শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

গান করার জন্য সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে তবুও গান ছাড়িনি: কন্ঠশিল্পী ময়না

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪  


গানকে এতটাই ভালোবাসি যে গান করতে গিয়ে আপন ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। তবুও আমি গান ছাড়িনি কারণ গান আমার অন্তরে বাস করে। গানই আমার জীবন-মরণ গানই আমার প্রাণ। এই কথাগুলো বলছিলেন পালা ও বাউল গানের তরুণ শিল্পী ময়না সরকার আঁখি (পরদেশী ময়না)। তরুণ এই শিল্পী'র সঙ্গে একটি সামাজিক প্রোগ্রামে দেখা হলে কথায় কথায় একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ-সব কথা বলেন।

 


তরুণ এই শিল্পী'কে প্রশ্ন করা হয় গানের জগতে আসতে আপনারা কি কি বাঁধা পাড় হতে হয়েছে?  জবাবে পরদেশী ময়না বলেন, বাঁধা সৃষ্টি বলতে প্রথমত আমার আপন তিন ভাই তারা চায়নি আমি গান করি। তখন আমি অনেক ছোটো, আমি তিন ভাইয়ের এক বোন। তাদের সাথে আমার এই গানের কারণে সম্পর্কটা বিচ্ছিন্ন।

 

 

আমাকে যে/যারা লালন-পালন করছে ছোট থেকে আমার মা মারা যাওয়ার পর মানে আমার মা আমাকে যাদের হাতে তুলে দিয়ে গেছে আমার সেই বাবা-মার সাথেই আমি আছি বর্তমানে। তিনি গীতিকার নিজাম সরকার যাকে আমি পিতা বলি, তবে জন্মদাতা পিতা না কিন্তু তার চাইতে বেশি তার কাছ থেকেই গান শেখা, হারমুনিয়া, বেহালা যা কিছু আছে তার কাছ থেকেই শিখতে শিখতে এ পর্যন্ত আসছি।

 

 

আমার পিতা সমতুল্য গীতিকার নিজাম সরকার ওস্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশেসহ বহির্বেশে যার নাম আকলিমা বেগম। যাকে বাউল জগতে সবাই বাউল মাতা নামে চিনে এবং সে অনেক পুরোনো শিল্পি এবং বর্তমানে সে আমাদের বাউল শিল্পিদের কাছে সে মায়ের সমতুল্য পায় তার কাছেও আমি দারস্থ হয়ে গান শিখেছি। এভাবেই গানের জন্য আমার সাথে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে আমার পরিবার থেকে অনেক বাঁধা দেওয়ার পরেও তাদের কথা আমি শুনি নাই।

 

 

আমার মায়ের ইচ্ছা ছিলো আমি যেনো শিল্পি হই তার ইচ্ছা পূরণ করার জন্যই আমার এই বাবার কাছে থাকি গান-টান শিখি এ পর্যন্তই চলতেছে।  গান করতে গিয়ে কেমন সংগ্রাম করতে হয়েছে প্রশ্ন করলে শিল্পী বলেন, বাংলাদেশের ৬৪টা জেলার মধ্যে আমার ২-৩বার রাউন্ড দেওয়া হয়েগেছে। যেমন অনেক সময় আমরা ১৫-২০ দিনের জন্য বাবার সাথে ট্যূরে চলে যেতাম।

 

 

এটা ট্যুর বলতে যেমন সরকারি বিভিন্ন প্রোগ্রাম যক্ষা, কাশি, বাল্য বিয়ে ও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে গানের মাধ্যমে সমাজে বার্তা দেওয়ার জন্য কাজ করতাম। এভাবে আমার টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত অনেকবার রাউন্ড দেওয়া হয়ে গেছে।বাংলাদেশে আমার মোটামোটি ঘোরা শেষ এই গান করতে করতে।  কি কি গান করেন প্রশ্নের জবাবে পরদেশী ময়না বলেন, অনেক পোগ্রামে অনেক বড় বড় শিল্পিদের সাথে আমি পালাগান করছি।

 

 

বিভিন্ন চ্যানেলে গান করা হইছে এবং শিল্পকলা একাডেমিতে বিভিন্ন সরকারি পোগ্রামেও আমি গান করছি। বাংলাদেশ বেতার, বি টিভি, মাই টিভি, মাছ রাঙা, নিউজ টুয়েন্টি ফোর, চ্যানেল ওয়ান ও চ্যানেল আই সহ বিভিন্ন চ্যানেলে আমার গান করা হয়েছে। তাছাড়া জাতীয় দৈনিক পত্রিকা কালের কন্ঠ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় একাধিক বার আমার সাক্ষাৎকার নিয়ে ছবিসহ প্রচার করেছে।এভাবেই চলতেছে এখন পর্যন্ত বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা দেখি কি হয়।

 

 

বর্তমানে সোসাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে আমার অসংখ্য গান আছে। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা, ইচ্ছা আছে অনেক দূর যাওয়ার আল্লাহ যদি নিয়ে যায়। বাউল গানের কোনো সংগঠনের সাথে জরিত আছেন কিনা প্রশ্নে পরদেশী ময়না বলেন, গানের জগতে আসা হয়েছে আমার মার অনুপ্রেরণায়। আমার মা একজন শিল্পি ছিলেন।আমার নানার বংশটাই শিল্পি ছিলো।

 

 

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মার খুব ইচ্ছে ছিলো আমি যেনো শিল্পি হই।২০০৪ সাল থেকে আমার গানের জগৎ শুরু হয়। তার পর থেকে এই গানের জগৎ বাউল জগতে ঘুরে ফিরে গান করতে-করতে একটা পর্যায়ে যখন পালা গান শুরু করলাম তখন চানখারপুল বাংলাদেশ বাউল সমীতির প্রধান কার্যালয়ে আসা যাওয়া ছিলো। ২০১০ সালে থেকে আমি সেখানে সদস্য হিসেবে তালিকা ভুক্ত হই। এখন পর্যন্ত সেখানেই আছি।   এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর