শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রুবেল গ্রেপ্তার না হলে আন্দোলনে নামবে দৌলত মেম্বারের পরিবার

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২২  

সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার দৌলত সিকদারের হত্যার ঘটনা নিয়ে এখনো পুরো গোগনগর থমথমে আছে। মূল আসামীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিহতের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে। তাই তারা প্রশাসনের কাছে দৌলত মেম্বার হত্যার মূল আসামী রুবেল সহ সকল আসামীদের গ্রেপ্তার করার দাবী জানান। 

 

দৌলত মেম্বার হত্যায় তার স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ্য করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় ১৪৩/৩৪১/৩০২/১৪৯ পেনাল কোডে মামলা হয়। যার মামলা নম্বর ৩০। তবে ২২ জনের মাঝে ৫ জন গ্রেপ্তার হলেও তাদের মাঝে ৩ জনকে নিয়ে রয়েছে অভিযোগ। তবে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৩ জন দিনমজুরকে গ্রেপ্তার করেছে। 

 

অথচ এলাকাবাসী জানান, তারা এই ঘটনার সাথে কেউ জড়িত নন। তাদের আসামী করায় গোগনগর জুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু নিহতের পরিবার থেকে জানান কোন অসহায় ব্যাক্তিকে যেন হয়রানী না করা হয়। সেই সাথে যারা এই হত্যকান্ডের সাথে জরিত নন তাদের যেন গ্রেপ্তার করা না হয়। তবে আমরা মূল আসামী রুবেল সহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের দাবী তুলেন তারা।

 

দৌলত মেম্বারের স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, আমার স্বামীকে হারিয়ে আমি অসহায় হয়ে পড়েছি। তার কান্না যেন থামছে না। স্বামী হত্যার ঘটনা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছেন না তিনি। বাড়িতে এখনো কান্না করে যাচ্ছে নিহত দৌলত মেম্বারের ছেলে মেয়েরা। দৌলত মেম্বারের স্ত্রীর কান্না কিছুতেই থামছে না। স্বামীর স্মৃতি বার বার স্মরণ করছেন, আর কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

 

এদিকে নিহত দৌলত মেম্বারের ছেলে কাসেম সম্রাট জানান, যারা আমার পিতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আমি তাদের গ্রেফতারের দাবী জানাই।সেই সাথে তাদের আইনের আওতায় এনে ফাসির দাবী জানাই। কেননা তারা আমাকে পিতা হারা করে এতিম করেছে। বিশেষ করে আমার পিতা রুবেল এবং রানাদের ঘটনায় আগে পরে কোন বিষয়ে জরিত নন। 

 

অথচ রুবেল মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার পিতাকে হত্যা করেছে। আমি রুবেল মেম্বার সহ সকল আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানাই। অন্যথায় আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবো। তিনি আরও জানান, পুরো গোগনগরবাসি বলছেন আমার পিতার হত্যার সাথে ফজর আলীর ইন্ধন রয়েছে। তাই আমি এই ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের ফাসি চাই।

 

অন্যদিকে গোগনগর গিয়ে দেখা যায় পুরো এলাকা জুড়ে দৌলত মেম্বার হত্যাকারীদের ফাসির দাবী জানিয়ে ব্যানার পোষ্টার টানানো হয়েছে। ব্যানারে লেখা রয়েছে ফজর আলীর বিচ্ছু বাহিনীর হামলায় জেলা কৃষকলীগের সহ সভাপতি দৌলত মেম্বার হত্যাকারীদের ফাসি চাই। তাকে হত্যার পর থেকে পলাতক রয়েছে আসামীরা। 

 

তবে নিহতের পরিবারের দাবি পুলিশ চাইলে সবই সম্ভব। আসামীদের গ্রেফতারে তাদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। গত শুক্রবার র‌্যাব ১১ জালে দৌলত মেম্বার হত্যাকাণ্ডে আরও ২ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন সেলিম এবং শ্যামল।

 

অন্যদিকে গত ২৬ জুন রাত ১০ টায় কাশেম সম্রাটের পিতা গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার দৌলত শিকদার সিএনজি যোগে শহরে ঔষধ কিনতে আসার পথে ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর কাছে আসা মাত্র রুবেল গ্যাংরা দৌলত মেম্বার কে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। 

 

দৌলত মেম্বারকে উদ্ধার করে প্রথমে মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশংকাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে দৌলত মেম্বার মারা যান।

 

জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, গোগনগরে দৌলত মেম্বার হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তবে এই হত্যাকান্ডের সাথে যারা জরিত আছেন তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ তৎপর আছেন। সেই সাথে পুলিশের সকল বিভাগ কাজ করছেন। অপরাধীরা কেউ ছাড় পাবে না। এসএম/জেসি 
 

এই বিভাগের আরো খবর