শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মেহেদি হত্যায় আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অনীহা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২২  


# গ্রেপ্তার এড়াতে টাকার ছড়াছড়ি

# আমাদের কিছু করার নাই: ওসি ফতুল্লা

স্বাভাবিক ভাবে কোন হত্যার ঘটনা ঘটলে হত্যাকারীরা প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে পলাতক থাকেন। সেই সাথে তারা যেন আইনের জালে আটকে  না পড়ে তার জন্য সকল ধরনের চেষ্টা চালান। কিন্তু অনেক সময় প্রশাসন তৎপর থাকায় তারা আর আইনের চোখে ফাঁকি দিয়ে থাকতে পারেন না।

 

 

 

 

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে কিশোরগ্যাং মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে এই কিশোরগ্যাংয়ের মাধ্যমে হত্যার ঘটনা বেড়েছে। এদেরকে কোন ভাবেই দমানো যাচ্ছে না। এদের খুনের ধরনও খুব মারাত্বক।

 

 

 

 

এই কিশোরগ্যাং গ্রুপ নিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবক মহল। প্রশাসনও এদেরকে রোধ করতে পারছে না। এদিকে নারায়ণগঞ্জে জুন জুলাই মাসে কিশোরগ্যায়ের হাতে একাধিক হত্যার ঘটনা ঘেটে।

 

 

 

 

দুই একটি পুলিশ প্রশাসন আসামীদের গ্রেফতার করতে পারলেও বাকিদের ক্ষেত্রে গ্রেফতারের তেমন কোন অগ্রগতি নেই। একই মাসে ইসদাইর রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ছোট ভাই বড় ভাই ইস্যুতে ধ্রবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে কিশোরগ্যাং গ্রুপ।

 

 

 

 

সবর্শেষ কাশিপুর দেওভোগ মাদরাসা রোড শেষ মাথা মিয়া বাড়ি এলাকায় দেওভোগের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজু-সাজুর সেকেন্ড ইন কমান্ড ওমরের নেতৃত্বে কিশোরগ্যাং গ্রুপ নিয়ে মেহেদিকে ধরে নিয়ে পাশের মাঠে এলোপাথারি কুপিয়ে হত্যা করে। ভুক্তভোগির অভিযোগ হত্যাকারীরা তাদের বাড়িতেই থাকে। অথচ পুলিশ তাদের খুঁজে পায় না।

 

 

 

 


স্থানীয়রা জানান, ওমার ফারুককে শেল্টারদেন কাশিপুরের শীর্ষ মাদক কারবারি রাজু সাজু দুই ভাই। এই রাজু সাজুর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের দায়ে ফতুল্লা থানায় মামলা রয়েছে। তারা চাদাঁবাজি সন্ত্রাসী, মাদককারবারি, নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করিয়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

 

 

 

 

মেহেদি হত্যার আসামীদের গ্রেপ্তার না করার জন্য পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে রাজু সাজু দৌরঝাঁপ করছে। টাকার বিনিময়ে তারা এর আগেও হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যান। পূর্বের ধারাবাহিকতায় এবারও লাখ লাখ টাকার মিশন নিয়ে নিজেদের রক্ষার জন্য মাঠে নেমেছে তারা।

 

 

 

 

 

তাই  নিহত মেহেদির পরিবার থেকে অভিযোগ উঠেছে পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করতে অনীহা প্রকাশ করছে। আসামীরা এলাকায় দিব্বি ঘুরা ফেরা করছে অথচ পুলিশ বলছে আসামীরা পলাতক রয়েছে; কিন্তু পুলিশ চাইলে আসামীদের গ্রেপ্তার করা কোন বিষয় না।

 

 

 

 

 

তাদেরকে গ্রেপ্তার করা না হলে এখানে আরও হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া মেহেদিকে হত্যা কারীরা টাকার বিনিময়ে পুলিশের গ্রেপ্তার থেকে রক্ষা পাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাই তাদের গ্রেপ্তার দাবী জানান এলাকাবাসী। সেই গ্রেপ্তার থেকে বাচঁতে আসামীরা টাকার ছড়াছড়ি করছে।

 

 

 


 
অন্যদিকে এই মেহেদি হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় বোন মৌসুমী (২৯) বাদী হয়ে (৩১ জুলাই) আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। এই হত্যায় জড়িত সোহগকে ধরে স্থানীয় মানুষ জন পুলিশে সোপর্দ করে।

 

 

 

 

 

গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ ফতুল্লা মডেল থানার দেওভোগ শেষ মাথার দুলাল খার পুত্র ও স্থানীয় হোসিয়ারি কারখানার শ্রমিক। জানা যায়, মেহেদী হাসান ২০২১ সালের ১৭ জুলাই পশ্চিম দেওভোগস্থ নিহত ইমন হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ও চার্জশিটভুক্ত আসামী।

 

 

 

 


অন্যদিকে মামলার সূত্রে জানা যায়, মেহেদী হাসান (২১) পশ্চিম দেওভোগ মাদ্রাসার শেষ মাথা মিয়া পাড়াস্থ একটি হোসিয়ারী কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলো। গত -৩০ জুলাই প্রতিদিনের ন্যায় হোসিয়ারী কারখানায় কাজ শেষে বাড়ী ফেরার পথে পশ্চিম দেওভোগ মাদ্রাসার শেষ মাথা মিয়া পাড়াস্থ রাকিব এর চায়ের দোকানের সামনে পৌছালে ওমর ফারুক কিশোরগ্যাং গ্রুপ তুলে নিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।  

 

 

 

 

পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মেহেদী হাসানকে রক্তাক্ত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য দ্রুত জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া) নারায়ণগঞ্জ এর জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে ৩০ জুলাই জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার মেহেদী হাসানকে মৃত ঘোষণা করে। এই ঘটনায় মেহেদির বোন মৌসুমি বাদী ফতুল্লা মডল থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে হত্যা মামলা করেন।

 

 

 

 

মেহেদী হত্যাকান্ড মামলায় আসামীরা হলেন, ওমর ফারুক (২৭), সবুজ (৩০), আরেক আসামী রাসেল ওরফে ভাগিনা রাসেল (২১), মাইকেল (২১), সীমান্ত (২২), শান্ত ওরফে কসাই শান্ত (২১),  জুব্বা (২৩), সঞ্চয় (২১) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন। আসামীদের মধ্যে সবুজ ইমন হত্যা মামলার বাদী ছিল।

 

 

ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ রিজাউল হক বলেন, ‘আপনি যা খুশি বিশ্বাস করতে পারেন, আমাদের কিছু করার নাই।’ এন.এইচ/জেসি  

এই বিভাগের আরো খবর