শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

চারখুন মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৯ জনের (ভিডিও)

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

নারায়ণগঞ্জে ২০০৮ সালে ফতুল্লার বলগেট শাহপরান ডাকাতির সময় চাঞ্চল্যকর চার খুনের ঘটনায় মামলার ২ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় বাকি ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়, অনাদায়ে আরো  ১ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া সকল আসামিদের দন্ডবিধির ৪১২ ধারায় ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

 

রোববার (২৮  ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মােসাম্মৎ সাবিনা ইয়াসমিন এই রায়ের আদেশ প্রদান করেন। এসময় আদালতে ৭ জন আসামী উপস্থিত ছিলেন, বাকি ৪ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।

ভিডিও লিংক

এপিপির বক্তব্য

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: তাজুল ইসলাম ও মহি ফিটার।  আসামী ইব্রাহিম মৃত্যুবরণ করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বাকি আসামিরা হলেন, চাঁন মিয়া, দুলাল মিয়া,  মজিবর,  আব্দুল মান্নান, আরিফ। পলাতক আসামিরা হলেন, জলিল, সাইফুল ইসলাম, দুলাল, শফিকুল ইসলাম।

 

 

রায়ে বলা হয়, শাহপরান বলগেটের মাঝি মাল্লা নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল, হান্নানকে গলাকেটে হত্যা করে বলগেট ডাকাতির অপরাধে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাসীর দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং পলাতকদের দ্রুত গ্রেফতার করে সাজা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত ।


মামলার বিবরণে জানা যায়, ডাকাতি হওয়া শাহপরান বলগেট এর মালিক এরসাদ মিয়া ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এজাহারে বলেন, ঘটনাটি ২০০৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর  থেকে ২১ সেপ্টেম্বরের  তারিখ এর মধ্যে ঘটে। ঐ সময় সিলেট থেকে পাথর বােঝাই করে আমার এই বলগেট টি মুন্সিগঞ্জের সিমেন্ট কারখানায় আসে। পাথর ঐ কারখানায় খালাস করে দেবার পরে বলগেটটির মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। বলগেট এর মেশিন ঠিক করার জন্য আসামী মহী ফিটার ও আসামী তাজু ফিটারকে বলগেট এর ড্রাইভার নাসির খবর দেয়। ওরা এসে বলগেটটা ঠিক করে টেস্ট করতে গিয়ে চরে তথা বক্তাবলীর চরে নিয়ে লাগিয়ে দেয় । ইট খােলার পাশে লাগিয়ে দেয়। তখন বলগেটে নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নান ছিল। বক্তাবলী চরে বলগেটটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় যখন পাওয়া যায় তখন চার জন কর্মচারী বলগেটের মাঝি মাল্লা নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল, হান্নানকে পাওয়া যায়নি। পরে তাদের মেঘনা নদীর চরে হাত পা বাধা অবস্থায় নাসির মিয়ার লাশ পাই। মঙ্গলের লাশ ও হাত পা বাধা অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকী দুই জন ফয়সাল ও হান্নান এর লাশ পাওয়া যায় নাই।  পরে পুলিশ বলগেটটা জব্দ করে।


ওই দিনই এস.আই বদরুল আলমকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী আসামীদের গ্রেফতার করেন এর মধ্যে আসামী জলিল, লম্বা দুলাল,  ইব্রাহিম, খাটো দুলাল মিয়া, মজিবর, শফিকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম,  আরিফ ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করেন এবং তদন্ত শেষে ১২ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জসীট দাখিল করেন। ২০০৯ সালের ২৬ মার্চ চার্জসীট গৃহিত হয়।


মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ফজলুর রহমান । তিনি বলেন, ২০০৯ সালের ২১ এপ্রিল মামলাটি আদালতে বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বদলী হলে বিচারক বাদী এরসাদ মিয়া, ম্যাজিষ্টেট, সুরতহাল, আই.ও সহ ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে এবং উপস্থাপিত কাগজপত্র প্রদর্শনী ভূক্ত করে আজ এই রায় প্রদান করেন।

 

এই বিভাগের আরো খবর