শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কমিটির আওয়াজ নেই স্বেচ্ছাসেবক লীগে

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪  

 

নানা চড়াই উতরাই অত্রিক্রম করে দীর্ঘ ১৬ বছর পর জেলা ও ৫ বছর পর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন গত বছরের (৩১ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের ৮ মাসে ও এখনো কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের মতানৈক্যের কারণে কমিটি ঘোষণা হয় না হওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরছেন জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দরা। এদিকে শোক দিবস ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কমিটি ঘোষণা আটকে থাকলেও এখনো নির্বাচনের আড়াইমাসে ও কমিটি এখনো কেন কেন্দ্র দিচ্ছে না তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।

 

এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গিয়েছিলো। নতুন কমিটির মাধ্যমে নেতৃত্ব পরিবর্তনের পাশাপাশি সংগঠনের গতি ফিরবে বলে প্রত্যাশা ছিল তৃণমূল নেতাকর্মীদের। কারা আসছেন সংগঠনের নতুন নেতৃত্বে তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রতিনিয়ত কৌতুহল বেড়েই চলেছিলো। কিন্তু সম্মেলনে ও তার পরে ও এখনো নয়া কমিটির আবির্ভাব না হওয়ায় আওয়ামী লীগের ভ্যান্ডগার্ড খ্যাত এই সংগঠন ধীরে ধীরে কর্মীহীন হয়ে পরছেন। এদিকে কমিটি গঠন নিয়ে নানা গড়িমসি ও দফায় দফায় ডেট দিয়ে ও কমিটি গঠন না হওয়ায় ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে উঠেছেন কমিটিতে স্থান পেতে লবিং করা পদপ্রত্যাশীরা।

 

তা ছাড়া দর্ঘিদিন পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে স্নায়ুর লড়াই লক্ষ্য করা গেলে ও বর্তমানে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জামির হোসেন রনি ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সভাপতি প্রার্থী জুয়েল হোসেন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তা ছাড়া জেলার আওতাধীন বাকি যে সভাপতি প্রার্থীরা ছিলেন তা কেউ বর্তমানে রয়েছেন রাজনীতি ছেড়ে নিজস্ব কর্মস্থল নিয়ে ব্যস্ত আবার কেউ যার যার উপজেলার নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে বসে আছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি নিয়ে নেই তাদের কোন মাথাব্যথা।

 

সূত্র বলছে, গত বছরের ৩১ জুলাই জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের আগমুহুর্ত পর্যন্ত হাট্টাহাট্টি লড়াইয়ের প্রতিযোগীতা লক্ষ্য করা গেলে ও তার পর যখন জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নয়া কমিটি গঠন করা হয় না। তখনই প্রকাশ্যে না হলে ও ভিতরে ভিতরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পদপ্রত্যাশীরা। যা নিয়ে দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাসেবক লীগে স্থবিরতা লক্ষ্য করা যায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আর কাউকে জেলা বা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যনারের কোন অনুষ্ঠানে লক্ষ্য করা যায় না।

 

নির্বাচনের পূর্বমুহুর্তে দফায় দফায় ঘোষিত বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির বিরুদ্ধে ছিলো না স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে কোন শান্তি সমাবেশ। শুধু লক্ষ্য করা গিয়েছিলো মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সভাপতি প্রার্থী জুয়েল হোসেনের ব্যাপক ভূমিকা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যনারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলোতে শহর সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর ওয়ার্ডের নেতাদের নিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে। গত বছর শীতে ও চলতি বছরে ইফতার সামগ্রী বিতরণে জুয়েলের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভূমিকা প্রশংসায় রয়েছে।

 

অপর দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জামির হোসেন রনি। সম্মেলনে কোন প্রকারের ফল না পেয়ে ও হতাশা হয়ে পরেননি। তিনি ও জেলার আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে দফায় দফায় বিএনপির অবরোধ-হরতালের কর্মসূচির বিরোধীতা করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারের ছায়াতলে থেকে।  তা ছাড়া গত বছর শীতে ও চলতি বছরে ইফতার সামগ্রী বিতরণে ও রয়েছে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা এই রনির। কিন্তু বাকিরা একেবারেই মাঠ ছেড়ে দিয়েছেন।

 

জানা গেছে, সম্মেলনের পরপরই জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শামীম ওসমানের সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী শরিফুল ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্থান পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। পরবর্তীতে সেখানে শামীম ওসমানের সমর্থন না পেয়ে বর্তমানে আবার সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্থান পেতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

অপর দিকে সোনারগাঁ উপজেলার ছগীর ও মাসুম তারা ও সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় থাকলে ও কাজে ছিল না বা নেই বললেই চলে। তারা ও সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে স্থান নিতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তা ছাড়া মহানগরের সভাপতি প্রার্থী তাহের উদ্দিন আহম্মেদ সানি ও কায়কোবাদ রুবেল তারা কেউ বর্তমানে রাজপথে নেই। তাদের শুধু মেয়র আইভীর কোন পোগ্রাম ছাড়া এককভাবে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে কোন প্রোগামে নেই তারা। যাকে ঘিরে ধীরে ধীরে জেলা ও মহানগরের নয়া কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে যেমন নেই কোন চিন্তা, শুধু কমিটি বিষয়ে আলোচনা করলেই প্রকাশে আসে হতাশা। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর