লাঙ্গলবন্দ স্নান এবং নদের উৎপত্তির ইতিহাস
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৯
লাঙ্গলবন্দ স্নান এবং নদের উৎপত্তি সম্পর্কে চমৎকার এক কাহিনী প্রচলিত আছে। হিন্দু পুরাণ মতে, ত্রেতাযুগের সূচনাকালে মগধ রাজ্যে ভাগীরথীর উপনদী কৌশিকীর তীর ঘেঁষে এক সমৃদ্ধ নগরী ছিল, যার নাম ভোজকোট।
এ নগরীতে ঋষি জমদগ্নি তিনি সূর্যবংশীয় কন্যা রেণুকাকে পত্নী রূপে বরণ করেণ। তাদের ঘরে আলো করে আসে পাঁচ পুত্র সন্তান। পাঁচ পুত্র সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তানের নাম রূষন্ত দ্বিতীয় পুত্রের নাম সুষেণ, তৃতীয় পুত্রের নাম বসু, চতুর্থ পুত্রের নাম বিশ্বাসুর,ভগবান বিষ্ণু রূপ পরশুরাম ছিলেন সবার ছোট। পূর্বজন্মের তপস্যার দ্বারা তারা ভগবান কে সন্তান পরশুরাম রূপে পেয়েছে। এই পরশুরামই নিয়ে আসেন ব্রহ্মকু- থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ।
পরশুরামের জন্মকালে বিশ্বজুড়ে চলছিল মহাসঙ্কট। একদিন পরশুরামের মা রেণুকা দেবী জল আনতে গঙ্গার তীরে যান। সেখানে পদ্মমালী (মতান্তরে চিত্ররথ) নামক গন্ধবরাজ স্ত্রীসহ জলবিহার করছিলেন (মতান্তরে অপ্সরী গণসহ)। পদ্মমালীর রূপ এবং তাদের সমবেত জলবিহারের দৃশ্য রেণুকা দেবীকে এমনভাবে মোহিত করে যে, তিনি তন্ময় হয়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকেন। অন্যদিকে ঋষি জমদগ্নির হোমবেলা পেরিয়ে যাচ্ছে, সেদিকে তার মোটেও খেয়াল নেই। সম্বিত ফিরে পেয়ে রেণুকা দেবী কলস ভরে ঋষি জমদগ্নির সামনে হাত জোড় করে দাঁড়ান।
তপোবলে ঋষি জমদগ্নি সবকিছু জানতে পেরে রেগে গিয়ে ছেলেদের মাকে হত্যার আদেশ দেন। প্রথম চার ছেলে মাকে হত্যা করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্রুদ্ধ হয়ে জমদগ্নি তার ছেলে পরশুরামকে আদেশ করে তার মা রেণুকার শিরঃচ্ছেদ করতে। পরশুরাম বিচলিত হয় ওঠে! সে তার পিতার আদেশ অমান্য করবে নাকি মাতৃহত্যার বোঝা বহন করবে। উভয় সংকটে পরে যায় পরম শিবভক্ত পরশুরাম।
পরশুরাম তার মায়ের কাছে যায় এবং সবকথা খুলে বলে। তার পিতা আদেশ দিয়েছে তার শিরঃচ্ছেদ করবার। পরশুরামের মা ছিলেন সত্যপরায়ণা তাই তিনি তার ছেলে পরশুরামকে আদেশ দিলেন সে তার পিতার আদেশ রক্ষা করুক এবং তিনি নিজে তার মস্তক ছেদকরবার জন্য প্রস্তুত করলেন। বুকে পাথর চাপা দিয়ে পরশুরাম তার মায়ের শিরঃচ্ছেদ করলেন।
পরবর্তীকালে পিতা খুশি হয়ে বর দিতে চাইলে তিনি মা এবং ভাইদের প্রাণ ফিরে চান। তাতেই রাজি হন ঋষি জমদগ্নি। কিন্তু মাতৃহত্যার পাপে পরশুরামের হাতে কুঠার লেগেই থাকে। অনেক চেষ্টা করেও সে কুঠার খসাতে পারেন না তিনি। মাতৃহত্যার পাপের বোঝায় পরশুরাম উন্মাদ হয়ে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। এক পর্যায়ে পিতার কথামত পরশুরাম তীর্থে তীর্থে ঘুরতে লাগলেন।
পরবর্তীতে ভগবান শিবের তপস্যা করে উনাকে সন্তুষ্ট করে তার পাপ নিবারণের রাস্তা জেনে নেন। ভগবান শিব তাকে বলেন হিমালয়ের কৈলাশ পর্বতের নিচের মানস সরবরের থেকে যেই নদ তৈরী হয়েছে তাতে স্নান করলে তার পাপ ধুয়ে যাবে। যেই কথা সেই কাজ, পরশুরাম সেই নদীতে স্নান করেন এবং পাপমুক্ত হোন। আর সেই নদই হল বর্তমান পুরাতন ব্রহ্মপুত্র আর যেই স্থানে স্নান করেন সেটাই ছিল লাঙ্গলবন্দ আর তিথিটা ছিল চৈত্রের অষ্টমী।
পরশুরাম মনে মনে ভাবেন, এই পুণ্য বারিধারা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিলে মানুষ খুব উপকৃত হবে। তাই তিনি হাতের খসে যাওয়া কুঠারকে লাঙ্গলে রূপান্তর করে পাথর কেটে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে মর্ত্যলোকের সমভূমিতে সেই জলধারা নিয়ে আসেন। লাঙ্গল দিয়ে সমভূমির বুক চিরে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হন তিনি। ক্রমাগত ভূমি কর্ষণজনিত শ্রমে পরশুরাম ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানায় এসে তিনি লাঙ্গল চালানো বন্ধ করেন।
এই জন্য এই স্থানের নাম হয় লাঙ্গলবন্দ। এরপর এই জলধারা কোমল মাটির বুক চিরে ধলেশ্বরী নদীর সঙ্গে মিশেছে। পরবর্তীকালে এই মিলিত ধারা বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে।
আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি ব্রহ্মপুত্র নদের নামকরণ হওয়ার পেছনে মূল কারণ হল ব্রহ্মার এক ছেলে অভিশপ্ত হয়ে নদ রূপ ধারণ করে ও তার নদী জীবন সার্থক এবং মানব কল্যাণে লাগানোর জন্য ভগবান শিব তাকেই বেছে নেয়। যেই নদীতে স্নান করে দশাবতারের একজন পরশুরাম পাপমুক্ত হতে পারে সেই নদীতে যদি আমরা স্নান করতে পারি তাহলে অবশ্যই পাপের বোঝা কমাতে পারব।
কিন্তু মনে থাকতে হবে অনুতপ্ততা অর্থাৎ পাপের অনুশোচনা। এই অনুশোচনা না থাকলে হাজার বছর গঙ্গায় ডুব দিলেও কোন লাভ হবে না। আমাদের উচিত মনের ময়লা দূর করে ভক্তি শ্রদ্ধা সহকারে ক্ষমা চাওয়া এবং এই নদীতে স্নান করা। এই নিয়ে একটি কাহিনী আছে, একদিন মহাদের মা পাবর্তীকে নিয়ে ভ্রমনে করতে বের হয়েছে। মা পাবর্তী দেখলেন অনেক মানুষের সমাগম। তখন মা পাবর্তী শিবকে প্রশ্ন করলেন কি হচ্ছে এখানে ?
শিব ঠাকুর বললেন, পাপ মুক্তির জন্য স্নান করছে। মা পাবর্তী বললেন সবাই কি পাপ মুক্ত হচ্ছে ? শিব ঠাকুর বললেন চল একটি নাটকের মাধ্যমে তোমার উত্তর প্রদান করি। শিব ঠাকুরকে নিয়ে মা পাবর্তী ঘাটে বসে কান্নাকাটি করছে। আর বলছে আমার স্বামী মারা গেছে আমার স্বামীর শেষ কাজের জন্য কেউ সাহায্য করেন। তবে কোন পাপী ব্যক্তি আমার স্বামীকে স্পর্শ করতে পারবে না।
সবাই চিন্তায় পড়ে গেল আমরা সবাই তো স্নান করেছি, তবে মহিলা এই কথা বলছে কেন ? আমরা কি পাপ মুক্ত হই নাই। তখন একজন পাপী ব্যক্তি তাদের দেখে দয়া হল এবং বলল মা আমি জীবনে অনেক পাপ করেছি, আমি স্নান করে পাপ মুক্ত হয়ে তোমার স্বামীর শেষ কাজ করতে সাহায্য করব। এই কথা বলে লোকটি স্নান করে তাদের কাছে আসলে মা পাবর্তী ও মহাদেব তাকে নিজ রূপে দেখা দিয়ে চলে গেলেন। অর্থাৎ যা করতে হয় বিশ্বাসের সাথে করতে হয়। মহাযোগী পরশুরাম মূলত জনকল্যানার্থে কৃষির উন্নয়নে তিনি ব্রহ্মপুত্রের জলধারা নিয়ে আসেন। শাস্ত্র বলে, “সব তীর্থ বার বার, লাঙ্গলবন্দ এক বার।”
রণজিৎ মোদক
লেখক : শিক্ষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সভাপতি, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব
মুঠোফোন : ০১৭১১৯৭৪৩৭২
- আমরা বঙ্গবন্ধুর কাছে অধিকার আদায় করতে শিখেছি : সাউদ নুর
- শামীমকে খুশি করতে আইভীকে আক্রমন
- ঝুট সন্ত্রাসী অনিক বাহিনী বেপরোয়া
- গর্জন দিয়ে নীরব
- চেয়ার চায় রাজাকারের উত্তরসূরি
- সদরে নির্বাচন না হলে লাভ কার?
- বন্দরে খেলারামদের খেলা শুরু
- রাত ৮টার পর সকল মাকের্ট ও দোকান বন্ধ ঘোষণা
- গ্যাস কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববোধ!
- তীব্র তাপদাহে দিনমজুর শ্রমিকরা খুঁজছেন শীতল প্রহর
- তীব্র তাপে রাস্তা-ঘাট শূন্য
- ফতুল্লার গাবতলীর মোফাজ্জলে পরিত্যাক্ত বাড়ি মাদকের হাট
- “আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর” সুপেয় পানি বিতরণ
- নৌপথে চাঁদাবাজি করে অঢেল সম্পদের মালিক চাঁদাবাজ সবুজ সিকদার
- ১৭-২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারী সমিতির ঈদ পূর্নমিলন অনুষ্ঠান
- শেখ রাসেল পার্ককে পতিতালয় বলায় বিক্ষুব্ধ না.গঞ্জবাসী
- স্ত্রীর যৌতুক মামলায় কুপোকাত মাকসুদ
- উপজেলা নির্বাচনে উধাও তৈমুরের তৃণমূল বিএনপি
- তাহলে এই নাটকের মানে কী?
- কেউ জানে না কোন কিছু
- কাঁচপুর থেকে মেঘনা অরক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
- ইউপি সদস্য নার্গিস আক্তারের স্বামীর মৃত্যুতে সাবেক এমপি খোকার শোক
- বৃষ্টি প্রার্থনায় অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়েন মুসুল্লিরা
- প্রখর রোদেও থেমে নেই রিকশার প্যাডেল
- মারাত্মক অনিয়মে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হয়েছে
- “আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর” সুপেয় পানি বিতরণ
- বড় রাজুর শেল্টারে সাল্লু-হীরা
- হিরণে ধ্বংসের পথে বন্দর উপজেলা বিএনপি
- ‘সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন হলে আমি অবশ্যই বিজয়ী হবো’
- মাকসুদের টাকা উড়ছে
- এমপির সন্তান হুইপের আত্মীয়রাই ফ্যাক্টর
- বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সানুর চ্যালা আজমেরীর ঘাড়ে
- সুফিয়ানকে চাপে ফেলার কৌশল
- পরিত্যক্ত গুদামে যুবকের লাশ
- তাহলে এই নাটকের মানে কী?
- আইভীকে হুমকি দেয়ায় ক্ষুব্ধ আ.লীগ
- অনলাইনে কালামের মনোনয়নপত্র জমা
- সদরের ভাগ্য নির্ধারণ আজ
- ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব বুঝে নিলেন চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম
- সোনারগাঁ-রূপগঞ্জ নির্বাচনে আ.লীগের প্রতিপক্ষ আ.লীগ
- রূপগঞ্জে পাপ্পা-সেলিম দ্বৈরথ
- সুফিয়ান আউট চাপে মাকসুদ-মুকুল
- শুনানি হলেও সিদ্ধান্ত আসেনি
- প্রফুল্ল আজাদ-নাজিম
- ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমজমাট বন্দর
- মাকসুদের টাকা উড়ছে
- বন্দরে অবশেষে উত্তপ্ত হলো নির্বাচনী ময়দান
- আতাউর রহমান মুকুলকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা
- একজন নুরুজ্জামান খাঁনের অপেক্ষায় রূপগঞ্জবাসী
- ‘এই গরমে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ’
- শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত
- ইজতেমা আয়োজনকে নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা
- হজ থেকে ফিরে হাজীদের কিছু আমল
- লাইলাতুল কদরের নামায আদায়ের নিয়ম
- ১০ মহরম ও আশুরা উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল
- আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না
- নামাজে রিং বেজে উঠলে করনীয় !
- লাঙ্গলবন্দ স্নান এবং নদের উৎপত্তির ইতিহাস
- রমজানের নতুন চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়তে বলেছেন বিশ্বনবী
- ধর্মীয় চেতনার প্রতীক কদম রসুল দরগাহ
- মক্কা-মদিনার নতুন খতিব ও ইমাম
- আজ বড়দিন উৎসব
- আগামীকাল রাতে পবিত্র শবে মিরাজ
- উপমহাদেশের প্রথম হাদিসচর্চা কেন্দ্র সোনারগাঁয়ে
- পবিত্র শবে বরাত আজ