শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আজাদ ডাইংয়ের দূষিত পানিতে দূর্ভোগ বাড়ছে লালপুরে

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১  

ফতুল্লা বাজার এলাকায় অবস্থিত আজাদ ডাইং। লালপুরে জলাবদ্ধতার পানির সাথে আজাদ ডাইংয়ের কেমিক্যালযুক্ত বিষাক্ত পানি মিলেমিশে একাকার বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। ফলে, লালপুর পৌষার পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দারা ওই দূষিত পানি মাড়িয়ে চলাচল করায় নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজাদ ডাইংটির ইটিপি প্ল্যান্ট বন্ধ করে রাখা আছে।

 

অর্থাৎ দূষিত তরল বর্জ্য পরিশোধন করা ছাড়াই তা ড্রেনে ফেলছেন ডাইং কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি মো. মুরাদ দাবি করেন, তাদের ইটিপি প্ল্যান্ট আজাদ ডাইংয়ের ছাদের উপর অবস্থিত। তাদের ইটিপি প্ল্যান্ট সচল আছে বলেও তিনি দাবি করেন। অতঃপর ইটিপি প্ল্যান্ট দেখতে চাইলে তিনি বলেন, প্ল্যান্টের টেকনিশিয়ান ছাদে তালা লাগিয়ে অন্যত্র গেছেন, তাই এখন প্ল্যান্ট দেখা যাবে না।

 


তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানটিরই একজন শ্রমিক জানান, তারা ইটিপি প্ল্যান্ট সবসময়ই বন্ধ রাখে। তাই ডাইংয়ের বিষাক্ত পানির পরিশোধন ছাড়াই ড্রেনে ফেলা হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আজাদ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দৈনিক যুগের চিন্তাকে তিনি বলেন, তাদের ইটিপি প্ল্যান্ট সচল আছে এবং তাদের পানি লালপুরের দিকে নির্গত হয় না। তারা ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে বুড়িগঙ্গা নদীতে পানি ফেলেন বলে দাবি করেন। এদিকে, বুড়িগঙ্গা নদীর যেই স্থানে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের ডাইংয়ের পানি যাচ্ছে বলে দাবি করছেন, সেই স্থানে গিয়ে দেখা যায় ডাইংয়ের দূষিত কালো পানিই ওই ড্রেনের মাধ্যমে নদীতে নির্গত হচ্ছে। এতে করে দূষিত হচ্ছে নদীর পানিও।

 

জানা গেছে, আজাদ ডাইংয়ের দূষিত পানি লালপুরে যাওয়ায় গত বছরের জুন মাসে সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলার তৎকালিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) নাহিদা বারিক। ভ্রাম্যমান আদালতের ওই অভিযানে আজাদ ডাইংয়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। লালপুর পৌষার পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন জানান, অভিযানের পরও আজাদ ডাইংয়ের পানি ড্রেনের মাধ্যমে লালপুরে ফালানো হচ্ছে। তারা সারাদিনের পানি রিজার্ভ হাউজে জমিয়ে রেখে পরিশোধন ছাড়াই ভোরের দিকে ড্রেনে ছেড়ে দিচ্ছে এবং তা ড্রেনের মাধ্যমে লালপুরের জলাবদ্ধতার সাথে মিশে যাচ্ছে। এই দূষিত পানিতে চলাচল করতে গিয়ে লালপুরের বহুমানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

 

এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘ইটিপি প্ল্যান্ট থাকা সত্বেও যদি তা ব্যবহার না করা হয়, তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জরিমানা বা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়ার মতও বিধান রয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’   
 

এই বিভাগের আরো খবর