শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

এন্ড্রোয়েড ফোন হাতিয়ে নিতেই সাব্বিরকে হত্যা, গ্রেফতার ৩

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২১  

রূপগঞ্জে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর, ক্লুলেস ও নৃশংসভাবে নির্মাণ শ্রমিক সাব্বির আহমেদ (১৭) হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। থানায় মামলা দায়েরের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই রূপগঞ্জের পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টর হতে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতাররা হলো, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার রসুলপুর গ্রামের ইব্রাহিম মণ্ডলের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম, আবদুল হামিদের ছেলে  আনিসুর রহমান, ইব্রাহিম আলীর ছেলে মিজানুর রহমান।

 

গত ২১ নভেম্বর রূপগঞ্জের পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টরে নির্মাণাধীন পুলিশ টাওয়ার এর ৭ম তলায় নির্মাণ শ্রমিক মো. সাব্বির আহমেদের (১৭) হাত ও চোখ-মুখ বাঁধা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। ভিকটিম সাব্বির কুড়িগ্রাম  জেলার কচাকাটা থানার অষ্টআশিচর এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে। এঘটনায় নির্মাণ শ্রমিক ও নিহতের মামা মো. মহেমুল ইসলাম ২২ নভেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।


র‌্যাব-১১’র কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার একেএম মুনিরুল আলম জানান, গ্রেফতারকৃত তিন আসামী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম মো. সাব্বির আহমেদ (১৭) কে হত্যা করে। গ্রেফতার হওয়া ৩ জন ও ভিকটিম মো.সাব্বির আহমেদ (১৭) সহ কুড়িগ্রাম জেলার মোট ১৫ জনের একটি দল দীর্ঘদিন যাবত নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে আসছিল। এই বছরের গত ২০ নভেম্বর চুক্তি অনুযায়ী উল্লেখিত নির্মাণাধীন ভবনে তাদের কাজ শেষ হয় এবং ২১ নভেম্বর তারিখে মজুরী গ্রহণপূর্বক তাদের যার যার মত বাড়ীতে যাওয়ার কথা ছিল। উল্লেখ্য, ভিকটিম সাব্বির একটি এন্ড্রোয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করত। গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া ভাষ্যমতে ওই মোবাইল ফোনটি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে গত ২০ নভেম্বর ২০২১ইং তারিখ তাদের নির্মাণ কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আশরাফুল, আনিস ও মিজান ৩ জনে মিলে ভিকটিম সাব্বিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। অতঃপর পারস্পারিক যোগসাজসে তারা হত্যায় ব্যবহৃত লোহার ছোট রড ও জিআই তার জোগাড় করে ফাঁস বানায়। এরপর আনুমানিক রাত ৮টার দিকে হত্যাকারী আশরাফুল ভিকটিম সাব্বিরকে মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে ৭ম তলায় নিয়ে যায় এবং অপর দুই হত্যাকারী আনিস ও মিজান তাদের পিছুপিছু ৭ম তলায় যায়।

 

 অতঃপর কথোপকথনের এক পর্যায়ে অতর্কিতভাবে তারা ভিকটিম সাব্বিরকে হামলা করে এবং একজন ভিকটিম এর গলায় থাকা গাঁমছা দিয়ে ভিকটিম এর মুখ, নাক ও চোখ বেঁধে ফেলে, একজন ভিকটিমের পরিধেয় শার্ট দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে এবং অপরজন লোহার রড ও জিআই তার দিয়ে বানানো ফাঁস ভিকটিম এর গলায় পেঁছিয়ে ভিকটিম এর শ্বাসরোধ করে পারস্পারিক সহযোগিতায় ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। অতঃপর তারা লাশটি টেনে একই তলার অন্য একটি কক্ষে নিয়ে প্লেইন শীট দিয়ে ঢেঁকে রাখে। ঘটনার পরের দিন ভিকটিম সাব্বিরকে তার সহনির্মাণ শ্রমিকরা দেখতে না পেয়ে সবাই  মিলে  খোঁজাখোজি শুরু করে এবং দুপুর দেড়টার দিকে নির্মাণাধীন ভবনের ৭ম তলায় সাব্বির এর লাশ খুঁজে পায়। 

 

র‌্যাবের এই কর্মকতা জানান,  গ্রেফতার হওয়ার তিনআসামিকে জিজ্ঞাসাবাদেপ্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী র‌্যাব এই হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হত্যায় ব্যবহৃত রডের সাথে পেঁচানো জিআই তার ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত ৩ হত্যাকারীকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার হস্তান্তর করা হয়েছে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর