্দি বাবুল ওমর বাবু ভোটারদের আস্থা অর্জনের চেয়ে টাকার গরমে জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

 

যদিও নির্বাচনের ভোটারদের মাঝে অর্থের লেনদেনর কোন বৈধতা নেই। আবার কেউ কেউ বলছে তিনি টাকা দিয়ে ভিতরে ভিতরে বিএনপি নেতাদের তার বলয়ে নিতে চাচ্ছে। যাতে করে বিএনপির ভোটাররা তাকে ভোট দেন।

 

 

কিন্তু জাতীয় নির্বাচন ভোট বজর্ন করে মানুষদের ভোট দেয়া থেকে বিরত রেখেছে সেই বিএনপি নেতারা কি উপজেলা নির্বাচনের তাদের কর্মী সমর্থকদের উপেজলা নির্বাচনে ভোট দিতে বলবে। তাছাড়া তারা উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করেছে। এই ক্ষেত্রে কালামের প্রধান প্রতিদ্বন্দির মিশণ ব্যর্থ হবে বলে মনে করেন সোনারগাঁয়ের মানুষজন।

 


অপরদিকে সোনারগাঁ উপেজলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম নির্বাচনী উঠান বৈঠক করে ভোটারদের মাঝে গিয়ে ভোট চেয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন। এছাড়া এই উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার জানান দিয়ে মাঠে নির্বাচনী উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন। দলী নেতা কর্মীদের মতে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে এই দুই প্রার্থী উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

 

 

এমনকি সরাসরি নাম প্রকাশ না করে  একে অপরকে ইশারা ইঙ্গিত নানা ভোটারদের কাছে নানা বিরুপ মন্তব্য করছেন। এই নির্বাচনে এখানে তাদের মাঝে মূল লড়াই হতে যাচ্ছে। আর এজন্য একজন আরেকজনকে ছাড় দিচ্ছে না।

 


জানাযায়, কয়েক দিন আগে সোনারাগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহফজুর রহমান কালাম তার বক্তব্যে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি কোন চাদাঁবাজি, ধান্দাবাজির টাকা দিয়ে রাজনীতি করি না। আমি নিজের কামানো টাকা দিয়ে রাজনীতি করে আসছি। সোনারগাঁয়ে শত শত মিল ইন্ডাসিট্র আছে কেউ আমাকে বলতে পারবে না আমি তাদের কাছে যাই।

 

 

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হয়েও গত ৫ বছরে মানুষের কাছে আসে নাই এমন লোকও আছে। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান হয়ে চেয়ারে বসে যা লুটার তা লুটপাট করেছে। চান্দাবাজি ধান্দাবাজি থেকে শুরু করে কোন কিছু বাকি রাখে নাই। ভাইস চেয়ারম্যান হয়ে চাদাঁ নেয় ১০০ টাকাম, আর চেয়ারম্যান হলে তা বাড়িয়ে চাদাঁ নিবে ২০০ টাকা। কেননা চেয়ারম্যানি পদ ভাইস চেয়ারম্যানের চেয়ে বড়।

 

 

তখন চাদাঁর পরিমানও বেড়ে যাবে। তবে তিনি নাম প্রকাশ না করলেও কাকে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করেছেন তা কারো বুঝতে বাকি নেই।কালামকে উদ্দেশ্য করে বাবুল ওমর বাবু বলেন, এত বড় জনসভা দেখে হয়তো সে পাগলও হয়ে যেতে পারে। দেখবেন সে কালকে বা আজকে রাতেই গাড়ি নিয়ে চলে এসে পড়ছে। তিনি এ-ই দিয়ে দিবে, সে-ই দিয়ে দিবে।

 

 

বাবা তুমি ৩৮ বছর রাজনীতি করে কি দিছো। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান কালাম বাবুতে মুল লড়াই হবে। ইতোমধ্যে তাদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 


উল্লেখ্য সোনারগাঁ উপজেলার নির্বাচনের ভোট গ্রহন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ এপ্রিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১ মে প্রতীক বরাদ্দ হবে।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর