শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

এক্সরে’র জন্যও যেতে হয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২১  

নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছে সরকারি এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। রোগীদের অভিযোগ, এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী না থাকায়, এক্সরে ও ইসিজির মতো সাধারণ পরিক্ষার জন্যও এখানকার চিকিৎসকরা রোগীদের হাসপাতালের আশপাশের নাম সর্বস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যেতে বলছে। যদিও এই পরীক্ষাগুলোর ব্যবস্থা এখানেই হওয়া কথা।

 

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল সংলগ্ন হেলথ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অসংখ্য রোগ নির্ণয়কেন্দ্র রয়েছে। আর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী ও বিভিন্ন আধুনিক মেশিনের সংকট থাকায়, রোগীদের এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়া পরামর্শ দিচ্ছেন সরকারি ডাক্তাররা। সেইসঙ্গে রোগীদের হাতে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্ডও দিয়ে দিচ্ছেন তারা। এতে ডাক্তাররা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে প্রতিটি পরিক্ষার জন্য পারসেন্টিস পেয়ে থাকেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

 

গতকাল শনিবার দুপুরে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় মনিরা নামে এক ভদ্র মহিলার সাথে। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরেই একটি সমস্যায় ভুগছি। তাই রূপগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি চিকিৎসা করাতে। কিন্তু সকালে গোলাম মোস্তাফা ইমন নামে বর্হিবিভাগের এক ডাক্তারকে দেখালে তিনি আমাকে ইসিজি, এক্সরেসহ তিনটি পরিক্ষা দেয়। এবং বলে এই পরিক্ষাগুলো হেলথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে করতে হবে। এখানে এই পরিক্ষার ব্যবস্থা নেই। তিনি আরো বলেন, সরকারি হাসপাতালে পরিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায়, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমার এর জন্য ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এবং অতিরিক্ত টাকাও খরচ করতে হয়েছে।

 

এদিকে পরিক্ষার করার পরও রিপোর্ট নিয়ে এসে দেখি ডাক্তার সাহেব চলে গেছে। আগে জানলে কোনো বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে সেখানেই পরীক্ষা করিয়ে নিতাম। সরকারি হাসপাতালে আর আসতাম না। এদিকে শাকিল নামে এক যুবক বলেন, খাট থেকে পড়ে গিয়ে হাতে সামান্য ব্যথা পেয়েছি। তাই দুপুর ৩ টায় জরুরী বিভাগের ডাক্তার নরুজ্জামানকে দেখাই।  তিনি আমাকে বলেন এক্সরে করাতে। তাই এরপর আমি তার কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখি, হাসপাতালে এক্সরে করা হয়না। এ সময় ডাক্তার সাহেবের রুমে দাঁড়িয়ে থাকা এক লোক এসে আমাকে হেলথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি কার্ড দিয়ে সেখানে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই এক্সরে করার ব্যবস্থাও যদি একটি সরকারি হাসপাতালে না থাকে তাহলে এই হাসপাতাল রেখেই লাভ কি? শুধু শুধু মানুষের ভোগান্তি।

 

এদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের আরএমও আসাদুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার ইমতিয়াজ আহম্মেদ এ বিষয়ে বলেন, আমাদের কাছে আধুনিক এক্সরে মেশিন এখনো আসেনি। তাই অনেক সময় এক্সরে করাতে রোগীদের সরকারি হাসপাতাল রেখে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়। তবে আশা করি আস্তে আস্তে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর আমাদের হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক যদি রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়া পরামর্শ দিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর