মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

ফতুল্লা ও কুতুবপুর ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকাও প্লাবিত

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১  

গতকালের বৃষ্টিতে ডিএনডির ফতুল্লা এলাকার আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফতুল্লা এবং কুতুবপুর ইউনিয়ন থেকে খবর পাওয়া গেছে এই দুটি ইউনিয়ন প্রায় সম্পূর্ণরুপে বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, ডিএনডির ইতিহাসে যে সকল এলাকায় পানি জমেনি সেই সকল এলাকাও বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। ফলে ফতুল্লা আর কুতুবপুরের মানুষ একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছে। এতে খোদ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করছেন।

 

এ বিষয়ে গতকাল ফতুল্লা ইউনিয়নের ইসদাইরের মুরুব্বী আবুল কাশেম বলেছেন, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, কিন্তু আমরা অসহায়। আমরা কার কাছে যাবো বুঝতে পারছি না। এটা পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে ডিএনডি প্রজেক্টের কাজ যারা করছেন তারা ঠিক মতো কাজ করছেন না। এছাড়া আমাদের এলাকার ইউএনও এবং চেয়ারম্যান সাহেব এসে দেখে গেছেন। তারা কিছু একটা করার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আমরা কোনো উপকারই পাচ্ছি না। পুরো এলাকা ডুবে গেছে। রাস্তাঘাটতো ডুবেছেই, আমাদের ঘরে ঘরে পানি ঢুকেছে।

 

তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই জানি ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুই দফায় তেরো শ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন। আরো আগেই সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু কি কাজ হলো। বছরে বছরে পরিস্থিতো আরো খারাপ হচ্ছে। এবারতো ডিএনডির উঁচু এলাকাগুলিতেও পানি জমে গেছে। আর বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে একদিন পানি জমলে সাত দিন বৃষ্টি না হলেও এই পানি সরে না। এই অবস্থার কারণ সম্পর্কে মিছির আলী আরো বলেন, আসলে ডিএনডির জলাবদ্ধা নিরসনে পরিকল্পিত কোনো কাজই হয়নি। ডিএনডির খালগুলি উদ্ধার করা হয়নি। আর পানির পাম্পগুলি কিভাবে চালানো হচ্ছে সেটাও আমরা জানি না। সব কিছু মিলিয়ে ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিয়ে আসলে কি হচ্ছে আমরা কিছুই জানি না। অন্ধকারে রয়েছি আমরা। তাই আমি মনে করি এই ব্যাপারে অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উচিৎ আসলে কি হচ্ছে সেটা জেনে জনগণকে অবহিত করা এবং সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়ে সেটা তদারকি করা।

 


অপরদিকে এ বিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল খালেক মুন্সি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোষ্ট দিয়ে লিখেছেন, “কুতুবপুরের বাসিন্দারা ডুবতে বসেছে, দেখার কেউ নেই”। তার এই কমেন্টের নিচে গতকাল এই রিপোর্ট লিখার সময় পর্যন্ত অন্তত পঞ্চাশ ব্যক্তি কমেন্ট করেন। তারা সকলেই কুতুবপুরের জলাবদ্ধতা নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্বাধীন হাসান জয় লিখেছেন, কুতুবপুরের মানুষদের দেখার কেউ নেই। আর থাকবে কেমনে, সব যে হাইব্রিড নেতায় ভরা। এছাড়া খালেক মুন্সী যুবলীগের একজন নেতা হয়েও এভাবে জনগণের পক্ষে পোষ্ট দেয়ার কারণে অনেকেই তাকে ধন্যবাদ জানান। পারভেজ ইসলাম লিখেছেন, এভাবে মনের কথা গুলো প্রকাশ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। 

 


প্রসঙ্গত,  ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য আরো চার বছর আগে সরকার একটি মেঘা প্রকল্প গ্রহন করে। আর এই প্রকল্পের কাজের জন্য প্রথমে সারে পাঁচশ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। তখন বলা হয়েছিলো এই মোটা অংকের টাকার কাজ শেষ হলে ডিএনডি এলাকা হবে দেশের অন্যতম আবাসিক এলাকা। কিন্তু সেই টাকা শেষ করে আরো সারে সাতশ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কোথাও এতোটুকু উন্নয়ন হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে। এই মুহুর্তে গোটা ডিএনডি এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে।


 

এই বিভাগের আরো খবর