শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় বাড়ীঘরে ভাংচুর ও লুটপাট 

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২১  

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে দ্বিন ইসলাম  ও সমর আলী হত্যার মামলার আসামীরা আবারও প্রতিপক্ষের বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনতে ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি।

 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে জজ মিয়া ও আলেকের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি  সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রায় ২০ টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। এসময় ১০জন আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আলাউদ্দিন পক্ষের মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ।



এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের গত ১৯ ফেব্রুয়ারী রাতে হাজী আলাউদ্দিনের সঙ্গে একই এলাকার ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার আধিপত্য বিস্তার ও একটি কোম্পানির বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দ্বন্ধ চলে আসছে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ২০-২৫জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার দোকানে হামলা চালায়। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে সাদেকুর রহমানের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে আলাউদ্দিন পক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আলাউদ্দিন পক্ষের সমর আলী, জাহিদুল ইসলাম, মাহিলউদ্দিন, মোশারফ, নুর নবী, নিলা, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল আলীসহ ৮ জন, সাদেক পক্ষের  খোরশেদ আলম, সাইদুল ইসলাম, আলী আহম্মেদ, জহিরুল ইসলাম,  বিপ্লব, সুমন, শাকিল, মাহফুজ, ছোট সুমনসহ ১২ জন আহত হয়।

 

এদের মধ্যে আলাউদ্দিন পক্ষের সমর আলী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর মারা যান। ঘটনায় ৪দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলী আহম্মদ ও ১৩ দিন পর সাইদুল ইসলাম গত ৫মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়াও আলাউদ্দিন পক্ষের দ্বীন ইসলামকে সাদেক পক্ষের লোকজন পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। উভয় পক্ষের লোকজন হত্যা মামলায় আসামী করা হয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত এপ্রিল মাসে জামিনে আসে উভয় পক্ষের লোকজন। জামিনে আসার পর শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা।


গতকাল রোববার সকালে ওই হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় আলাউদ্দিন পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালায় সাদেক পক্ষের লোকজন। হামলায় বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এসময় ফেরদৌস, রফিক আলী,  দেলোয়ার, ফরিদ আহম্মেদ, খাদিজা, রাজিয়া বেগম, রাবেয়া বেগম, কামরুন নাহার মুক্তাসহ ১০জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২৫জনের নাম উল্লেখ করে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ,দীর্ঘদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ চলছে। কয়েকদিন পর পর এ এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে এ গ্রামের সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। 



আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হামলা চালিয়ে আমার আত্মীয় সমর আলী ও ভাতিজা দ্বীন ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। গতকাল রোববার সকালে আমাদের লোকজনের বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর করে। এতে ১০জন আহত হয়েছে। 


এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি  হাফিজুর রহমান বলেন, নয়াগাঁও গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর