শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

আনোয়ার মাস্টারের বইবাণিজ্য

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৪  


# নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলে যুগের চিন্তা পত্রিকা নিষিদ্ধ! 

 

গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দৈনিক যুগের চিন্তা’র প্রথম পৃষ্ঠায় ‘ট্যাক্স ফাঁকির গ্যাড়াকলে আনোয়ার মাস্টার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি স্কুলপাড়ায় টক অব দ্যা স্কুলে পরিণত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে আনোয়ার মাস্টারের কিছু নেতিবাচক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়েছিলো। এ কারণে গতকাল নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের লাইব্রেরিতে ‘যুগের চিন্তা’ পত্রিকা ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন একজন অভিভাবক।

 

তবে স্কুলের গেটে অবস্থানরত অনেক অভিভাবকের হাতেই ‘যুগের চিন্তা’ শোভা পেতে দেখা গেছে। অনেকে আবার রাস্তার পাশে দেয়ালে সাঁটানো যুগের চিন্তা’র পাতায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। এ সংবাদ এক কান, দু’কান হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কানেও পৌঁছে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি স্কুলের লাইব্রেরীতে যাতে যুগের চিন্তা পত্রিকাটি প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে প্রকাশ।      

 

নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বইবাণিজ্য করেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি মোট ৭টি বই প্রকাশ করেছেন। প্রথম বইটি প্রকাশ করার পর প্রতি কপি একশ’ টাকা করে স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রায় সবাইকেই কিনতে বাধ্য করেন। এরপর দ্বিতীয় বই প্রকাশ করে তা বিক্রির জন্য নতুর ফন্দি আঁটেন।

 

তিনি এই বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলেন যে, এই বই বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি একটি শর্ট ফিল্ম বানাবেন। তার এই ঘোষণায় উৎসাহী হয়ে প্রায় সবাই বইটি কিনে নেন। কিন্তু পরে জানা গেছে, নির্মিত শর্ট ফিল্মের পুরো আড়াই লাখ টাকাই তিনি স্কুলের ফান্ড থেকে ব্যয় করেছেন। এভাবে প্রতি বছরই তিনি একটা করে বই প্রকাশ করেছেন এবং তা কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেছেন। তার বইয়ের বিষয়বস্তু শিশুদের উপযোগী না হলেও প্রায় জোর করেই তাদেরকে এই বই কিনকে বাধ্য করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

বই বিক্রির কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন মাধ্যমিক শাখার বাংলা বিষয়ের এক শিক্ষক। অবিক্রিত বইগুলো এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে বিতরণ করলেও পরবর্তীতে বিল করে বইয়ের মূল্যবাবদ সমুদয় টাকা স্কুলের ফান্ড থেকে উঠিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। 

 

আনোয়ার মাস্টারের বইবাণিজ্যের কাহিনী এখানেই শেষ হলে ভালো হতো। কিন্তু তা হয়নি। তাকে টাকার নেশায় পেয়ে বসে। তিনি বইবাণিজ্যের নতুন আইডিয়া নিয়ে ঢাকার একজন বই বিক্রেতার সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মোটা অংকের কমিশনের চুক্তিতে তাকে আইডিয়াল স্কুলে বই বিক্রির টেন্ডার দিয়ে দেন।

 

এর ফলে প্রথম শ্রেণির শিশুদেরকেও বাংলাদেশের মানচিত্র বই বাধ্যতামূলকভাবে কিনতে হচ্ছে। প্রতিটি ক্লাসেই এরকম অপ্রয়োজনীয় অনেক বাড়তি বই বুকলিস্টে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যা সারা বছরে একদিনও পড়ানো হয় না। আর এভাবেই নানা কৌশলে আনোয়ার মাস্টার তার নিজস্ব ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্কুলটাকে চুষে চুষে খাচ্ছেন। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর