রোববার   ০৫ মে ২০২৪   বৈশাখ ২২ ১৪৩১

তাহলে এই নাটকের মানে কী?

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪  

 

কথায় বলে, ‘সারারাত রামায়ন জপে সকালে বলে সীতা কার বাপ? বন্দর উপজেলা নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ানের হয়েছে ঘোড়া রোগ। কেননা, নির্বাচন আসলেই আবু সুফিয়ান হাঁকডাক ছেড়ে নানা নাটকের আবহ তৈরি করেন পরে নিজেই পর্দার আড়ালে চলে যান। তার এই নাটকের পেছনে কী কারণ তা কেউই বুঝতে পারেন না। শহরবাসী এখন এক বাক্যে আবু সুফিয়ানের রাজনৈতিক দৈন্যদশা ও ইতির চিত্র দেখছেন।

 

তারা বলছেন, আবু সুফিয়ান আইভী বলয় থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এখন শুন্য অবস্থানে আছেন। সামনে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হলেও যে তিনি কোন পদ পাবেন তারও সম্ভাবনা নেই। 

 

সূত্র জানিয়েছে, নানা দিবস আর নির্বাচন আসলেই আবু সুফিয়ান নাটক শুরু করেন। কথায়, দাম্ভিকতা আর বেশভুষায় এতোই বড়াই করেন যে, তিনি অত্যন্ত ক্ষমতাশীল ব্যক্তি। বিশেষ করে ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে সুফিয়ান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচন করার জন্য ঢাকঢোল পেটান। পরে সেখান থেকে সরে আসেন। পরে আবার উপজেলা নির্বাচনের আগে লম্ফঝম্ফ করলেও সেখান থেকে পিছটান দেন।

 

এরপর সর্বশেষ সিটি নির্বাচনের আগে থেকেই নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বলয় থেকে অর্ধচন্দ্র খেয়ে রাজনৈতিক কোমায় চলে যান। পরে বিভিন্ন দিবসের আগে কিঞ্চিৎ জ্ঞান ফিরলেও তা উলোবনে মুক্তো ছড়ানোর মতো ছিল। যখনই জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি দেয়ার কথা আসে তখন আবু সুফিয়ান সরব হন। কোথাও পাত্তা না পেয়ে আবার হন নীরব। 

 

এবারের উপজেলা নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর কোথাও ‘টু’ শব্দও ছিল না আবু সুফিয়ানের। কিন্তু হঠাৎ করেই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন আবু সুফিয়ান। বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের কাছে নিজেই ঢোল পেটান এবার তাকে থামানো যাবে না। তিনি বন্দর কাঁপাবেন। তবে সবাই তখন বলেছিলো, আবু সুফিয়ানের এটা পুরনো নাটক। কথায় বলে, সেই তো নথ খসালি তবে কেন লোক হাসালি। আবু সুফিয়ান এবার বন্দর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে একই রকম ঘটনা ঘটিয়েছেন।

 

গত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক ছিল, তখন না হয় বাধার কোন কারণ দেখাতে পেরেছেন। এবার যখন আওয়ামী লীগ নিজেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে প্রার্থীদের অংশগ্রহণ করতে বলেছেন, তখন আবু সুফিয়ানের আরেক প্রার্থী এমএ রশিদকে সমর্থন করার বিষয়টি হাস্যকর বলছেন স্থানীয়রা। শহর-বন্দরবাসী আবু সুফিয়ানের এসব ভেলকিবাজি ধরে ফেলেছেন। আবু সুফিয়ান যে বিরাট শুন্য আর তার রাজনীতি যে একটা ঠুনকো কাগজের ঠোঙা তা এবার পরিষ্কার হয়েছে খুব সহজে।

 

সূত্র জানিয়েছে, আবু সুফিয়ানের একদিকে যেমন আইভী বলয়ে কদর নেই, পাত্তা নেই শামীম ওসমান শিবিরেও। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারাও আবু সুফিয়ানকে তেমন আমলে নেন না। কথা দিয়ে কথা না রাখার কুখ্যাতি রয়েছে সুফিয়ানের। তাই সর্বমহলে বিশ্বাসযোগ্যতাও হারিয়েছেন তিনি। এক সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দাপটশালী প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার থাকলেও এখন সিটি কর্পোরেশনের সর্বনিম্ন স্তরের ঠিকাদারদের কাছে পাত্তা পান না আবু সুফিয়ান।

 

অনেকে বলছেন, নয়-ছয়, নাটক, অযথা মিথ্যাচার আর কথা দিয়ে কথা না রাখা, কথার বরখেলাপ করা আর অতি চাতুরতার কারণেই আবু সুফিয়ানের এই দৈন্যদশা। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি নিজেকে হাসির খোরাকে পরিণত করেছেন। আবু সুফিয়ানের সেধে সেধে এমএ রশিদকে সমর্থন যেন কবি হেলাল হাফিজের কবিতার মতো, ‘কেউ ডাকেনি তবুও এলাম, বলতে এলাম ভালবাসি।’ হেলাল হাফিজের কবিতা সুন্দর, তবে সুুফিয়ানের বুকে হাহাকার, শুন্যতা আর অপ্রাপ্তি। পুরো দৃশ্যটাই শুধু নাটকে ভরপুর। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর