শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

নিত্যদিনের যানজটে নাকাল যাত্রীরা, ঈদযাত্রায়ও ভোগান্তির শঙ্কা

রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪  


রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান বাইপাস সড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীসাধারণ। আটকা পড়েছে যাত্রীবাহী ও মালবাহী বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।

 

 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান বাইপাস সড়কে এ যানজটের চিত্র দেখা গেছে। এদিকে ঈদযাত্রাতেও এ দুই মহাসড়কের ১৫টি স্পটে যানজটের শঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

 


জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক। এ সড়কটি দিয়ে সিলেট, ভৈরব, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ সুনামগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রতিদিন শত শত দূরপাল্লার মালবাহী ট্রাক, বাস ও অন্যান্য গণপরিবহণ চলাচল করে।

 

 

অবৈধ বাসস্ট্যান্ড, অবৈধ ফুটপাত চাঁদাবাজি, যত্রতত্র যাত্রী উঠানো নামানো, নিয়ম ভঙ্গ করে গাড়ি চালকদের বিপরীত রুটে গাড়ি চলাচল, সড়কের প্রশস্ততা কম হওয়া, সড়ক দুর্ঘটনা, সড়কে গাড়ি বিকল হওয়া যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করেন এলাকাবাসী।

 


রূপসী বাসস্ট্যান্ড দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির ট্রাক রূপসী-কাঞ্চন সড়ক দিয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় এখানে পুলিশের সংখ্যা একেবারেই কম। অল্প কিছু পুলিশ সদস্য দিয়ে যানজট নিরসনের কাজ করানো হয়।

 


এদিকে রমজানের আগেই রূপসী, বরাবো, বরপা, ভুলতা, যাত্রামুড়া, বিশ্বরোড, তারাবসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে যানজট লেগেই থাকছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে ঈদযাত্রায় সাধারণ মানুষ এ স্পটগুলোতে যানজটের শিকার হতে পারেন।

 


অপরদিকে এশিয়ান বাইপাস সড়কটি অন্যতম একটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। মহাসড়কটি পূর্বাচল তিনশ ফুট সড়কের সঙ্গে গিয়ে মিশেছে। এ সড়কটি দিয়ে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, টঙ্গীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যানবাহন চলাচল করে। এ মহাসড়কটিতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে।

 


এ মহাসড়কে যানজটের অন্যতম কারণ কাঞ্চন টোলপ্লাজায় টোল গ্রহণে ধীরগতি, এশিয়ান বাইপাস সড়কের চার লেনে উন্নীতকরণ, অবৈধ বালু ও যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা। যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধারণ মানুষ বসে থাকতে হচ্ছে। এশিয়ান বাইপাস সড়ক দিয়ে কাভার্ডভ্যান সবচেয়ে বেশি চলাচল করে।  

 


অভিভাবক আনোয়ার জানান, তার ছেলে মাহমুদুল হাসান যাত্রামুড়া এখলাস উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে লেখাপড়া করে। বেলা ২টার দিকে তার মেয়েসহ শিক্ষার্থীরা স্কুল বাসে উঠেছেন নিজ নিজ বাড়িতে আসার জন্য।

 

 

বিকাল সাড়ে ৫টা বেজে গেলেও যানজটের কারণে তারা বাড়ি ফিরতে পারেননি। প্রায়ই তারা যানজটের কবলে পড়ে সকালের দিকে সঠিক সময় স্কুলে যেতে পারেন না। যাতে সব সময়ই যানজটমুক্ত থাকে সড়কটি সেই ব্যাপারে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

 


গাউছিয়া মার্কেটের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতি সোমবার ও মঙ্গলবার গাউছিয়া কাপড়ের বাজারের পাইকারি হাট। এ হাটে এই দুই দিন হাজার হাজার ব্যবসায়ী আসেন বেচাকেনা করতে। সকাল থেকে যানজট থাকার কারণে মঙ্গলবার ক্রেতা ছিল অনেকটা কম। ক্রেতাদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটে আটকা পড়েছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এখানকার ক্রেতা-বিক্রেতারা।

 


ইমাদ নামে এক যাত্রী বলেন, চিটাগাং রোড থেকে আমার বাড়িতে যেতে সময় লাগে ১৫ মিনিট। তিনি ২ ঘণ্টা ধরে যানজটে বসে আছেন। যানজট কখন শেষ হবে; আমি কখন বাড়ি ফিরব জানা নেই।

 


ট্রাকচালক মিয়াজদ্দিন বলেন, ভাইজান ৩ ঘণ্টা ধইরা জ্যামে বইয়া রইছি। অহনও এক কিলোমিটারও যাইতে পারি নাই। মাল লইয়া যাওন লাগব গাজীপুর। এশিয়ান বাইপাস সড়কের সবসময়ই জ্যাম লাইগা থাহে।

 


এ ব্যাপারে ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আশরাফ উদ্দিন বলেন, যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সামনে ঈদযাত্রা যাতে নির্বিঘ্ন হয় সে ব্যাপারে আমরা জোর চেষ্টা চালাচ্ছি।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর