শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

স্বাধীনতার মুক্তির শপথ,বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা দেশ গড়ার প্রেরণা

মোসাম্মৎ লুৎফুন্নেসা

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৪  


বাংলার স্বাধীনতা ইতিহাস থেকে জেনেছি ও বাবা মার মুখ থেকে শুনেছি ১৯৭১ এর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কত না কষ্টের কথা। জেনেছি ৩০ লাখ বাঙালি শহীদ ও ২ লাখ মা বোনের সঙ্গম হানির কথা। বাবা ও মায়ের রক্তঝরা ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হয়েছিল বাংলার মহান স্বাধীনতা। যুদ্ধের দিনগুলোর কথা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি আমরা।

 

 

তবে যার এ স্বাধীনতা বিজয়ের বজ্র কন্ঠে মুক্তির শপথ নিয়ে ধ্বনিত হয়েছিল ও জেগে উঠেছিল বাংলার ৭ কোটি জাগ্রত জনতা সে হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে আমাদের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন পাকিস্তানি শাসকদের জুলুম অত্যাচার নির্যাতন এবং বাংলায় রাষ্ট্রভাষায় কথা বলার ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বজ্র কন্ঠে বলেছিলেন ''এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম''।

 

 

সেদিন আমাদের মহান নেতার ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার ছাত্র জনতারা ও সর্বশ্রেণীর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। অবশেষে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক চাপে ১৯৭২ এর ৮ই জানুয়ারি বাধ্য হয় আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পূর্ব পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দিতে।

 

 

তারপর বীরের বেশে ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন ও দিল্লি হয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলার মাটিতে পা রাখেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বাংলার সাধারণ মানুষকে বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেলেন। তারপর সকল গ্লানি ধুয়ে মুছে আমাদের যুদ্ধ হতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলার লক্ষ্য বাংলার কৃষক শ্রমিক ও মেহনতি সাধারন মানুষের কাঁধে কাঁধ রেখে দেশ গড়ার কাজ শুরু করেন।

 

 

এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু তখন দেশি বিদেশিদের ষড়যন্ত্র বুঝে ওঠার আগেই ১৯৭৫'রে ১৫ই আগস্ট আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে সবাইকে নির্মম ও নিষ্ঠুর ভাবে তার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে। খুনিরা সেদিন বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে ১০ বছরের শিশু রাসেলকেও রেহাই দেয় নি তখন খুনিদের হাতে থাকা দানবের বুলেট রাসেলের দেহ ঝাজরা করে উক্ত বাড়ির ফ্লোরে ফেলে রাখে এবং পাসন্ড জল্লাদের মতো উক্ত বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় খুনিরা।

 

 

এখনো উক্ত বাড়ির সিঁড়ি থেকে শুরু করে দোতলার প্রতিটি স্থানে তাদের রক্তের দাগ শুকায়নি। খুনিরা সেদিন অস্ত্র আর বারুদের গোলা দিয়ে বাড়ির দেয়াল গুলি ঝাজরা করতেও দ্বিধাবোধ করেনি। খুনি মোস্তাক, ডালিম গংদের হাত থেকে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে অলৌকিকভাবে দেশের বাইরে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর আদরের দুই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহেনা।

 

 

দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার পর ১৯৮১ সালের ১৭ই মে নিজের জীবন বাজি রেখে ছোট বোনকে দেশের বাইরে রেখে বাংলার মানুষের পাশে থাকার প্রত্যাশা নিয়ে নিজ জন্মভূমি বাংলার মাটিতে পা রাখেন। তারপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তিনি দলের হাল ধরেন।

 

 

এরপর জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে  বিভিন্ন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ এ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের ও দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে বলতে গেলে বলতে হয় উন্নয়নের প্রথম অঙ্গীকার ছিল ডিজিটাল সোনার বাংলা গড়ে তোলা।

 

 

এরমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের দেশের নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে শুরু করে ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪ লেনের রাস্তা উন্নতি করা ও কর্ণফুলী নদীর টানেল নির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন করা। তারই পাশাপাশি বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প সম্পন্ন করা এবং ফেনীতে ফ্লাইওভার নির্মাণ মেট্রো রেল এর কাজ সম্পন্ন করে চালু করা।

 

 

ইতিমধ্যেই আমাদের নারায়ণগঞ্জে পঞ্চবটি-টু মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এবং চাষাড়া হয়ে লিং রোড উড়াল সেতু ও ৪ লেনের রাস্তা প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এছাড়াও সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনা মহামারীতে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছেন এবং বিশ্বের দরবারে তিনি ভুইসী প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

 

 

তাছাড়াও তিনি দেশের মানুষের কল্যাণে ও সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা সহ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ও দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।

 

 

এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদরের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহর থেকে শহরতলীতে ও বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে প্রতিটি অঞ্চলের ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে যথেষ্ট অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

 

 

ফলে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদেরকে তারই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তার প্রাণপ্রিয় ও গর্বিত কন্যা আমাদের সকলের প্রাণপ্রিয় স্নেহময় প্রধানমন্ত্রীর গুণাবলী অনুসরণ করে নিজেকে পরিচালিত করতে হবে এবং দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের সকলের। "সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"। মোসাম্মৎ লুৎফুন্নেসা, প্রধান শিক্ষক, হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, পঞ্চবটি নারায়ণগঞ্জ।   এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর