শনিবার   ০৪ মে ২০২৪   বৈশাখ ২০ ১৪৩১

মাকসুদকে জয়ী করতে বিএনপি নেতাদের উপর হিরণের চাপ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২৪  

 

আসন্ন বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েকটি দিন এর মাঝেই ঘটে গেছে বিভিন্ন আলোচিত সমালোচিত ঘটনা। এদিকে বিরোধী দল বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও এই দলে থাকা কিছু নেতাকর্মী সেই সিদ্ধান্তকে অবাধ্য করে মোটা অংকের অর্থের লেনদেনে জাতীয় পার্টির নেতা মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসকুদ হোসেনকে ভোট দিয়ে জয়ী করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফোন দিয়ে দিয়ে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের বিরুদ্ধে। এই নির্বাচনে অর্থ আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন ইউনিয়নের দায়িত্বরত নেতারাও।

 

অভিযোগ রয়েছে, মাজহারুল ইসলাম হিরনের সহযোগীতায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের কাছ থেকে ৫টি ইউনিয়নের ইফতার পার্টির কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছিলেন আড়াইলক্ষ টাকা। কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের হাতে তুলে দেন ১ লক্ষ টাকা। আর ২৫ হাজার করে ৫টি ইউনিয়নে বাটোয়ারা করেছেন আর বাকি ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিজের পকেট বন্দি করে ছিলেন হিরণ। পরবর্তীতে প্রকাশ্যে না থেকে আর কিছু আত্মীয় স্বজনদের পাঠিয়ে দিয়েছে মাকসুদ চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ করার লক্ষে।

 

তা ছাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদের নির্বাচনী প্রচারনার বিভিন্ন স্থানে কিছু বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিত রেখে ক্যাম্প উদ্ভোধন করতে ও দেখা গেছে। এদিকে সভাপতি হিরণ বন্দর উপজেলায় আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের আগে থেকেই বলে রেখেছেন, প্রকাশ্যে কিছু করার দরকার নাই, গোপনে গোপনে শুধু নির্বাচনের দিন ভোট দিয়ে আসলেই চলবে। আর বর্তমানে যেহেতু আমাদের দল ক্ষমতায় নেই মাকসুদ ভাই বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান হলে আমাদের সুবিধা এমন আশ্বাস পূর্ব থেকেই তার বলয়ের নেতাকর্মীদের দিয়ে আসছেন হিরণ।

 

পরে আড়াইলাখের ঘটনায় শহরে প্রকাশ্যে আসলে তিনি পুরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। উনি পরবর্তীতে প্রকাশ্যেই রাতের আধাঁরে তারাবি নামাজের পর মাকসুদের কাছ থেকে দুই দফায় ৮ লাখ পরর্তীতে আরো কয়েক দফায় বিএনপির ভোট ব্যাংক বিক্রির নামে টাকা এনেছেন আর সেগুলো কিছু অসাধু নেতাদের সাথে বন্টন করে ভাগ বাটোয়ারা করেছেন বলে জানা গেছে। তার এই টাকার ঘটনাও বন্দরের সকলের মুখে মুখে চলে আসলে ২৬ রমজান থেকে পা ভাঙ্গার দোহাই দিয়ে আত্মগোপনে আছেন এই হিরণ।

 

অপর দিকে বন্দর উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও এই হিরণ উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আটকে রেখেছেন। আর বর্তমানে ফোন করে বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের বলছেন মাকসুদের পক্ষেই থাকতে। সে সময় বিভিন্ন নেতাকর্মী বলে উঠে যে আমরা কোন টাকা পাই নাই। তখন তাদের হুমকিসহ চাপ প্রয়োগ করে আবার আশ্বাস দিয়ে বলেন, সমস্যা নাই সামনের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তোমাকে ভালো একটি স্থানে রাখা হবে। হিরণের এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ বিএনপি আর ধ্বংস হচ্ছে বন্দর উপজেলা বিএনপির রাজনীতি।

 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির একজন নেতা বলেন, আমাদের বন্দর উপজেলার সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ সাহেবকে কেউ কখনো বলবে না। উনি বিএনপি করেন, কারণ বিএনপির নেতাকর্মীদের থেকে তার বেশি সখ্যতা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে। তা ছাড়াও যেহেতু উনি জায়গার ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন সে ক্ষেত্রে উনার তাদের সাথেই বেশি লবিংয়ে থাকতে হয়। বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কোন সময় দিতে পারে না উনি।

 

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে উনি চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ সাহেবকে আশ্বাস দিয়েছেন বিএনপির সকল ভোট উনি উনাকেই নিয়ে দিবেন। সেই বলে কয়েক দফায় মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বর্তমানে তোপের মুখে পরেছেন। উনি গতকাল ‘আমাকে ফোন দিয়ে বলেন তুমি কিন্তু উল্টাপাল্টা কিছু কইরো না, ভোট কিন্তু মাসকুদ ভাইকেই দেওয়া লাগবো’ এটা ফাইনাল বইলা দিলাম।

 

এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে এটা সম্পূর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট।’ এস.এ/জেসি  

এই বিভাগের আরো খবর