মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪   বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

বন্দরে খেলারামদের খেলা শুরু

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২৪  

 

নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে আগামী ৮ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই দিন ভোটাররা তাদের ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন। তাই ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থী মার্কা পেয়ে মাঠে প্রচার প্রচারনা ব্যস্ত সময় পার করলেও কয়েকজন প্রার্থী আতঙ্কে সময় পার করছেন।

 

আবার কেউ কেউ বলছে বন্দর উপেজলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। তাছাড়া তার স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেছেন। যেই মামলায় তিনি ইতোমধ্যে জামিন নিয়েছেন আদালত থেকে। অপরদিকে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। তবে রাজনৈতিক বোদ্ধমহল বলছে তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য পিছন থেকে খেলা রামরা খেলছে।

 

এদিকে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলায় চার জন প্রার্থী থাকলেও তিনজন মাঠে লড়াইয়ে তিনজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। তার মাঝে বন্দর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ চেয়ার ধরে রাখার জন্য আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তাছাড়া তার উপর নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের আশীর্বাদ রয়েছে। এছাড়া রশিদের পক্ষে এই পরিবারের সমর্থন রয়েছে। তাছাড়া এখানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে তিনিই প্রার্থী হয়েছেন। এজন্য তার পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মাঠে নেমে কাজ করছে।

 

অপরদিকে আওয়ামী লীগের সমর্থিত এই প্রার্থীকে ঠেকানোর জন্য এবার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাকে বন্দরে এক নামে রাজাকার পুত্র নামে চিনেন সকলে। এমনকি তার স্ত্রী তাকে গ্রেপ্তারের জন্য মামলা দিয়েছে। যখনি প্রতীক পাওয়ার পর তিনি নির্বাচনের মাঠে প্রচারনায় পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করবেন ঠিক তখনি চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদের নামে মামলা দেন তার স্ত্রী।

 

তবে তার সমর্থকরা বলছে এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এখানে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল চেয়ারম্যান পদের লড়াইয়ে নেমেছেন। তাছাড়া তিনি এর আগেও ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এই উপজেলায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। যদিও বিএনপি উপজেলা নির্বাচনকে বর্জন করেছে। তাছাড়া মুকুলকে বহিষ্কার করায় নির্বাচনে তার তেমন কোন বাধা নেই।

 

তবে বন্দরের বিএনপি নেতারা যেন তার পক্ষে কোন ধরনের কাজ না করেন সেই আহ্বান জানানো হয় বিএনপি নেতা কর্মীদের। তবে মুকুলকে দমানোর জন্য তার নামে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান একাধিক বিশ্বস্ত সুত্র। বন্দর উপজেলার তিন হেভিওয়েট প্রার্থীই নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সাংসদ সেলিম ওসমান এবং সাংসদ শামীম ওসমানের অনুসারী। এমনকি তারা বিভিন্ন সভায় বলে বেড়ান তারা ওসমান পরিবারের রাজনীতি করেন। অন্য কাউকে চিনেন না।

 

জানা যায়, বন্দর উপজেলার তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী তিন দলের রাজনীতিবিদ। রাজাকারপুত্র হিসেবে পরিচিত মাকসুদ হোসেন জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী এম এ রশিদ রয়েছেন। এক সময়েরে হেভিওয়েট নেতা বর্তমানে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আতাউর রহমান মুকুল জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজনীতি করতেন। এজন্য তারা তিনজনই বন্দরে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনিজনই এক পরিবারের ছায়ায় থাকেন।

 

তাদের আশীর্বাদ নিয়েই তারা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। কিন্তু এখন প্রভাবশালী পরিবারও তাদের নিয়ে চিন্তিত তারা কাকে সমর্থন দিবেন। যদিও সাংসদ সেলিম ওসমান আতাউর রহমান মুকুল এবং রাজাকার পুত্র মাকসুদকে নির্বাচন না করার পরামর্শ দেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা। তারা নির্বাচন করবোই। সেই অনুযায়ী তারা প্রতীক নিয়ে যখন পুরোদমে মাঠে প্রচারণা থাকার কথা ঠিক তখনি তারা এখন আতঙ্কে সময় পার করছেন।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে ইতোমধ্যে বন্দরের দুই প্রার্থীকে কাবু করার জন্য পিছন থেকে খেলা রামদের খেলা শুরু হয়ে গেছে। আর এই খেলার পিছন থেকে কারা কলকাঠি নাড়ছে তা কারো বুঝতে বাকি নেই। প্রতীক হওয়ার পর তারা বসে পরলেও কোন কাজ হবে না। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে কি হয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে বন্দর উপজেলার ভোটাররা। এই খেলা শেষতক কি পর্যন্ত পৌঁছায় তা নিয়ে এখন সর্বত্র জল্পনা কল্পনা চলছে। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর