শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

মাদক ব্যবসাতেই কোটিপতি দাউদ সোহেল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪  

 

# খুচরা মাদক সরবরাহক গোলাম রাব্বী ওরফে কাল্লু, জসিম, সাব্বির, সাগর
# ১৫-২০ জনের ঘর ভাড়া দেয় সে! না’গঞ্জ পুলিশ সুপারের সু-দৃষ্টি কামনা

 

শুধু মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে এরই মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন ফতুল্লা শিয়াচর এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট সোহেল ওরফে দাউদ সোহেল। দক্ষিণ শিয়াচরের ইয়াদ আলী মসজিদ এলাকা থেকে পুরো রেললাইন জুড়ে শুধু তারই রাজত্ব। নিজ বলয়ের অন্তত ১৫ থেকে ২০ যুবকের দায়িত্ব কাধে নিয়ে ওই এলাকায় নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে দাউদ সোহেল। যাদের নিত্যদিনের খরচ থেকে শুরু করে ঘর ভাড়া পর্যন্ত বহন করে সে।

 

এর মধ্যে, দাউদ সোহেলের নিয়ন্ত্রিত খুচরা মাদক সরবরাহকদের মধ্যে রয়েছে, বকুলির ছেলে গোলাম রাব্বী ওরফে কাল্লু, জসিম, সাব্বির ও সাগর। আর পুরো এই বাহিনী তথাপি দাউদ সোহেলকে মাদক ও শেল্টার দিয়ে সহযোগীতা করছে ফতুল্লার চিহ্নিত ডাকাত সর্দার সাহাবুদ্দিন।

 

এতোকিছুর পরেও কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় চিন্তিত শিয়াচরের পঞ্চায়েত ও মসজিদ কমিটির লোকজন। তাদের দাবি, কোনো ভাবেই যেনো থামানো যাচ্ছে না দাউদ সোহেলকে! বরং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে জেল খাটার হুমকি পেতে হয় বলে দাবি করছেন তারা।

 

এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যানুযায়ী, ফতুল্লার শিয়াচর ইয়াদ আলী মসজিদ এলাকার ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে দাউদ সোহেল। আর দাপা মসজিদ এলাকার মৃত মহিউদ্দিনের পুত্র ডাকাত সাহাবুদ্দিন। সংঘবদ্ধ এই চক্রটি বর্তমানে ডিজিটাল সব মাধ্যম ব্যবহার করে হাজার পিস ইয়াবা ও ফেন্সিডিল বিক্রি করে চলেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো: প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর শিয়াচরে এলাকায় দাউদ সোহেলের আড্ডাখানায় পুলিশ ও ডিবির কতিপয় সদস্যের আনাগোনা হয়।

 

মূলত এ কারণেই স্থানীয় পঞ্চায়েত ও সচেতন নাগরিকদের কেউ বাধা প্রধান করলে তাদের পুলিশ-ডিবি দিয়ে হয়রানি করার দুঃসাহস দেখাতে পারে সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি।

 

নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেশ ক’জন বলেন, ফতুল্লার শিয়াচর ইয়াদ আলী মসজিদ এর আশপাশে ২৪ ঘন্টা মাদক ব্যবসা হয়। দিনের বেলায় কিছুটা আড়ালে হলেও সন্ধ্যার পর থেকে রীতিমতো প্রকাশ্যে মাদক বেচাবিক্রি করে দাউদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন ২০ থেকে ২৫ জনের একদল কিশোরগ্যাং সদস্য।

 

শিয়াচরের স্থানীয় পঞ্চায়েত ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন, অনতিবিলম্বে এ সকল বিষয়ে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ কোন ব্যবস্থা না নেয় সেক্ষেত্রে খুব শীঘ্রই চাঁনমারীর মতো রূপ ধারণ করবে শিয়াচরের ইয়াদ আলী মসজিদ এলাকা।

 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে এরই মধ্যে প্রায় কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন শিয়াচরের দাউদ সোহেল। সেখানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ সদস্যের একটি বিশাল মাদক সিন্ডিকেটকে পাইকারী ইয়াবা ও ফেন্সিডিল সরবরাহ করে সে। আর তাকে আড়াল থেকে সব ধরনের কার্যক্রমে সহয়তা করে কুখ্যাত ডাকাত সাহাবুদ্দিন।

 

মূলত, অপরাধ সাম্রাজ্যে চরম আধিপত্য বিস্তারের কারণে কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যদের সাথে তার গভীর সখ্যতা রয়েছে। আর সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে নির্বিঘ্নে মাদক কারবার পরিচালনা করার জন্যে আড়াল থেকে দাউদ সোহেলকে সব ধরণের সহযোগীতা করে চলেছে ডাকাত সাহাবুদ্দিন।

 

অপরদিকে, ফতুল্লা থানা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, ডাকাতি, ছিনতাই ও অস্ত্রসহ বহু মামলার আসামী সাহাবুদ্দিন ওরফে ডাকাত সাহাবুদ্দিন এবং সোহেল ওরফে দাউদ সোহেলের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে শিয়াচর এলাকার সাধারণ মানুষ। তাদের প্রকাশ্য মাদক ব্যবসায় কেউ বাধা প্রদান করলে তাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ ওই এলাকার মানুষের। খোদ মহল্লার মুরব্বী থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত প্রধান পর্যন্ত নতজানু হয়ে আছে দাউদ সোহেল ও ডাকাত সাহাবুদ্দিনের বর্তমান কার্যক্রমে।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতা আর কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যদের কারণে দিনকে দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে চলেছে ডাকাত সাহাবুদ্দিন ও দাউদ সোহেল বাহিনী, বলছেন সচেতন নাগরিকরা। এ নিয়ে অনতিবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর