শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

লকডাউন আছে, লকডাউন নেই!

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২১  

করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের সাথে নারায়ণগঞ্জেও ৭ দিন ব্যাপী লকডাউন চলছে। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন শেষ হতে বাকি আরো ২ দিন। তবে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীতে সাধারণ মানুষের অনিয়ন্ত্রীত চলাচল এবং স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করা দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে, এ শহরে লকডাউন থেকেও যেনো নেই! সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও শেখ রাসেল পার্কের মতো হাতেগুনা কয়েকটি জায়গা ছাড়া, সর্বত্রই অসংখ্য লোকজনের সমাগম। আর এদের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না-মানার প্রবণতাও বেশি। অথচ প্রতিদিনই নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে অশ্বর্যের বিষয় সারাদেশে করোনা প্রতিরোধে লকডাউন শুরুর সময় মার্কেট বন্ধ রাখতে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও গতকাল রাত থেকে সেই নির্দেশনা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এতে সবাই আরো বেশি করে লকডাউন অমান্য করে বাসা থেকে বেরিয়ে আসছে। পাশাপাশি এর ফলে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যাত্রীদের নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিক্সা, লেগুনা ও সিএনজির মতো অন্যান্য যানবাহনগুলো।   গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর দুইনং রেলগেট এলাকায় এক চায়ের দোকানীর সাথে কথা হলে রমজান মিয়া নামে সেই দোকানী বলেন, ‘লোকজন প্রথমে যেই ভাবে লকডাউন নিয়া ঢাকঢোল পিটাইসিলো সেই রকম লকডাউন হয় নাই। সাবাই ইচ্ছামতো বাসা থেকে বাইরে আসতাসে, কেনাকাট করতাসে, হোটেলে খাইতাসে; সবই করতাসে। এতে প্রশাসনও তেমন কিছু বলেনা। আর এখন মার্কেটও খুলে দিসে, তাই লোকজন আরো বেশি কইরা বাসা থেকে বের হবে। কিন্তু আমাদের গরীব মানুষের জন্য ভালোই হইসে, নইলে না খাইয়া মরতে হইত।’ অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে লকডাউন চলাকালে কোথাও ১’শ জনের বেশি লোক নিয়ে সভা-সমাবেশ না করতে বিভিন্ন রাজনৈতীক ও অরাজনৈতীক সংগঠনগুলো নিষেধ করা হলেও তারা সেটি মানেনি। সর্বশেষ দুদিন আগেও মামুনুল কান্ডে সোনারগাঁয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের অফিসে আগুন ও নেতাদের বাড়িঘর ভাংচুড়ের ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে আসেন। এ সময় সেখানে শতশত মানুষের গণসমাবেশ দেখা যায়। এর আগেও এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হেফাজতের নেতারা শহরের ডিআইটিতে সমাবেশ করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি মানুষ যাতে করোনা থেকে মুক্ত থাকে তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং মাস্ক ব্যবহারে সচেতন করতে জেলার বিভিন্ন স্থানে আমাদের ১০টি ইউনিট কাজ করছে। আমরা চাই আমাদের জেলাই যাতে সকলেই করোনা মুক্ত থাকে।’

এই বিভাগের আরো খবর