শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ফুটপাত দখল নিতে আবারো মরিয়া রহিম মুন্সি-আসাদ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২  


# হত্যা মামলার আসামী আসাদ ও রহিম মুন্সির নেতৃত্ব শহরে হকারদের বিক্ষোভ  


নারায়ণগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সড়ক। এই সড়কের ফুটপাত থেকে শুরু করে সড়কের অর্ধেকই থাকে হকারদের দখলে। প্রতিদিনই হকাররা এই সড়কের দু’পাশে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

 

 

তারই মাঝে আবার অনেকে সড়কের একপাশে ভ্যানগাড়িতে করে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন। বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসা নিষেধ থাকলেও হকাররা তা কিছুতেই মানছেন না। প্রতিদিনই পুলিশ এই সড়কটিতে হকার উচ্ছেদ করেন।

 

 

কিন্তু পুলিশ আসলে হকাররা তাদের মালামাল নিয়ে সড়কের মাঝে চলে যায়, আবার পুলিশ চলে গেলে পূর্ণরায় আগের স্থানে এসে তাদের মালামাল নিয়ে বসেন। বিষয়টি দেখলে মনে হয় ইঁদুর বিড়ালের খেলা। প্রতিদিনই এই সড়কটিতে পুলিশের সাথে হকারদের ইঁদুর বিড়ালের খেলা চলে।

 

 

পুলিশ একশনে গেলে হকাররা চড়াও হয়ে সড়কে নেমে মিছিল মিটিং করেন। আর এই মিছিল মিটিংয়ে নেতৃত্ব দেয় নারায়নগঞ্জ মহানগর হর্কাস লীগের সভাপতি রহিম মুন্সি ও হর্কাস সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ সহ বেশ কয়েকজন হকার নেতা।

 

 

২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী সমর্থক ও নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান সমর্থক ও হকারদের সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। সেই সময় সংঘর্ষে মেয়র আইভী সহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।

 

 

সেই ঘটনার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু সড়কে হাইকোর্ট থেকে বসা নিষেধ করে দেন। নিষেধের পর থেকেই প্রতিদিন পুলিশ এই সড়কটিতে হকার উচ্ছেদ অভিযান চালায়। পরে ২০২১ সালের ৯ই মার্চ পুলিশের সাথে হকারদের বঙ্গবন্ধু সড়কে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া ঘটনা ঘটে। এতে পথচারি সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।

 

 

এ ঘটনায় হকার নেতা আসাদ ও রহিম মুন্সির নেতৃত্বে শহরে বিভিন্ন জায়গায় হকাররা আগুন, ভাংচুর ও ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটায়। সেই সময় পুলিশ ধাওয়া-পাল্টা সংঘর্ষে সময় হকার নেতা আসাদকে আটক করে। পরে আসাদের মুক্তির দাবীতে প্রায় এক ঘন্টা শহর হকাররা অবরুদ করে রাখেন।

 

 

সড়কে চারটি স্থানে আগুন দিয়ে বঙ্গবন্ধু সড়ক বন্ধ করে রাখেন। সেই ঘটনার পর থেকেই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন হকার নেতা আসাদ। বিভিন্ন সময় এমপি শামীম ওসমানের মিটিং মিছিলে আসাদ ও রহিম মুন্সির নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে যোগদান করেন।

 

 

পরে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে বলাকা পেট্রোল পাম্পের সামনে ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে হকার জুবায়েরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জুবায়ের মা বাদী হয়ে হকার নেতা আসাদসহ আট জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

 

 

এ হত্যা মামলার পর থেকেই হকার নেতা আসাদ ও বেশ কয়েকজন হকার পলাতক ছিলেন। গত একবছরে  তাদেরকে কোন মিছিল মিটিংয়ে দেখা যায়নি। পুলিশ উচ্ছেদ করলেও তারা সড়কে নেমে কোন আন্দোলন করতে সাহস পায়নি হকাররা। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে হকার নেতা আসাদ জামিনে এসে আবারও শান্ত শহরকে অশান্ত করার চেষ্ঠা চালাচ্ছেন।

 

 

গত ২৫ই নভেম্বর সন্ধ্যায় পুলিশ বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার উচ্ছেদ করলে আসাদ ও রহিম মুন্সি পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে ২৬ নভেম্বর সকালে আবার হকাররা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করেন। এসময় নাম প্রকাশ্যে কয়েকজন হকার নেতা জানান, কাল পুলিশ আমাদের মালামাল নিয়ে গেছে, তাই আমরা আজ এসপি সাহেবের কাছে এসেছি।

 

 

এবিষয়ে কয়েকজন পথচারী জানান, হকাররা সড়কে ফুটপাত দখল করে রাখেন। তাদের জন্য আমরা চলাচল করতে পারি না। পুলিশ উচ্ছেদ করলেও তারা আন্দোলন ও তাণ্ডব চালায়। তারা এই শহরে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। আমরা আমাদের এই শহরের সড়কের ফুটপাত হকার মুক্ত চাই।   এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর