শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কোন পথে জেলা বিএনপি?

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২১  

# আহবায়ক কমিটির সদস্যদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ


#  কমিটিতে যেমন রয়েছে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তি, তেমনি রয়েছে বিতর্কিতরাও


# ফের কমিটি দখলের চেষ্টা শুরু করে তৈমূর বলয়

 

বেশ কিছুদিন ধরেই নিরব রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। চলমান ইস্যু নিয়েও তাদের মুখে রা নেই। পদপদবী ধারি নেতাদেরও দেখা মিলছে না মাঠে ময়দানে। এদিকে, তৈমুর আলম খন্দকার ও মামুন মাহমুদের নেতৃত্বাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটি ইতিমধ্যেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের উপর জেলার অধিনস্থ থানা ও পৌর কমিটিগুলো গঠনের দায়িত্ব দেয়া হলেও এখনো তা হয়ে উঠেনি।

 

গত মার্চ মাসে তারেক রহমানের সাথে একটি ভিডিও কনফারেন্সের পর নির্দেশনা অনুযায়ী থানা ও পৌর কমিটিগুলো গঠনের লক্ষ্যে আহবায়ক কমিটির সমন্বয়ে উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। নির্দিষ্ট ১২ দিনের মধ্যে এসব উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দদের থানা ও পৌরসভার কমিটি গঠনের কথা থাকলেও অদ্যবধি তা হয়ে উঠেনি। তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা ও পৌরসভার নেতাকর্মীসহ তৃণমূলের কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

এদিকে, ভাইটাল পদধারী নেতারা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নিশ্চুপ থাকায় খোদ আহবায়ক কমিটির সদস্যদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য মাশুকুল ইসলাম রাজিব দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেছিলেন, ‘করোনা ও অন্যান্য বিষয়গুলোকে অযুহাত হিসেবে দেখিয়ে আহবায়ক কমিটির অনেকেই সময় ক্ষেপন করে যাচ্ছেন। মাঝে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও পদধারী নেতাদের এই বিষয়ে সরব দেখা যায়নি। দলে এমন ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ন পদে আছেন, যাদের কাছে দল হচ্ছে পার্ট টাইম জবের মত। এই ধরনের ব্যক্তিদের জন্যই দল পিছিয়ে যাচ্ছে।

 

তবে, হতাশার বিষয় হলো ঘুরে ফিরে তাদের হাতেই যাচ্ছে নেতৃত্ব।’ তিনি বলেছিলেন, ‘বিএনপি এমন একটি দল, যা দীর্ঘ বছর ধরেই সরকারের জুলুম অত্যাচার সইছে। তাই বলেতো দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেমে থাকতে পারে না। ইতিপূর্বেও আমরা জেল-জুলুমের মধ্যেই আমাদের কার্যক্রম চালিয়েছিলাম। আসলে দলের প্রতি যদি ভালোবাসা না থাকে, তাহলে দল পিছিয়েই থাকবে।’ এদিকে, সাবেক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর বর্তমান কমিটি যখন তৈমূরের হাতে দেয়া হলো, তখন নেতাকর্মীদের মাঝে সাংগঠনিক স্পিহা দেখা গেলেও পরবর্তীতে তা কাজে লাগাতে পারেনি তৈমুর। অভ্যান্তরিন কোন্দল ও হেফাজত ইস্যুতে দায়েরকৃত মামলায় ব্যাকফুটে গিয়েছে বিএনপি। এই অবস্থায় তৈমুর ও মামুন মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোয়, তা নিয়েই শঙ্কায় আছে বিএনপির সমর্থকরা।

 

সূত্র বলছে, ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি কাজী মনিরুজ্জামানকে সভাপতি ও মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। দুই বছর পর ২০৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কিছুদিন পরপরই গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এর নেপথ্য কারণ ছিলো, অভ্যান্তরীন কোন্দল এবং নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা। জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটিতেও উভয় সমস্যা বিদ্যমান। আহবায়ক কমিটিতে যেমন রয়েছে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তি, তেমনি রয়েছে বিতর্কিতরাও। ফলে তৃণমূলের প্রশ্ন, পোক্ত না বিলুপ্ত, কোন পথে যাবে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি?

 

সূত্রের অভিযোগ, তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতা হলেও বিগত সময়ে সভাপতি থাকাকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করতে পারেননি। দলীয় কর্মসূচীতে মাঠে না থেকে ঢাকায় বসবাস করতেন। গ্রেফতারের অযুহাত দেখিয়ে রাজপথে নামতেন না। রাজপথে না থাকা ও প্রেস বিজ্ঞপ্তির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ঐ সময়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র অস্তিত্ব সংকটে পড়েছিল। পরে নেতাকর্মীদের দাবীর প্রেক্ষিতে তৈমূরকে বাদ নিয়ে জেলা ও মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি দিয়েছিল কেন্দ্র। পরবর্ততে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তৈমূর আলমের অনুসারিদের সুযোগ দেয়া হয়নি। এরপরই নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করে ফের কমিটি দখলের চেষ্টা শুরু করে তৈমূর বলয়। যার প্রেক্ষিতে গত বছরের ফেব্রæয়ারী মাসে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। নানা নাটনীয়তার পর এবছরের প্রথম দিনে তৈমূরকে আহবায়ক করে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। 
 

এই বিভাগের আরো খবর