শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

এমপি হতে শামীমের দ্বারস্থ কায়সার

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২২  

 


  # আগে দুরত্ব থাকলেও মন জয়ের চেষ্টায় তিনি
 

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যেই মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে নির্বাচনী মাঠ দখলে রাখছেন।

 

 

 

 

সেই একই রকমের চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ কায়সারের ক্ষেত্রে। দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর থেকেই আইভী বলয়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রাজনীতি করেছিলেন। কিন্তু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী রাজনীতির আরেকটি মহল শামীম বলয়ের সাথে ইদানিং কায়সারের ঘনিষ্ঠতা দেখা যাচ্ছে।

 

 


 


সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে  মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় আব্দুল্লাহ আল কায়সার। কায়সার সাংসদ থাকা অবস্থায় ঘনিষ্ঠতা ছিল শামীম ওসমানের সাথে। কিন্তু ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয় কায়সার তখন মহাজোট থেকে প্রার্থী করা হয় শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু লিয়াকত হোসেন খোকাকে।

 

 

 

 

সেসময় থেকেই শামীম ওসমানের সাথে ঘনিষ্ঠতা কমিয়ে আইভীর সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরী করেন কায়সার। আইভীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে দীর্ঘদিন রাজনীতিতে করার ফলেও ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন কায়সার। তারপর মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে মহাজোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।

 

 

 

 

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী আচরনবিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে তার বাড়ি ঘেরাও করে। সেসময় পুলিশ এ সময় অন্তত ১০-১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। তার পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়।

 

 

 

 

সে কমিটিতে সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া আহবায়ক এবং সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমানকে যুগ্ম আহবায়ক করে আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল।

 

 

 

 

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগ থেকেও ছিটকে পড়েন কায়সার ও তার অনুসারীরা। তারপর এই কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা সমাবেশ ডেকে  প্রতিবাদ করতে থাকে কায়সার অনুসারীরা এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও এই কমিটির বিরুদ্ধে নালিশ দেন।

 

 

 

 

তার পরবর্তীতে সান্ত্বনামুলক আহবায়ক কমিটিকে ২০২১ সালের ৩ মার্চ পূর্ণবিন্যাস করে কায়সারকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয় এবং তার অনুসারীদের আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে স্থান দেয়া হয়।

 

 

 

 

কিন্তু কেন্দ্র থেকে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের আয়োজনের নির্দেশ দেন সোনারগাঁ থানা আহবায়ক কমিটিকে। আহবায়ক কমিটিতে স্থান পেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শীর্ষপদে স্থান পেতে শামীম ওসমানের বলয়ে ভিরতে দেখা যায় কায়সারকে। যার প্রতিফলন দেখা যায় ২৭ আগষ্ট শামীম ওসমানের জনসভায় হঠাৎ আচমকাই মঞ্চে কায়সারকে উপস্থিত হতে দেখা যায়।

 

 

 

 

তার উপস্থিতি দেখে অনেকেই সভাস্থলে সমালোচনা করতে থাকে যাদের মধ্যে দা কুমড়া সম্পর্ক তারা কিভাবে একজন আরেকজনের সভাস্থলে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি পরিষ্কার হয় সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন শামীম ওসমানকে উপস্থিত দেখা যায় পাশাপাশি মেয়র আইভীকেও উপস্থিত দেখা যায়।

 

 

 

 

নারায়ণগঞ্জের দুই বলয় একসাথে এক মঞ্চে উপস্থিত থাকায় সভাস্থলে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সভায় উত্তেজনামূলক একটি ঘটনারও সৃষ্টি হয় মেয়র আইভীর বক্তব্য দেয়া নিয়ে। সভায় মেয়র আইভীকে বক্তব্য দেয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা দেন কায়সার। তখন মঞ্চে উপস্থিত থাকা অতিথিদের মাঝখান থাকা গুঞ্জন উঠে শামীম ওসমানকে আইভীর আগে বক্তব্য দেয়ার জন্য।

 

 

 

 

এমন দৃশ্য দেখে আইভী কিছুটা উত্তেজিত হয়ে যান তারপর আইভী বক্তব্য দেন। আইভী বক্তব্য দেয়াকালে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ এখন এক নেতার এক দেশ হয়ে গেছে’। পরবর্তীতে সোনারাগাঁ থানা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সামসুল ইসলাম ভূইয়াকে সভাপতি এবং কায়সার হাসনাত সাধারণ সম্পাদক ও ইঞ্জিয়ার মাসুমকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়।

 

 

 

 

কিন্তু কমিটি গঠনের পর অনেকেই সমালোচনা করছেন শামীম ওসমানের সাথে কায়সারের নতুনভাবে ঘনিষ্ঠতার কারনেই কমিটিতে শীর্ষ পদে সুযোগ পেয়েছেন কায়সার। পাশাপাশি শামীম ওসমানের সকল কিছুতেই এখন কায়সারের উপস্থিতি দেখা যায় জেলা পরিষদের চেয়াম্যানের মনোনয়ন জমার দিন কায়সার রাইফেল ক্লাবে উপস্থিত হন।

 

 

 

 

শামীম ওসমানের সাথে কায়সারের ব্যাপক ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে বুঝাতে চান যে, আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিশ্চিতে শামীম ওসমানের সহায়তা নিয়েই কায়সার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চায়। এতে প্রতিয়মান হয় যে, আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এমপি খোকার উপর থেকে শামীম ওসমানের ছাঁয়া সড়ে যাচ্ছে এবং সেই ছাঁয়া চলে যাচ্ছে সাবেক এমপি কায়সারের উপর। এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর