শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বন্দরে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৪  

 

# এককভাবে ছাড় পাচ্ছে না কেউ

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই এবার উপজেলা নির্বাচনের দিনক্ষন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমে ভোটারদের মনজয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছেন এখন থেকে। এমনকি প্রার্থীতার জানান দিয়ে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে আগে থেকেই মাঠে উত্তাপ তৈরী করছেন।

 

জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, প্রথম ধাপে নারায়ণগঞ্জের সদর ও বন্দরসহ সারা দেশের মোট ১৫২ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশনের ২৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

 

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে সদর ও বন্দর উপজেলা নির্বাচন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার  শেষ সময় ১৫ এপ্রিল। মনোনয়ন যাচাই বাছাই ১৭ এপ্রিল এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

 

এদিকে বন্দর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির একঝাঁক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে এখানে সাবেক বিএনপি নেতাও পিছিয়ে না থেকে নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়েছেন। যদিও বিএনপি এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সনে বন্দর উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থী না থাকায় একক ভাবে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হন এখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ। এবারও তিনি নির্বাচন করতে যাচ্ছেন বলে তার সমর্থকরা জানান। তবে ভোটের মাঠে এই নেতার অবস্থান তেমন একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। মাঠ গুছাতে তিনি কোন অংশে পিছিয়ে নেই। এছাড়া তার সাথে পাল্লা দিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে জানান দিয়েছেন বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এম এ সালাম।

 

তিনি মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। তিনিও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি ও মুসাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদের এবার উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার খায়েশ হয়েছে। তিনি বন্দরে রাজাকারপুত্র হিসেবেও পরিচিত। ইতোমধ্যে জাপার এই নেতা জোরে সরে মাঠে নেমে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে হলে তাকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

 

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সাথে পাল্লা দিয়ে নির্বাচনের মাঠে কোন অংশে পিছিয়ে নেই বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। তিনি মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা হওয়ার পর সেই কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া বিএনপি উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিবে না বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া বিএনপিতে মুকুলের পদ না থাকায় নির্বাচনে অংশ নিতে তার কোন বাধা নেই।

 

তাই রাজনৈতিক বোদ্ধমহলে আলোচনা হচ্ছে বন্দর উপজেলা নির্বাচনে এবার হাড্ডা হাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এখানে বিএনপি না থাকলেও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল আওয়ামী লীগের প্রার্থী, জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিপরীতে মাঠ কাপিয়ে যাচ্ছেন। আর এজন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন শেষ পর্যন্ত তারা প্রত্যেকে নির্বাচনের মাঠে থাকলে তাহলে বন্দরে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে। আর এতে করে কেউ কাউকে ছাড় দিবে না। এজন্য ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরাও একক ভাবে পার হতে পারবে না। যা গত নির্বাচনে হয়েছিল।

 

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হলে সদর উপজেলার কিছু অংশ সিটি কর্পোরেশনে চলে যায়। উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ (২০০৯ সনের ৩০ জুন সংশোধিত) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার সদর উপজেলা পুনর্গঠন করে। ২০১৪ সালের ৪ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়।

 

অন্যদিকে, ২০১৯ সালে ৫ ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে সদর উপজেলা বাদে ৪ টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের ১৮ জুন ৫ম ধাপে বন্দর উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর