রোববার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

১৫ মাসে ৫৫০ ডাকাত গ্রেপ্তার

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪  

 

নারায়ণগঞ্জে গত ১৫ মাসে ডাকাতির ঘটনা ও প্রস্তুতিকালে ৫৫০ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় ১০৫টি মামলা হয়েছে। তবুও থেমে নেই এসব ঘটনা। অবশেষে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।

 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সাল ও ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায় ২৮টি মামলা হয়েছে। এই মামলাগুলোতে মোট ৯৯ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। ২৮টি ডাকাতির ঘটনায় মোট ২৪টি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও লুণ্ঠিত বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। বাকি ৪টি ঘটনা তদন্তাধীন আছে। উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

এর মধ্যে সদর মডেল থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ডাকাতির কোনো ঘটনা এবং মামলাও নেই। ফতুল্লা মডেল থানায় ৩টি ডাকাতির মামলায় ৩ জন, বন্দর থানায় ৬টি মামলায় ১৭ জন, সোনারগাঁ থানায় ৭টি মামলায় ২৯ জন, রূপগঞ্জ থানায় ৫টি মামলায় ১৭ জন ও আড়াইহাজার থানায় ৭টি মামলায় ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে গত ১৫ মাসে ডাকাতির ঘটনা ও প্রস্তুতিকালে ৫৫০ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় ১০৫টি মামলা হয়েছে। তবুও থেমে নেই এসব ঘটনা। অবশেষে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।

 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সাল ও ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায় ২৮টি মামলা হয়েছে। এই মামলাগুলোতে মোট ৯৯ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। ২৮টি ডাকাতির ঘটনায় মোট ২৪টি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও লুণ্ঠিত বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। বাকি ৪টি ঘটনা তদন্তাধীন আছে। উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

এর মধ্যে সদর মডেল থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ডাকাতির কোনো ঘটনা এবং মামলাও নেই। ফতুল্লা মডেল থানায় ৩টি ডাকাতির মামলায় ৩ জন, বন্দর থানায় ৬টি মামলায় ১৭ জন, সোনারগাঁ থানায় ৭টি মামলায় ২৯ জন, রূপগঞ্জ থানায় ৫টি মামলায় ১৭ জন ও আড়াইহাজার থানায় ৭টি মামলায় ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

এদিকে গত ১৭ মার্চ দিবাগত রাতে সোনারগাঁয়ে মাইকে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে গণপিটুনিতে চার জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন। পরে আহত ডাকাতের জবানবন্দি নেওয়া হলে, ডাকাতির পরিকল্পনার কথা বেরিয়ে আসে।

 

নিহতরা হলেন- সোনারগাঁ উপজেলার রাজাপুর শেখেরহাট গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে জাকির হোসেন (৩৬), জাকিরের নামে ৭টি মামলা রয়েছে। আড়াইহাজারের কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের শামসুল হকের ছেলে আব্দুর রহিম (৪৮), তার বিরুদ্ধেও ৭টি মামলা রয়েছে। একই উপজেলার জালাকান্দী গ্রামের মজিদ হোসেনের ছেলে নবী হোসেন (৩৫) তার বিরুদ্ধে ১টি মামলা এবং একই উপজেলার মর্দাসাদী গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শের আলী (৩৩), তার বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। আহত মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে। তারা ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি।

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ডাকাতির উদ্দেশ্যে ডাকাত সর্দার নিহত জাকির হোসেন ১৭ মার্চ রাতে সোনারগাঁ উপজেলার বাঘরী বড়বিলে ডাকাত সদস্যদের জড়ো হতে বলেন। সেখানে জড়ো হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় গ্রামবাসী বিষয়টি টের পেয়ে যায়। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের গণপিটুনি দেয় তারা। এ ঘটনায় চারজন মারা যান। ইতিমধ্যে নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

এর আগে, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর আড়াইহাজারে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে ৮ জন নিহত হন, আহত হয় অন্তত আরও চারজন। ২০২২ সালের ২ অক্টোবর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা টোল প্লাজায় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার গাড়ি চালককে কুপিয়ে টাকা, মোবাইল ফোন ও ব্যাংকের কার্ড নিয়ে গেছে একদল ডাকাত।

 

এদিকে ডাকাত আতঙ্কে আছেন গ্রামবাসী। সোনারগাঁও বাঘরী এলাকার গ্রামবাসী সামছুল আলম বলেন, প্রায়ই এই গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। মানুষের সর্বস্ব লুট করে ডাকাতরা নিঃস্ব করে চলে যায়। আমরা রাতের বেলায় ভয়ে থাকি। ডাকাতি কমাতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।

 

আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী এলাকার তানভীর বলেন, আড়াইহাজার ডাকাতের গ্রাম হিসেবে পরিচিত। আমরা তাদের ভয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকি। আমরা এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাই।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিরসনে হাইওয়েসহ বিভিন্ন স্থানে রাত্রিকালীন ও দিনের বেলা পেট্রোল টিম থাকে। এরপরও যখনই কোনো ঘটনা ঘটে তখনই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়। গত এক বছরে জেলায় যে ২৮টি ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে অধিকাংশ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছি। প্রায় ৯৯ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ছাড়া ৭৭টি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা হয়েছে। সেখানেও অনেক ডাকাত গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর ডাকাতির ঘটনা হ্রাস পেয়েছে। আর ডাকাত গ্রেপ্তারের সংখ্যাও বেড়েছে। তারপরও বিচ্ছিন্ন দু-একটা ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করছি। মার্কেটগুলোতে পাহারাদার নিয়োগ করার কথা বলেছি, হাইওয়ে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে বলেছি।

 

এ বিষয়ে সরকারী তোলারাম কলেজের উপাধ্যক্ষ জীবন কৃষ্ণ মোদক বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে ডাকাতি বেড়ে চলেছে। এটি প্রতিকার করতে হলে আইনশৃঙ্খলার কঠোরতা বাড়াতে হবে এবং গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নারায়ণগঞ্জের সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, এককভাবে ডাকাতির ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলার অবনতিকেই বুঝায়। পাশাপাশি আমরা যেটা মনে করি সমাজে যখন এক ধরণের অসুস্থ প্রতিযোগীতা ও দুর্নীতি লক্ষ্য করা যায় তার প্রমাণই হচ্ছে এই ধরনের ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাই। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়া, মানুষের আয়-ব্যয়ের বৈষম হওয়া, দেশের অর্থনৈতিক অবনতি, বেকার সমস্যাও এটি বৃদ্ধির কারণ।

 

তিনি বলেন, প্রতিকার করতে হলে, সমাজে দুর্নীতি কমিয়ে নিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা সহনশীল করার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রব্যর দাম বৃদ্ধির সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। সরকারের দায়িত্বশীল প্রশাসনরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলেই ডাকাতি ঘটনা কমানো সম্ভব। মোট কথা সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে হবে।

 

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, আমরা মনে করি একটা মানুষকে ডাকাত কিংবা অপরাধী হিসেবে সমাজ তৈরি করে এটা তো ব্যক্তিগত কোনো অপরাধ না। অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মানুষের জীবনধারন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এটি পরিবর্তন করা জরুরি। না হলে এই দস্যুতা বা ডাকাতির ঘটনা থেকে বের হয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়বে। এস.এ/.জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর